মঈন চৌধুরী
মানুষের ‘মন’ নামক ধরা-ছোঁয়ার বাইরে এক অস্তিত্ব আছে, আর মনের চেতন ও অচেতন ঘরে বন্দি হয়ে আছে মানুষের সত্তা, অস্তিত্ব, সংজ্ঞা, সংবেদ ইত্যাদি ভাষার এক গোলকধাঁধাসহ। ফ্রয়েড, পাভলভ, ইয়ুং, লাকাঁ প্রমুখ মনস্তাত্তি¡ক/ভাষাবিজ্ঞানী মনের কপাট খুলে আমাদের দেখিয়েছেন, ভাষা দিয়ে সৃষ্ট মানুষের মন তার যেকোনো কার্য এবং কার্যের কারণকে প্রভাবিত করে। বিশেষ করে ‘অহং এবং ‘অতি-অহং’-কে অস্বীকার করে মানুষের অদ অনেক সামাজিক আদিম প্রবৃত্তিকে জাগিয়ে তুলতে পারে।
এই আদিম প্রবৃত্তি (কামনা, বাসনা, যৌনতা ইত্যাদি) যখন কোনো আর্থসামাজিক কারণে ‘অবদমিত’ হতে বাধ্য হয়, তখন তা ভাষারূপেই অবস্থান নেয় মনের ‘অচেতন’ কোটরে। ভাষা-সৃষ্ট এই অবদমিত অচেতন একজন মানুষকে বানাতে পারে মনোরোগী, কিংবা এই অবদমিত অচেতনের ভাষা বিভিন্ন রূপক ও প্রতীক সৃষ্টির মাধ্যমে একজন মানুষকে করে তোলে স্রষ্টা। একজন সৃষ্টিশীল মানুষকে আমরা বলি কবি, গল্পকার, ঔপন্যাসিক, নাট্যকার কিংবা শিল্পী। সৃষ্টির প্রেক্ষাপটে যে অবদমিত কামনা-বাসনার যন্ত্রণা অবস্থান করে, এ সত্যকেও এখন আর আমরা অস্বীকার করা যায় না।
মনোবিশ্লেষণী সমালোচনা-পদ্ধতি সিগমুন্ড ফ্রয়েড আর জাক লাকাঁর তত্ত¡সমূহের ওপর ভিত্তি করে দাঁড়িয়েছে এবং এই সমালোচনাতত্ত¡ এখন বহুল ব্যবহৃত। লেখকের মনস্তাত্তি¡ক বিশ্লেষণসহ একটি টেক্সট বা পাঠের অন্তর্গত মনস্তাত্তি¡ক উপাদানও এই সমালোচনা-পদ্ধতি দিয়ে উদ্ধার করা যায়। এই সমালোচনায় একজন সমালোচক ইচ্ছে করলে অন্যান্য সাহিত্যতত্ত¡কে টেনে আনতে পারেন এবং অন্যান্য তত্তে¡র মনস্তাত্তি¡ক বিশ্লেষণও করা যায়। ফেসবুক থেকে
আপনার মতামত লিখুন :