শিরোনাম
◈ ১৮ জুলাই নতুন দিবস ঘোষণা ◈ ডিসি-এসপি কমিটি ও ইভিএম বাদ, ভোটকেন্দ্র স্থাপনে নতুন নীতিমালা জারি করলো ইসি ◈ বাংলাদেশে আগ্নেয়াস্ত্র লাইসেন্স: কীভাবে পাবেন, কী কী শর্ত মানতে হবে? ◈ এবার থাইল্যান্ড থেকে ভারতগামী বিমানে ১৬ টি সাপ, এরপর যা ঘটল ◈ প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে ফোনালাপ নিয়ে এবার মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের বার্তা ◈ স্ত্রীসহ তারিক সিদ্দিক ও বসুন্ধরার আকবর সোবহানকে দুদকে তলব ◈ চুন্নুসহ বহিষ্কার হচ্ছেন জাপা’র ৭ নেতা, মহাসচিব হচ্ছেন কে? ◈ স্ত্রীসহ সাবেক মন্ত্রী নুরুজ্জামানের জমি জব্দ, ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ ◈ আমি মনে করি না আমাদের সমাজে কোটিপতি থাকা উচিত: জোহরান মামদানি ◈ যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিওর সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা ইউনূসের ফোনালাপ

প্রকাশিত : ৩০ জুন, ২০২৫, ০১:১০ দুপুর
আপডেট : ০১ জুলাই, ২০২৫, ১২:০০ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

ধর্ষণ, পরকীয়া না পরিকল্পিত ফাঁদ? মুরাদনগরের ঘটনায় মামলা প্রত্যাহার চান নারী, নতুন ভিডিও নিয়ে নাটকীয় মোড়

শাহাজাদা এমরান,কুমিল্লা: কুমিল্লার মুরাদনগরের ধর্ষণকান্ডের আলোচনা যেন থামছেই না। এরই মধ্যে নতুন আরেকটি ভিডিও সামনে এসেছে। গতকাল সোমবার সকালে  ৩ মিনিট ৪২ সেকেন্ডের ওই ভিডিওটি বাপেরা আইছে নামের এক ফেসবুক আইডি থেকে ভাইরাল করা হয়েছে। এদিকে গ্রেফতারকৃত ফজর আলীর বিরুদ্ধে মামলা চালাতে চান ভুক্তভোগী নারী। 

নতুন ভিডিওতে দেখা যায়, ‘একই বিছানায় পাশাপাশি বসিয়ে নিপীড়নের শিকার নারী ও ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেপ্তারকৃত ফজর আলীকে বিবস্ত্র অবস্থায় নির্যাতন করা হচ্ছে। ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি মুহাম্মদ আলী সুমনের নেতৃত্বে রমজান, অনিক, আরিফসহ ১৫-২০ জন ফজর আলীকে ব্যাপকভাবে মারধর করছেন। এ সময় নিপীড়নের শিকার নারী ও ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেপ্তার ফজর আলী জীবন বাঁচানোর জন্য আহাজারি করতে থাকেন। নির্যাতনের একপর্যায়ে ফজর আলীকে বলতে শোনা যায়, আমাকে বাঁচিয়ে দে, মরে যাব। তখন নির্যাতনকারীদের বলতে শোনা যায়, তুই মরে যা, দেশ শান্তি হইব। নির্যাতনের পর ফজরের হাত এবং মাথা থেকে রক্ত ঝরছে এবং সে মারাত্মক আহত হয়।

ভিডিওতে আরও দেখা যায়, ‘ছাত্রলীগ নেতা সুমন নিজে ফজরকে মারধর করছেন। অপরদিকে তার সহযোগী অনিক নিপীড়নের শিকার নারীর কাপড় খুলে বিবস্র করছেন। তখন নারী চিৎকার করলে তার মুখ চেপে ধরা হয়।’ 

এ দিকে  সোমবার সকালে  ভুক্তভোগী নারী বলেন, ‘আমি না বুঝেই ফজর আলীর বিরুদ্ধে মামলাটি করেছি। পরিবার ও এলাকার কারো সঙ্গে পরামর্শ ছাড়াই মামলা করে আমি এখন আমার স্বামীর চাপের মুখে আছি। স্বামী ও আমার পরিবারের লোকজন মামলা চালাতে অনীহা প্রকাশ করছে। আমি আমার সন্তানদের নিয়ে শান্তিতে থাকতে চাই। কারো বিরুদ্ধে মামলা মোকদ্দমা ভালো লাগে না। আমি মামলাটি তুলে নেব।’

গত বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) রাতে উপজেলার রামচন্দ্রপুর দক্ষিণ ইউনিয়নের বাহেরচর গ্রামে এক নারীকে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে। পরে শুক্রবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ওই নারীকে নিপীড়নের প্রথম ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে। এর আগে, স্থানীয়রা বিষয়টিকে পরকীয়া হিসাবে দাবি করলেও ভুক্তভোগী নারী জানান, তার সঙ্গে ফজর আলীর আর্থিক লেনদেনের সম্পর্ক রয়েছে।

এ ঘটনায় গত শনিবার ফজর আলী নামে এক ব্যক্তিকে আসামি করে ধর্ষণের মামলা করেন ওই নারী। ধর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্ত ফজরসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ফজর ছাড়া অন্য চারজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ তারা ভিডিও অনলাইনে ছড়িয়েছেন। এ অভিযোগে রোববার কুমিল্লার মুরাদনগর থানায় পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনে আরেকটি মামলা করেন ভুক্তভোগী নারী। ওই মামলায় চারজনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাতপরিচয় আরও ২০ থেকে ২৫ জনকে আসামি করা হয়েছে। ভাইরালকা-ে জড়িত গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন একই এলাকার আবদুল হান্নানের ছেলে সুমন, জাফর আলীর ছেলে রমজান, মো. আলমের ছেলে আরিফ ও তালেম হোসেনের ছেলে অনিক।

স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান গোলাম কিবরিয়া খোকন বলেন, ‘ওই নারী ও ফজর আলীর মধ্যে পরকীয়ার সম্পর্ক ছিল। দুই মাস আগে ফজর আলীর ছোট ভাই শাহপরান ওই নারীর সঙ্গে তার ভাইয়ের পরকীয়া নিয়ে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছিল। তাদের পরকীয়ার বিষয়টি আমাদের এলাকার সবাই জানে। এছাড়া ওই পরিবারের সঙ্গে ফজর আলীর আর্থিক লেনদেন রয়েছে। সেই সুবাদে ফজর আলী ওই বাড়িতে নিয়মিত আসা-যাওয়া করতো।

নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ নেতা সুমনই ঘটনার নেপথ্য কারিগর দাবি করে ইউপি চেয়ারম্যান বলেন, ‘ঘটনাটিকে এত বড় করার নেপথ্যের কারিগর হচ্ছেন ছাত্রলীগ সভাপতি মুহাম্মদ আলী সুমন। তারা আগে থেকে ওঁৎপেতে থেকে দুজনকে ধরেছে। পরে পরিকল্পিতভাবে বিবস্ত্র ও নির্যাতন করে এসব ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল করেছে।’

নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ নেতার নেতৃত্বে ওই চক্রটি ভিন্ন কোনো উদ্দেশ্যে এহেন কাজ করে থাকতে পারে বলে মনে করেন তিনি।

এদিকে বাহেরচর এলাকার সাবেক ইউপি সদস্য আব্দুর রউফ বলেন, ‘ফজর আলী একটা খারাপ লোক। এলাকায় বিভিন্ন নারীদের পেছনে ঘুরে ঘুরে অপকর্ম করাই তার কাজ। তার সঙ্গে ওই নারীর দীর্ঘদিনের সম্পর্ক। এটা এলাকার সবাই জানে।’

এদিকে সোমবার সকালে কথা হলে মুরাদনগর থানার ওসি জাহিদুর রহমান বলেন, ‘নতুন কোনো ভিডিও এখনো আমাদের দৃষ্টিগোচর হয়নি। আমরা মামলার অগ্রগতি নিয়ে কাজ করছি। সিনিয়র অফিসাররা মামলাটি অধিকতর তদন্তের কাজ তদারকি করছে। নতুন ভিডিও হাতে পেলে তা খতিয়ে দেখা হবে। পাশাপাশি ভাইরালের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়