এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণের দাবিতে সারা দেশ থেকে আসা হাজারও শিক্ষক অবস্থান করছেন জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনের। আজ দাবি আদায়ের ঘোষণা না নিয়ে এলাকা ছাড়বেন না বলে জানিয়েছেন তারা। এদিকে শিক্ষকদের এই অবস্থানের কারণে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনের তোপখানা রোডের যান চলাচল হয়ে যায়।
বুধবার (১৩ আগস্ট) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এই শিক্ষক সমাবেশের আয়োজন করেছে ‘এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণ প্রত্যাশী জোট’। তারা জাতীয় প্রেস ক্লাবের পাশের সচিবালয়ের মোড় থেকে কদম ফোয়ারা পর্যন্ত অবস্থান নেয়। তাই প্রেস ক্লাবের সামনের তোপখানা রোড বন্ধ থাকায় এই পথের যানবাহনগুলোকে শিক্ষা ভবন মোড় হয়ে সচিবালয়ের সামনে দিয় গুলিস্তান মোড়ে যেতে হচ্ছে।
সংগঠনটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ২০১৮ সালে দীর্ঘ আন্দোলনের পর তৎকালীন সরকার ৫ শতাংশ বার্ষিক প্রবৃদ্ধি ও ২০ শতাংশ বৈশাখী ভাতা প্রদানের সিদ্ধান্ত কার্যকর করেছিল। তখন প্রতিশ্রুতি ছিল পরবর্তী মেয়াদে জাতীয়করণের। তবে আগের সরকার তা বাস্তবায়ন না করায় শিক্ষকদের আন্দোলন অব্যাহত থাকে।
বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে আলোচনায় শিক্ষা উপদেষ্টা বৈষম্য নিরসনের আশ্বাস দিয়েছিলেন। এ বছরের ১২ ফেব্রুয়ারি থেকে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচির ২২তম দিনে সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলনে উৎসব ভাতা ২৫ শতাংশ বৃদ্ধি এবং বাজেটে বাড়ি ভাড়া, চিকিৎসা ভাতা ও শ্রান্তি বিনোদন ভাতা কার্যকরের ঘোষণা দেওয়া হয়। বাজেটে বরাদ্দ থাকলেও এখনও প্রজ্ঞাপন জারি হয়নি। এজন্য জোট ১০ আগস্টের মধ্যে প্রজ্ঞাপন জারির দাবি জানিয়েছিল, অন্যথায় আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেয়।
এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণ প্রত্যাশী জোটের সদস্যসচিব অধ্যক্ষ দেলাওয়ার হোসেন আজিজী বলেন, ‘আমরা দীর্ঘদিন ধরে এই দাবিগুলো জানিয়ে আসছি। ২০১৮ সালে সরকারের দেওয়া প্রতিশ্রুতি এখনও পূরণ হয়নি। আর বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের শিক্ষা উপদেষ্টাও আমাদের আশ্বাস দিয়েছেন। তবে বাস্তবায়নের কোনও সুনির্দিষ্ট অগ্রগতি নেই। এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীরা দেশের শিক্ষা ব্যবস্থার মূল চালিকাশক্তি। অথচ আমরা বছরের পর বছর বৈষম্যের শিকার হয়ে আসছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘কালকের সমাবেশে সারা দেশ থেকে বিপুল সংখ্যক শিক্ষক ও কর্মচারী ঢাকায় আসবেন। জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে থেকে আমরা একযোগে দাবি তুলে ধরবো এবং প্রয়োজনে সচিবালয় পর্যন্ত পদযাত্রা করবো। এটা শুধু একটি কর্মসূচি নয়, বরং ন্যায্য অধিকার আদায়ের সংগ্রাম। আমরা চাই সরকার অবিলম্বে প্রজ্ঞাপন জারি করে জাতীয়করণের সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ দিক। যদি এবারও দাবি পূরণ না হয়, তবে আমরা আরও বৃহত্তর ও কঠোর কর্মসূচি নিতে বাধ্য হবো।’
সিলেটের কানাইঘাট থেকে আসা আলী রহমান বলেন, ‘বারবার আশ্বাস নিয়ে ফিরে গিয়েছি আমরা। আজ আর কোনও আশ্বাসে কাজ হবে না। আমরা একটু পর সচিবালয়ের দিকে যাবো। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত এখানে অবস্থান করবো।’ উৎস: বাংলাট্রিবিউন।