জাহাঙ্গীর লিটন, লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি : লক্ষ্মীপুরে জাম ও মণ্ডলফল দেওয়ার প্রলোভনে বিদ্যালয়ের টয়লেটে নিয়ে ৩ বছর বয়সের শিশু ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগ কবির হোসেন (৫৫) নামের এক প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে। এঘটনায় অভিযুক্ত শিক্ষকে গণপিটুনি দিয়ে পুলিশের সোপর্দ করেছে ওই ছাত্রীর মা সহ ক্ষুব্ধ স্থানীয়রা।
মঙ্গলবার (২৭মে) দুপুরে লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার ভবানীগঞ্জ ইউনিয়নের দক্ষিণ-পশ্চিম চরমনসা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে।
এদিকে এঘটনায় ওই শিশু ছাত্রীর মা হালিমা বেগম বাদী হয়ে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ এনে লক্ষ্মীপুর সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে বলে লক্ষ্মীপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রাত বারোটায় রাইজিং বিডিকে নিশ্চিত করেন।
অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার চরমনসা গ্রামের শাকায়েত উল্যার ছেলে। তিনি ৩০ বছর ধরে ওই বিদ্যালয়ে কর্মরত রয়েছে বলে জানা গেছে।
ভিকটিম শিশুর মা হালিমা বেগম ও স্থানীয়রা জানায়, চরমনসা গ্রামের শিশু নাফিসা বেগম গত ১৫–২০ দিন ধরে কিছুতেই বিদ্যালয়ে আসতে রাজি হচ্ছিল না। পরবর্তীতে মায়ের জিজ্ঞাসাবাদে শিশুটি জানায় প্রধান শিক্ষক কবির হোসেন জাম ও মণ্ডল খেতে দেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে বিদ্যালয়ের টয়লেটে নিয়ে যৌন হয়রানি করেছিল। এই ঘটনা কারো কাছে বললে তাকে প্রাণে হত্যারও হুমকি দেয় ওই প্রধান শিক্ষক। ফলে সে ভয়ে বিদ্যালয়ে যেতে রাজি হচ্ছিল না। ঘটনার পর থেকে প্রধান শিক্ষক ট্রেনিংয়ে থাকায় বিদ্যালয়ে আসেনি।
বিষয়টি অন্য শিক্ষকদের জানালে আজ সকালে আসতে বলে। কিন্তু সকালে বিদ্যালয়ে শিশুটির মা আসলেও কোন পাত্তা পায়নি প্রধানশিক্ষকের কাছে। পরে বিষয়টি জানাজানি হলে ক্ষুব্ধ হয়ে উঠে অভিভাবা ও স্থানীয়রা। এক পর্যায়ে গণ পিটুনি দিয়ে অভিযুক্ত প্রধানশিক্ষক কবির হোসেনকে পুলিশে সোপর্দ করেন স্থানীয়রা। এঘটনায় সুষ্ঠু বিচার দাবীকরেন ক্ষতিগ্রস্তপরিবার।
স্থানীয়রা আরো জানায়, এর আগে ও এই প্রধান শিক্ষক একাধিকবার বিদ্যালয়ের শিশু ছাত্রীদের যৌন হয়রানি করার প্রমাণ রয়েছে। গত ছয় মাস আগে এমন ঘটনায় ধরা পড়ে প্রধান শিক্ষক কবির হোসেন ভবিষ্যতে আর ঘটাবে না মর্মে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি ও মসজিদ কমিটিকে লিখিত মুছলেকা দিয়েছিলেন।
বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক সোহেল ও মহিউদ্দিন বলেন, প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে শিশু ছাত্রীদের একাধিকবার যৌন হয়রানির অভিযোগ উঠেছিল। বিষয়টি স্পর্শকাতর। তদন্ত করে আদালত ব্যবস্থানেক।এদিকে যৌন হয়রানির বিষয়টি মিথ্যা বলে দাবী করেন অভিযুক্ত প্রধানশিক্ষক কবির হোসেন। তিনি বলেন, প্রশিক্ষণের তিনি গত ১ সাপ্তাহ ধরের বিদয়ায়ের বাহিরে ছিলেন। তার বিরুদ্ধে একটি পক্ষ ষড়যন্ত্র করছে বলে দাবী করেন তিনি।
লক্ষ্মীপুর সদর থানার অফিসার ইনচার্জ আব্দুল মুন্নাফ ঘটনা সত্যতা স্বীকার করে জানান, শিশু ছাত্রীর মা থানায় এজহার দিয়েছেন। মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হবে।