শিরোনাম

প্রকাশিত : ২৯ নভেম্বর, ২০২২, ০৮:১২ রাত
আপডেট : ৩০ নভেম্বর, ২০২২, ০৫:৩২ বিকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

রাজধানীতে গ্যাস মিটারে যুক্ত হচ্ছেন ৮০ হাজার গ্রাহক

গ্যাস মিটার

মনজুর এ আজিজ : রাজধনীতে নতুন করে গ্যাস মিটারে যুক্ত হচ্ছে ৮০ হাজার গ্রাহক। এজন্য তৃতীয়বারের মতো সংশোধন করা হচ্ছে ‘প্রিপেইড গ্যাস মিটার স্থাপন’ প্রকল্প। এই প্রস্তাব নিয়ে বুধবার (৩০ নভেম্বর) অনুষ্ঠিত হবে প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভা। ওই সভায় সভাপতিত্ব করবেন পরিকল্পনা কমিশনের শিল্প ও শক্তি বিভাগের সদস্য (সচিব) মোহাম্মদ এমদাদ উল্লাহ মিয়ান। সেখানে পরামর্শকসহ নানা বিষয়ে আলোচনা হবে বলে জানা গেছে। 

পরিকল্পনা কমিশনের একাধিক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, প্রকল্পের সংশোধনী প্রস্তাবটি নিয়ে এখনো কথা বলার সময় আসেনি। তবে পিইসি সভায় নানা বিষয়ে প্রশ্ন তোলা হবে। সন্তোষজনক ব্যাখা পাওয়া না গেলে সুপারিশ দিয়ে ফেরত পাঠানো হবে প্রকল্প প্রস্তাবটি। সংশোধন হয়ে আসলে তারপরই একনেকে উপস্থাপনের বিষয়টি দেখা হবে।

প্রকল্পের সংশোধনী প্রস্তাবে বলা হয়, জাপান সরকারের ৩৫তম ওডিএ লোন প্যাকেজভুক্ত ন্যাচারাল গ্যাস ইফিসিয়েন্সি প্রজেক্টের আওতায় তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড (টিজিটিডিসিএল) প্রকল্পটি হাতে নিয়েছে। এটির মাধ্যমে ঢাকা সিটিতে দুই লাখ প্রি-পেইড গ্যাস মিটার স্থাপনের জন্য জাইকার ঋণ সহায়তায় মিটার স্থাপন প্রকল্পের উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব (ডিপিপি) ৭১২ কোটি ১০ লাখ টাকা ব্যয় ধরা হয়। 

প্রকল্পটি ২০১৫ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি একনেক সভায় অনুমোদন পায়। এরপর প্রকল্পের মেয়াদ ২ বছর বৃদ্ধি করা হয়। এখন মোট প্রাক্কলিত ব্যয় হ্রাস করে ৪৯৮ কোটি ৯৪ লাখ টাকায় সংশোধন করা হয়। পরবর্তীতে লোন প্যাকেজ বিডি-পি৭৮ (যার মধ্যে পেট্রোবাংলার অধীনস্থ বিভিন্ন কোম্পানির চারটি প্রকল্প অন্তর্ভুক্ত) এর অব্যয়িত অর্থ দিয়ে এই প্রকল্পের অধীনে অতিরিক্ত এক লাখ ২০ হাজার মিটার স্থাপনের জন্য মোট প্রাক্কলিত ব্যয় ও প্রকল্প মেয়াদ বৃদ্ধি করে প্রকল্পটির দ্বিতীয় সংশোধন করা হয়। প্রকল্পের দ্বিতীয় সংশোধনী ২০২০ সালের ২২ ডিসেম্বর একনেক সভায় অনুমোদন পায়।

প্রকল্পের অধীনে ঢাকা মেট্রোপলিটন এলাকায় ২টি ধাপে এরইমধ্যে মোট তিন লাখ ২০ হাজার আবাসিক প্রিপেইড গ্যাস মিটার স্থাপন করা হয়েছে। অনুমোদিত দ্বিতীয় সংশোধীত ডিপিপি (উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব) অনুযায়ী প্রকল্পের প্রাক্কলিত ব্যয় ৭৫৩ কোটি ৮৩ লাখ ৯৫ হাজার টাকা ধরা হয়েছে। 
বাস্তবায়নকাল ২০১৫ সালের জানুয়ারি থেকে চলতি বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত। বর্তমানে লোন প্যাকেজ বিডি-পি ৭৮ এর আওতায় এই প্রকল্পের অধীনে অতিরিক্ত আরও ৮০ হাজার প্রিপেইড গ্যাস মিটার স্থাপনের প্রস্তাব করা হয়েছে। গত ১০ আগস্ট জাইকা থেকে এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে অনাপত্তি পত্র দেওয়া হয়।

প্রকল্পের বিদ্যমান ইপিসি ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান টোকিও কোম্পানি লিমিটেডের মাধ্যমে চুক্তির ভেরিয়েশন অর্ডার অনুযায়ী, আর্থিক দর চূড়ান্ত করে তৃতীয় সংশোধিত ডিপিপির ব্যয় প্রাক্কলন করা হয়েছে ৯০২ কোটি ৮১ লাখ ১১ হাজার টাকা। ২০১৫ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত বাস্তবায়নের জন্য প্রস্তাব করা হয়েছে। প্রস্তাবিত সংশোধন প্রকল্প ব্যয় মূল ডিপিপি’র চেয়ে ১৯০ কোটি ৭১ লাখ ২১ হাজার টাকা বা ২৭ শতাংশ বেশি। প্রথম সংশোধিত ডিপিপি’র চেয়ে ৪০৩ কোটি ৮৩ লাখ ৭৯ হাজার টাকা বা ৮১ শতাংশ এবং দ্বিতীয় সংশোধিত ডিপিপির চেয়ে ১৪৮ কোটি ৯৭ লাখ ১৬ হাজার টাকা বা ২০ শতাংশ ব্যয় বৃদ্ধি পেয়েছে। বাস্তবায়ন মেয়াদ এক বছর ৬ মাস। 

সচেতনামূলক কর্মসূচিতে ৫০ লাখ টাকা, প্রি-শিপমেন্ট ইন্সপেকশন বাবদ ২৫ লাখ টাকা, স্থানীয় প্রশিক্ষণ বাবদ ১৫ লাখ টাকা, পরামর্শ সেবা বাবদ ৪৯৮ লাখ টাকা, সম্মানী ৫ লাখ টাকা, সিঅ্যান্ডএফ কমিশনিং ২৫ লাখ টাকা, অন্যান্য ৫ লাখ টাকা, এআইটি ১১৫ লাখ টাকা এবং রাজস্ব খাতে মোট ৭৩৮ লাখ টাকা বৃদ্ধির প্রস্তাব করা হয়েছে। এছাড়া মূলধন খাতের আওতায় সার্ভে ও মিটার স্থাপনে ১৮ কোটি ৩১ লাখ ১৩ হাজার টাকা, কম্পিউটার ও যন্ত্রাংশ বাবদ ১০ লাখ টাকা, মিটার ক্রয় বাবদ ৯৮ কোটি ৭ লাখ ৫১ হাজার টাকা, মিটার টেস্টিং বাবদ ১ কোটি ৩৭ লাখ ৫২ হাজার টাকা, আসবাবপত্র বাবদ ১৫ লাখ টাকা এবং ক্যাপিটাল ব্লক এলাকেশন বাবদ ১১ কোটি ৫৮ লাখ টাকাসহ মোট ১২৯ কোটি ৫৯ লাখ ১৬ হাজার টাকার প্রস্তাব করা হয়েছে। তাছাড়া প্রাইস কন্টিনজেন্সি বাবদ ১২ কোটি টাকা বৃদ্ধির প্রস্তাব করা হয়েছে।

শিল্প ও শক্তি বিভাগের তেল, গ্যাস ও প্রাকৃতিক সম্পদ শাখার যুগ্ম প্রধান মোছা. আনার কলির সই করা পিইসি সভার কার্যপত্রে বলা হয়, প্রকল্পটি ২০১৫ সালের জানুয়ারি থেকে শুরু হয়েছে এবং ৩ লাখ ২০ হাজার প্রিপেইড মিটার স্থাপন ও কমিশনিং সম্পন্ন হয়েছে। এ সংশ্লিষ্ট ডাটা সেন্টার ও ওয়েব সিস্টেমও স্থাপন করা হয়েছে। অপারেশনাল কার্যক্রম চলমান আছে। আরও নতুন করে ৮০ হাজার মিটার স্থাপনের জন্য পরামর্শক সেবার সংস্থান এবং এ বাবদ ৪ কোটি ৯৮ লাখ টাকা ব্যয় প্রাক্কলনের যৌক্তিকতা সভায় আলোচনা করা যেতে পারে। 

এমএএ/এএ

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়