সাদাত হোসাইন : কোনো কারণে সম্পর্কে দূরত্ব তৈরি হওয়া মাত্রই বাড়ে পরস্পরের দোষারোপের খেলা । খানিক আগের প্রিয়তম, মহত্তম, শুদ্ধ মানুষটার শরীরে অবলীলায় নিমেষেই সেঁটে যায় নোংরা, জঘন্য সব লেবেল। তার সঙ্গে ঘটে যাওয়া অসাধারণ ঘটনাগুলোরও নানা কদর্য ব্যাখ্যা তৈরি হতে থাকে। নিজেকে মনে হতে থাকে শুদ্ধ, প্রতারিত, নিঃস্বতম মানুষ। আর অন্যজন সেখানে নিঃসন্দেহেই ‘অশুদ্ধতা’র প্রতিমূর্তি। একটা দূরত্ব নিমেষেই তার সকল অনুভ‚তি, সকল কাজকে করে ফেলে প্রশ্নবিদ্ধ। কিন্তু আঙুল তোলা অভিযোগের জবাবে কেউ কেউ আঙুল তোলে না বলে তার না তোলা আঙুলের ভাঁজেও যে কোনো লুকানো গল্প থাকে না, কেউ নীরব থাকে বলেই তার নৈঃশব্দ্যে কোনো ভাষা থাকতে পারে না, তাতো নয়।
হয়তো কেউ কেউ একটুতেই অস্থির হয়ে সেই নৈঃশব্দ্য পড়ার ধৈর্য হারায়, ‘বোধ’ হারায়, ছটফটে অনুভ‚তি বা সম্পর্ক তৈরির তাড়াহুড়ার মতো। কিন্তু কেউ কেউ অপেক্ষায় থাকে সময়ের। ঠিক সময়টির। কিন্তু সঠিক সময় অবধি অপেক্ষা করার ধৈর্য সকলের থাকে না। তারা ছটফটে, তারা স্রষ্টার কাছে ধৈর্য চাইতে গিয়ে বলেন, হে স্রষ্টা আমাকে ধৈর্য দিন , এখুনি দিন, এখুনি দিন, এখুনি... ঠিক ততোটাই ধৈর্যে, যতোটা ধৈর্যে, যতোটা সময় নিয়ে তারা কাউকে ভালোবাসে, ঠিক ততোটা ধৈর্যে, ঠিক ততোটা সময়েই তারা কাউকে ঘৃণা করে, ইন্টারপ্রেট করে। কিন্তু কেউ কী জানে, সকল গল্পেরই কিছু পাঠ না করা, বা না করতে পারা অংশ থাকে, গল্প থাকে?
এই পাশের ভাবনার ঠিক উল্টোপাশেও থাকতে পারে আরো কিছু ভাবনা, গল্প, ব্যাখ্যা, দুঃখ, আক্ষেপ? কেউ কেউ হয়তো সেই আক্ষেপ, সেই দুঃখ, সেই গল্প বলার অপেক্ষায় থাকে, কারো কারো হয়তো তা শোনার অপেক্ষা থাকে না। ধৈর্য থাকে না। তারা তার আগেই বইয়ের মলাট বন্ধ করে দেন, ব্যাখ্যার কপাট আটকায়, জানালায় খিল তুলে দেয়। প্রতিহিংসা, দোষারোপ আর নিকৃষ্টতম অভিযোগের খিল। সেই দরজা আর কখনো খোলে না। শোনা হয় না সেই না বলা গল্পদের। কখনোই না। কারণ কিছু খিল এমন যে, সেগুলো যে দরোজায় লাগে, সেই দরজা আর কখনোই খোলে না, কখনোই না। Sadat Hossain-র
আপনার মতামত লিখুন :