হাসান শান্তনু: সনাতন, খ্রিষ্ট, বৌদ্ধ বা অন্য ধর্মের অনুসারীদের ধর্মীয় উৎসবে সংখ্যাগুরু মুসলমানদের পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা জানানোর চর্চা ক্রমেই কমছে। এভাবে চলতে থাকলে বছর কয়েক পর তাদেরকে শুভেচ্ছা জানানো অসাম্প্রদায়িক মানুষের সংখ্যা খুব ছোট অংকে নেমে আসতে পারে। কারণ, এ দেশ একাত্তরের চেতনায় আর ধর্মনিরপেক্ষ হয়ে উঠবে না। সমাজ, সামাজিক রীতিনীতিকে নিয়ন্ত্রণ করে রাজনীতি। ধর্মনিরপেক্ষ রাজনৈতিক চর্চা সামাজিক রীতি, ব্যক্তির চিন্তাবোধে অজস্র বছর ধরে প্রভাব বিস্তার করে আসছে।
অসাম্প্রদায়িক রাজনৈতিক অবস্থান থেকে দেশের রাজনীতি, প্রশাসন, সমাজের বিভিন্ন অংশ দূরে সরে যাচ্ছে। বড় রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে প্রকৃত ধর্মনিরপেক্ষ দল এখন আর নেই। একদল 'গরম মুসলমানদের মুখপাত্র', অন্যদল 'নরম মুসলমানদের'। কয়েকটা বামদলের নেতার কাজকারবার ধর্মপন্থি সংগঠনের নেতাদের কর্মকাণ্ড থেকে আলাদা করা যায় না। পুুঁজিবাদের নষ্ট রাজনীতির দাপটে অসাম্প্রদায়িক আদর্শে বিশ্বাসী বামদলগুলোর সাংগঠনিক কার্যক্রম কোণঠাসা।
স্বাধীনতার পর নব্বইয়ের দশকের প্রজন্মের মধ্যে অসাম্প্রদায়িকতার যে বোধ রাজনীতি, রাষ্ট্র, প্রশাসন, গণমাধ্যম, প্রগতিশীল কবি-লেখকেরা জাগাতে পেরেছিলেন, শূন্য দশকেও (২০০০ সাল শুরুর পর) যা অব্যাহত ছিলো; এরপরের দশকে তা সম্ভব হয়নি। এখনকার প্রজন্মের একটা বড় অংশ ধর্মের নামে ধর্মান্ধতার চর্চা করে আসছে। অথচ তারা শিক্ষিত, বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া।
মঙ্গলবার্তা আসুক সব জীবনে; সুখ, সমৃদ্ধি, শান্তি প্রাপ্তি হোক সবার। শুভ মহালয়া।
আপনার মতামত লিখুন :