রাজধানীর দিয়াবাড়ীতে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী নাজিয়া এবং প্রথম শ্রেণির ছাত্র নাফি। যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হওয়ার ঘটনায় আহত এই দুজনকে উদ্ধার করে জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতরাত সাড়ে ৩টার দিকে নাজিয়া মারা গেছে। তার ছোট ভাই নাফি এখনো হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
মঙ্গলবার (২২ জুলাই) নিহত দুই সহোদরের বাবা আশরাফুল ইসলাম নীরবের বন্ধু আনোয়ার হোসেন এসব তথ্য জানান।
তিনি বলেন, মর্মান্তিক দুর্ঘটনার খবরে তিনি দিনাজপুর থেকে ঢাকার বার্ন ইনস্টিটিউটে এসেছেন। নিরাপত্তাজনিত কারণে হাসপাতালে ভেতরে প্রবেশ করতে না পেরে বাইরে অবস্থান করছেন এবং সবার খবর রাখছেন। নাজিয়া ও নাফি তাদের বাবা-মায়ের সঙ্গে উত্তরার কামারপাড়া এলাকায় বসবাস করত। বিকেল ৩টায় উত্তরার কামারপাড়ায় নাজিয়ার জানাজা অনুষ্ঠিত হবে বলেও জানান আনোয়ার।
এদিকে রাজধানীর উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের ক্যাম্পাসে বিমানবাহিনীর যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ২৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। তাদের মধ্যে ২৫ জন শিশু বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার স্বাস্থ্যবিষয়ক বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. সায়েদুর রহমান।
মঙ্গলবার (২২ জুলাই) সকালে জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটে এক ব্রিফিংয়ে তিনি এই তথ্য জানান। নিহত বাকি দুজনের মধ্যে একজন পাইলট, অন্যজন শিক্ষিকা বলে জানান তিনি।
অধ্যাপক ডা. মো. সায়েদুর রহমান বলেন, চিকিৎসার সব রকমের প্রস্তুতি আমাদের আছে। দুর্ঘটনায় আহত হয়ে এখন পর্যন্ত ৭৮ জন বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি আছে। তাদের মধ্যে পাঁচজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। বার্ন ইউনিটে দুজন ভেন্টিলেশনে আছে বলেও জানান তিনি।
তিনি আরও বলেন, এখন পর্যন্ত নিহত ছয়জনের পরিচয় নিশ্চিত করা যায়নি। এ ছাড়া পরিচয় শনাক্তের পর পরিবারের কাছে ২০ জনের মরদেহ হস্তান্তর করা হয়েছে।
সোমবার দুপুর ১টা ১৮ মিনিটের দিকে রাজধানীর উত্তরার দিয়াবাড়ী এলাকায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ক্যাম্পাসে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর এফটি-৭ বিজিআই মডেলের একটি প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হয়। আছড়ে পড়ার পরপরই বিমানটিতে আগুন ধরে যায়। বিমানটিতে ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট তৌকির একাকী আকাশে উড়েছিলেন। ওই ভবনে তখন অনেক স্কুল শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন, যাদের অধিকাংশই হতাহত হয়েছেন।
দুর্ঘটনার পর দ্রুত ফায়ার সার্ভিস উদ্ধার অভিযান শুরু করে। উত্তরা ও আশপাশের নয়টি ইউনিট ঘটনাস্থলে এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে এবং হতাহতদের উদ্ধারকাজ শুরু করে। পরে বিজিবি ও সেনাবাহিনীও উদ্ধার কাজে যোগ দেয়। হতাহতদের বিমানবাহিনীর হেলিকপ্টারে করে হাসপাতালে নেওয়া হয়। উৎস: কালবেলা।