পুলিশি হেফাজতে থাকা জামালপুর-৫ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য রেজাউল করিম হীরা (৮৪) ও তার স্ত্রীকে মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৭ মে) দিবাগত রাত ১১টার দিকে মুচলেকা নিয়ে তার স্ত্রী সালমা খাতুনের জিম্মায় ছেড়ে দেয় জামালপুর সদর থানা পুলিশ। পরে পুলিশ তাকে বাড়িতে পৌঁছে দেয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করে জামালপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু ফয়সল মো. আতিক জানান, সাবেক ভূমিমন্ত্রী রেজাউল করিম হীরার নামে কোনো মামলা নেই। তার মানসিক অবস্থা ভালো না, সে কোথায় আছে তাও বলতে পারছে না। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে মামলা না থাকায় ও বয়স বিবেচনা করে তার স্ত্রী সালমা খাতুনের জিম্মায় ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। তার স্ত্রীর শারীরিক অবস্থাও ভালো না।
উল্লেখ্য, মঙ্গলবার বিকেলে রেজাউল করিম ইসলাম হীরা তার স্ত্রীকে নিয়ে জমি বিক্রির জন্য শেরপুর জেলা সাব রেজিস্ট্রার অফিসে গেলে স্থানীয় বিএনপির নেতাকর্মীরা আটক করে। খবর পেয়ে শেরপুর থানা পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে তাকে উদ্ধার করে হেফাজতে নেয়৷ রাত ১০টার দিকে তাকে জামালপুর পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। রেজাউল করিম হিরা জামালপুর সদর-৫ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনীত টানা পাঁচবার এমপি নির্বাচিত হয়ে ২০০৯ সালে ভূমিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, পার্শ্ববর্তী জামালপুর জেলার সদর উপজেলার বাসিন্দা মৃত নুরুল হক চৌধুরীর ছেলে ও বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক ভূমি মন্ত্রী মোঃ রেজাউল করিম হীরা ও তার স্ত্রীসহ তার জমি বিক্রি ও রেজিস্ট্রি সম্পাদন করে দিতে মঙ্গলবার শেরপুর সদর সাব-রেজিস্ট্রার অফিস কার্যালয়ে আসেন। এসময় বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা সাবেক ওই মন্ত্রীকে দেখে ফুঁসে উঠেন এবং মারমুখী হয়ে পড়ে। খবর পেয়ে পুলিশ সদর সাব-রেজিস্ট্রার অফিস থেকে সাবেক মন্ত্রী মোঃ রেজাউল করিম হীরা ও তার স্ত্রীকে আটক করে শেরপুর সদর থানায় নিয়ে যায়।
এব্যাপারে শেরপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মোঃ আব্দুল করিম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, সাবেক ভূমিমন্ত্রী ও তার স্ত্রীকে জামালপুর থানা পুলিশে সোপর্দ করার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
রেজাউল করিম হীরা জামালপুর-৫ (সদর) আসনের আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য। ১৯৯৬ সালে তিনি প্রথম সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। পরে ২০০১, ২০০৮ ও ২০২৪ সালেও তিনি সংসদ সদস্য হন। ২০০৯ সালে তিনি ভূমি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পান। এ ছাড়া তিনি দশম সংসদের ভূমি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি ছিলেন।