শেখ আদনান ফাহাদ: বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকে ভারত-পাকিস্তানের বিরুদ্ধে তাদের নিজস্ব জয় বলে মজা পায়। ভারত তাঁর বন্ধু রাষ্ট্রকে অপমান করে ছোট দেখাতে চায়। এটা ভারতের সিনেমায় খুবই স্পষ্ট। সিনেমার যুদ্ধে ভারত কখনোই হারে না, হারবেও না। অনস্বীকার্য যে বাংলাদেশের ৩০ লাখ মানুষ শহীদ হয়েছিলো, মুক্তিযোদ্ধারা ছিলো অকুতোভয়। এতোবড় আত্মত্যাগ বাংলাদেশের মানুষ করেছিলো বঙ্গবন্ধুর আহ্বানে। পুরো ঘটনাবলীর প্রধান নেতা বঙ্গবন্ধু। বঙ্গবন্ধুর আহ্বানে বাংলাদেশের মানুষ একতাবদ্ধ হয়ে চরম আত্মত্যাগ করাতেই ভারতের সুযোগ হয়েছিলো এই প্রক্রিয়ায় ১৯৭১ সালে শামিল হওয়ার। ১৯৬৩ সালে শেখ মুজিব আগরতলায় গিয়ে ১৫ দিন গোপনে অবস্থান করে জহরলাল নেহরুর সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু ইন্দিরা গান্ধীর বাবা দেখা দেননি এবং বলেছিলেন, ভারত তৎকালীন পরিস্থিতিতে মুজিবকে কোনো হেল্প করতে পারবে না। সেই হেল্প আসতে আমাদের ১৯৭১ সালে মার্চের পরেও বহু মাস চলে গিয়েছিলো। বঙ্গবন্ধুর আহ্বানে মুক্তিযুদ্ধ শুরু না হলে, এতো মানুষ রক্ত না ঢেলে দিলে ভারত এই ফ্রন্টে কখনোই যুদ্ধে জড়াতো না। রিফিউজি আশ্রয় দেওয়া আর সরাসরি সামরিক সংঘাতে সম্পৃক্ত হওয়া এক জিনিস নয়। ভারত ভুলে যায় সোভিয়েত ইউনিয়নের কথা। ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী শুধু নয় এভাবে বিজেপির অনেকেই এভাবে কথা বলেন। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ অর্জন করেছে স্বাধীনতা, ভারত পেয়েছে তাঁর সবচেয়ে নিরাপদ বন্ধু।
১৯৭১ সালের শেষ দিকে ভারত যেভাবে বাংলাদেশের সঙ্গে জড়িয়েছে, সেই আন্তরিকতার সিকিভাগও যদি ১৯৪৭ সালে দেখাতো, তাহলে তো পাকিস্তানে আমাদের যেতেই হতো না। এতোবড় গণহত্যা হতো না, এতো মানুষকে প্রাণ দিতে হতো না। তখনোই আমরা বাংলাদেশ পেয়ে যেতাম। ৪৭ সালে ২৭ বছরের যুবক মুজিব যা করতে পারেননি, সেটি তিনি ১৯৭১ করে দেখিয়েছেন। এর সুফল ভারতও গত ৫০ বছর ধরে ভোগ করেছে। আমরাও স্বাধীনতার সুফল পাচ্ছি। ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রীর উচিত ক্ষমা চেয়ে বলা, যে বাংলাদেশের মানুষের আত্মত্যাগের ফলে ভারত এখনো নিরাপদ আছে, ভারত এখনো ভেঙে টুকরো টুকরো হয়নি। উল্লেখ্য যে, মাথাপিছু আয় এবং নানানবিধ সামাজিক সূচকে বাংলাদেশ এখন ভারত এবং পাকিস্তান উভয় রাষ্ট্রের চেয়ে এগিয়ে। এখানেই নিহিত স্বাধীনতার মাহাত্ম। ফেসবুক থেকে