কায়সার হামিদ, উখিয়া: [২] রোহিঙ্গা ও স্থানীয়রা মিলে সংঘবদ্ধ হয়ে অপরাধ মূলক কর্মকান্ডে জড়িয়ে পড়ছে। এরই ধারাবাহিকতায় চকরিয়া ফাঁসিয়াখালি দারুল উলুম মাদ্রাসার ৭ম শ্রেণীতে পড়ূয়া রাশিকুল ইসলাম (১৫) অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায় করতে গিয়ে সংঘবদ্ধ অপহরণ চক্রের মূলহোতাসহ ৩ জনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব-১৫।
[৩] শনিবার রাতে উখিয়া উপজেলার পালংখালী ইউনিয়নের থাইংখালী রোহিঙ্গা ক্যাম্প এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এসময় অপহরণের কাজে ব্যবহৃত মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়।
[৪] গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, কক্সবাজার জেলার ঝিলংজা ইউনিয়নের ৪ নং ওয়ার্ডের দক্ষিণ মুহুরী পাড়ার নুর মোহাম্মদ এর ছেলে মোঃ তারেক (১৮) ও বালুখালী ১২ নং ক্যাম্পের ৭/জে ব্লকের আলী হোসেন এর ছেলে আবদুল্লাহ (৩৪) একই ক্যাম্পের ৪/ এইচ ব্লকের মৃত আবুল খায়ের এর ছেলে আমিন উল্ল্যা (১৯)।
[৫] কক্সবাজার র্যাব-১৫ এর সিনিয়র সহকারী পরিচালক (ল’এন্ড মিডিয়া) অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ আবু সালাম চৌধুরী রবিবার বিকালে এক প্রেসবিজ্ঞপ্তিতে এতথ্য নিশ্চিত করে জানান, কক্সবাজার সদরের নাছিমা ইয়াসমিন নামে এক ভুক্তভোগী নারী অভিযোগ করেন, চকরিয়া ফাঁসিয়াখালি দারুল উলুম মাদ্রাসার ৭ম শ্রেণীতে পড়ূয়া তার বড় ছেলে রাশিকুল ইসলাম (১৫) মাদ্রাসা থেকে ছুটিতে বাড়ী এসে গত ৫ ফেব্রুয়ারি নিখোঁজ হয়। নিখোঁজ হওয়ার পর থেকে ছেলেকে নিকটতম আত্মীয় স্বজন ও সম্ভাব্য সকল স্থানে খোঁজাখুজি করেও কোথাও খুজেঁ পাইনি।
[৬] পরবর্তীতে ৭ ফেব্রুয়ারি অপরিচিত মোবাইল নম্বর থেকে কল দিয়ে জানায় যে, রাশিকুল ইসলাম’কে অপহরণ করা হয়েছে এবং মুক্তিপণ হিসেবে দুই লক্ষ টাকা দাবী করে। মুক্তিপণ না দিলে তাকে মেরে ফেলার হুমকি দেয়। প্রতিশ্রুতি মোতাবেক একাধিক মোবাইল নম্বরে অপহরণকারীদের পর্যায়ক্রমে একাধিকবারে ১ লক্ষ ৫০ পঞ্চাশ হাজার টাকা মুক্তিপণ দেয়ার পরও পুনরায় তারা আরো দুই লক্ষ টাকা মুক্তিপণ দাবী করে। পরবর্তীতে ভুক্তভোগী নারী এ বিষয়ে র্যাব-১৫ এর নিকট অভিযোগ করেন। এছাড়াও এ সংক্রান্তে কক্সবাজার সদর মডেল থানায় সাধারণ ডায়েরী দায়ের করেন।
[৭] এরই ধারাবাহিকতায় ২ মার্চ বিকাল সাড়ে ৫ টার দিকে র্যাব-১৫, সিপিএসসি ক্যাম্পের আভিযানিক দল অভিযোগের ভিত্তিতে কক্সবাজারের উখিয়া থানাধীন থাইংখালী রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অভিযান চালিয়ে সংঘবদ্ধ অপহরণ চক্রের মূলহোতাসহ ৩জন অপহরণকারীকে গ্রেপ্তার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, গ্রেপ্তারকৃত মোঃ তারেক অপহৃত ভিকটিম রাশিকুল ইসলামকে ঘুরতে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে অপহরণপূর্বক উখিয়ার থাইঙখালী রোহিঙ্গা ক্যাম্পে নিয়ে যায়। সেখান থেকে গ্রেপ্তারকৃতদের পরিকল্পনা মোতাবেক ভিকটিমকে সিএনজি যোগে টেকনাফে নিয়ে গিয়ে সংঘবদ্ধ অপহরণ চক্রটির অপর এক সদস্যের নিকট হন্তান্তর করে। পরবর্তীতে ৫ ফেব্রুয়ারি পার্শ্ববর্তী দেশ মিয়ানমারে পাচার করে মর্মে স্বীকার করে।
[৮] উদ্ধারকৃত আলামতসহ গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণার্থে কক্সবাজার সদর মডেল থানায় লিখিত এজাহার দাখিল করা হয়েছে। সম্পাদনা: এ আর শাকিল
প্রতিনিধি/এআরএস
আপনার মতামত লিখুন :