নিনা আফরিন ,পটুয়াখালী : পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জে সরকারি চাল দেওয়ার নামে ভুক্তভোগীদের নিকট থেকে টাকা নেওয়ার অভিযোগ উঠছে। মির্জাগঞ্জের মাধবখালী ইউনিয়ন পরিষদের সচিব মোঃ হুমায়ুন কবির মাসুদ এ টাকা উত্তোলন করিয়েছেন বলে অভিযোগ ভুক্তভোগীদের। এ ঘটনায় শতাধিক ক্ষুব্ধ জনতা ওই সচিবকে রাত সাড়ে আটটা পর্যন্ত পরিষদের একটি কক্ষে অবরুদ্ধ করে রাখে। পরে সেনাবাহিনীর সদস্যরা তাঁকে উদ্ধার করে।
প্রত্যক্ষদর্শী,পুলিশ ও স্থানীয় সুত্র জানায়, সোমবার (২৬মে) সকাল থেকে মাধবখালী ইউনিয়নের ৩২৫ জন উপকারভোগীর মধ্যে ৫ মাসের ভি ডব্লিউ ভির চাল বিতরণ কার্যক্রম শুরু করে সচিব। চাল বিতরনের আগে চৌকিদার ও দফাদারের মাধ্যমে প্রতিজন উপকার ভোগীদের কাছ থেকে ইউ পি সচিব হুমায়ুন কবির মাসুদ ৫শত টাকা করে আদায় করে নেয়।
কিন্তু কয়েকজন ভুক্তভোগীর কাছে থেকে টাকা নিয়া চাল না দেওয়ায় এ সময় হট্টগোল বাধে। জেসমিন(৪৫) নামে এক নারীর থেকে ৫ শত টাকা নিয়েও তাকে চাল দেয়া হয় নাই বলে সে সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করেন। চাল নিতে সরকারকে কোন টাকা দিতে হয় না জানার পর উপস্থিত ভুক্তভোগীরা তাদের টাকা ফেরত ও সচিবের বিচার চেয়ে বিক্ষোভ করেন। এক পর্যায়ে উপস্থিত জনতা সচিব কে একটি কক্ষে আটকে রাখেন।
একাধিক ভুক্তভোগী জানান, গত দুই দিন ধরে আমাদের বাড়ি বাড়ি গিয়া চৌকিদার ও দফাদার চাল দেওয়ার কথা বলে ৫ শত টাকা করে উত্তোলন করেছে। টাকা না দিলে চাল দেয়া হবে না বলেও হুমকী দিয়েছেন তারা।
মাধবখালী ইউনিয়ন পরিষদের দফাদার শফিকুল ইসলাম সোহাগ বলেন, সচিব সাহেব আমাদের টাকা উত্তোলনের জন্য বলছেন। তাই আমরা তার কথাতেই টাকা উত্তোলন করেছি।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত ইউপি সচিব হুমায়ুন কবির মাসুদ বলেন, আমি কোন টাকা আদায় করিনি যা করার তা প্রশাসক, ইউপি সদস্য, চৌকিদার ও দফাদার সবাই মিলে মিটিংয়ের মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নিয়ে সেই মোতাবেক তারাই টাকা আদায় করেছে। এখানে আমার একক কোন সিদ্ধান্তে কিছু করার সুযোগ নেই।
মাধবখালী ইউনিয়ন পরিষদের প্রশাসক উপজেলা সমাজ সেবা কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম কে বারবার ফোন দেওয়া হলেও তিনি মোবাইল রিসিভ করেননি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তরিকুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, আমি অভিযোগ ও ভিডিও পেয়েছি। এ ব্যাপারে শতভাগ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। অবরুদ্ধ সচিব হুমায়ুন কবির মাসুদ কে উদ্ধার করতে সেনাবাহিনীকে অনুরোধ করা হয়েছে।
জেলা প্রশাসক আবু হাসনাত মোহাম্মদ আরেফিন বলেন, আমি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার যোগাযোগ করেছি এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেছি।