শিরোনাম

প্রকাশিত : ১৭ জানুয়ারী, ২০২২, ০১:৪৯ দুপুর
আপডেট : ১৭ জানুয়ারী, ২০২২, ০১:৪৯ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

[১] লামায় সেতু নির্মাণে যোগাযোগ খাতে বৈপ্লবিক পরিবর্তন হতে যাচ্ছে

নুরুল করিম: [২] গ্রামে সেতু নির্মাণ হয়েছে। চলছে সড়ক তৈরীর প্রাথমিক কর্মযজ্ঞ। স্বাধীনতার পর পরিবর্তনের এই ধারায় মহাখুশি বান্দরবানের লামা উপজেলার দুর্গম পাহাড়ি রুপসীপাড়া ও লামা সদর ইউনিয়নের হাজার হাজার মানুষ। সেতুর পর সেই পুরনো মাটির রাস্তার নির্মাণ কাজ শুরু দাবি এলাকাবাসীর। ফলে দীর্ঘ দিনের ভোগান্তি লাঘব হবে।

[৩] স্থানীয়দের মতে, চলমান এসব কাজ সম্পূর্ণ হলে ওই দুই ইউনিয়নের অন্তত ৯টি ওয়াডের্র যোগাযোগ খাতে এক বৈপ্লবিক পরিবর্তন সাধিত হবে। এদিকে রুপসীপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের পেছন দিক দিয়ে লামা সদর ইউনিয়নে নেই কোন যানচলাচল। সেই পুরনো মাটির রাস্তা ব্যবহার করে দৈনন্দিন কাজ করতে হয় পাহাড়পাড়া, মেওয়াচর, বলিয়ারচর, চিউনি, বরিশালপাড়া, এমশনপাড়া, পাউপাড়া, লক্ষণঝিরি পাড়া, পানচিপারা, নতুন লাইল্লাপাড়া, হেডম্যানপাড়া, ঘিলাপাড়াসহ অন্তত বিশ গ্রামের মানুষকে। কৃষি ও তামাক নির্ভর এসব গ্রামের মানুষকে তাদের উৎপাদিত পণ্য নৌকা দিয়ে নিতে হতো বাজারে। স্বাধীনতার পর থেকে এভাবেই চলে আসছিল ২০ হাজার মানুষের জীবনযাত্রা। কিন্তু সম্প্রতি দুই পারের মানুষের অবিশ্বাস্য স্বপ্নের বাস্তবায়ন হতে চলছে।

[৪] সরেজমিনে পরিদর্শনে দেখা যায়, লামা সদর ইউনিয়নের ৫টি ওয়ার্ড এবং রুপসীপাড়ার ৪টি ওয়ার্ডের মানুষের চলাচল সুবিধার্থে পোপা খালের উপর ব্রিজের কাজ প্রায় শেষ হয়েছে। সড়কের সঙ্গে যুক্ত করতে চলছে এপ্রোচের কাজ। পোপা খালের উপর পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের নির্মীত ৬০মিটার গার্ডার ব্রীজের দৃশ্যমান। চলছে ওপারের এপ্রোস সড়কসহ বাকী সড়কের প্রাথমিক কার্যক্রম।

[৫] এদিকে কৃষক তৌহিদুল ইসলাম, অংহ্লাপাড়া এলাকার মাহাবুবুল আলম জানান, কৃষকের উৎপাদিত পেপে আঁখ আম কলাসহ বিভিন্ন শাকসবজি কাঁচামাল বাজারজাত করার আগেই নষ্ট হয়ে যেত। শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ে যেতে ও অসুস্থ্য রোগী হাসপাতালে নিয়ে যেতেও পড়তে হত চরম ভোগান্তিতে। স্থানীয়দের শহরের হাট বাজারে আসতে হলে ঘুরতে হত দীর্ঘ পথ। আর এই সেতু নির্মাণ কাজ শেষ হলে যেমন চলাচলের দুরুত্ব কমে আসবে এবং পাল্টে যাবে হাজার হাজার মানুষের ভাগ্য। ব্রীজের নির্মাণ কাজ শেষ হলে যাতায়ত ব্যবস্থা সহজ হলে স্থানীয় কৃষকরা তাদের উৎপাদিত কৃষিপণ্যের ভাল দাম পাবে এবং কম খরচে সহজেই তাদের উৎপাদিত পণ্য বাজারজাত করতে পারবে বিভিন্ন বাজারে।

[৬] পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড বান্দরবান ইউনিট অফিস সূত্রে জানা যায়, মানুষের জনভোগান্তি দূর করতে পার্বত্য পার্বত্য মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি’র নির্দেশনায় ২০১৯ সালে ২ কোটি ৮৫ লাখ টাকা ব্যয়ে ব্রিজের কাজ শুরু করেন পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড। চলতি ২০২২ সালে কাজ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। ইতোমধ্যেই পুরো ব্রিজের কাজ শেষ হয়েছে। এখন এপ্রোস সড়কের কাজ চলছে। খুব শীঘ্রই বাকি সড়কের কাজও শুরু হবে।

[৭] লামা রুপসীপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ছাচিং প্রু মারমা জানান, লামা সদর ইউনিয়নের সঙ্গে রুপসীপাড়া ইউনিয়নকে সংযুক্ত করেছে পোপা খালের উপর নির্মীত উন্নয়ন বোর্ডের ব্রিজ। পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের এই কল্যাণে বদলে যাবে সেখানকার মানুষের জীবনযাত্রা। স্বাধীনতার পর থেকে এখানে ব্রিজ না থাকায় মানুষ পিছিয়ে ছিল। বান্দরবানের আনাচে-কানাচে, কোথায় কি লাগবে তার প্রয়োজনীয়তা মানুষ না বলার আগেই বুঝতে পারেন পার্বত্য মন্ত্রী বীর বাহাদুর। সেই ধারাবাহিকতায় রুপসীপাড়া পোপা খালে ব্রিজ নির্মাণ হয়েছে। ব্রিজটি নির্মাণে পার্বত্যমন্ত্রীর আন্তরিক প্রচেষ্টার পাশাপাশি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষ সংশ্লিষ্টদের ভূমিকার প্রশংসাও করেন তিনি। সম্পাদনা: হ্যাপি

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়