আন্তর্জাতিক ডেস্ক: গণমাধ্যমের সব খাতে নিয়ন্ত্রণ দৃঢ় করার প্রচেষ্টা হিসেবে চীনা কর্তৃপক্ষ দেশটির গণমাধ্যমে বেসরকারি বিনিয়োগ বন্ধের একটি প্রস্তাব উপস্থাপন করেছে। খসড়া প্রস্তাবনা অনুযায়ী, দেশটিতে সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে ব্যক্তি মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানগুলোর সংশ্লিষ্টতা যেমন— সংবাদমাধ্যম স্থাপন অথবা পরিচালনা অথবা বিদেশি গণমাধ্যমের তৈরি সংবাদ পুনঃপ্রকাশ নিষিদ্ধ করা হবে।
গণমাধ্যম খাতের বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিরোধীদের টুঁটি চেপে ধরতে বেইজিংয়ের চলমান প্রচেষ্টা এই প্রস্তাবের মাধ্যমে পরিষ্কার হয়েছে। চীনা রাজনৈতিক ভাষ্যকার উ জুওলাই বলেন, ক্ষমতাসীন কমিউনিস্ট পার্টি সব সংবাদ এবং সংবাদভাষ্য অনুষ্ঠান নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করছে। ভিন্ন ভিন্ন সব কণ্ঠস্বর নির্মূল করছে।
দেশটির একজন নাগরিক বলেন, গণমাধ্যমের ভূমিকা সীমিত করা হলে তা জনমতকে বিকৃত করবে এবং চীনের স্থানীয় সরকার অত্যন্ত কঠোর পদক্ষেপের সাথে নিয়মের বাস্তবায়ন করতে পারে।
চীনা সংবাদমাধ্যমে ব্যক্তিগত বিনিয়োগ নিষিদ্ধ করার সর্বশেষ এই প্রস্তাব দেশটির অনলাইনে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে। অনেক বিশেষজ্ঞের ধারণা, নতুন এই নিয়ম গণমাধ্যমের স্বাধীনতা আরও পতনের দিকে নিয়ে যাবে। চীনের গণমাধ্যমে, বিশেষ করে সংবাদপত্রে সরকারি খাতের ব্যাপক বিনিয়োগ থাকে। অন্যদিকে, অনলাইন সংবাদমাধ্যম ব্যক্তিগত অথবা বিদেশি বিনিয়োগের ওপর নির্ভরশীল।
যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত চীনা বংশোদ্ভূত চেং ইঝং একটি সংবাদ ওয়েবসাইট পরিচালনা করেন। তিনি বলেন, ১৯৯০ এর দশক থেকে চীনে গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠানগুলোর আয়ের অন্যতম প্রধান উৎস সরকারের অর্থায়ন।
রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডারস (আরএসএফ) বলছে, ইন্টারনেট সেন্সরশিপ, নজরদারি এবং অপপ্রচারকে নজিরবিহীন জায়গায় নিয়ে যাচ্ছে চীন। যে কারণে দেশটি সাংবাদিকদের জন্য বিশ্বে সবচেয়ে খারাপ স্থান এবং লেখকদের ‘সবচেয়ে বড় কারাগারে’ পরিণত হয়েছে।
গত মার্চে আরএসএফের প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং ২০১৩ সালে চীনের নেতা হওয়ার পর থেকে দেশটিতে অনলাইন সেন্সরশিপ, নজরদারি এবং মিথ্যা প্রচারণাকে নজিরবিহীন জায়গায় নিয়ে গেছেন। সূত্র: এএনআই