কল্যাণ বড়ুয়া: [২] চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার সর্বদক্ষিণে অবস্থিত পুইছড়ি ইউনিয়ন। এ পুঁইছড়ি ইউনিয়নের দক্ষিণ পুইছড়ি ছমদ আলী সিকদার পাড়া এলাকার মো. শাহাব উদ্দিনের ৩ সন্তানের বড় সন্তান আজকের ক্ষুদে বিজ্ঞানী মো. আশির উদ্দিন। বয়স এখন ২২, তবে বিগত চার বছরের সাধনায় ইতোমধ্যে তৈরি করেছেন বিশ্বের বিভিন্ন দেশের উড়ড়ায়মান ৯ ধরনের বিমান।
[৩] কোনো বিশ্ববিদ্যালয় কিংবা কারো কাছে প্রশিক্ষণ নেননি তিনি। ছোট কাল থেকে আপন মনে খেলতে খেলতে এ স্বপ্নে হারিয়ে যাওয়া। ২০১৫ সালে বাড়ির কাছে অবস্থিত ঐতিহ্যবাহী পুইছড়ি ইজ্জতিয়া উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এস.এস.সি ,২০১৮ সালে মাষ্টার নজির আহমদ কলেজ থেকে এইচ.এসসি পাশ করার পর পলিটেকনিকেল ইঞ্জিনিয়ার ডিপ্লোমা কোর্সে চট্টগ্রামের বহাদ্দার হাট সামশুন্নাহার পলিটেকনিকে ভর্তি হয়ে বর্তমানে তৃতীয় বর্ষের ছাত্র হলে ও করোনার কারণে নিজ বাড়িতে কাটিয়েছে অধিকাংশ সময়।
[৪] আশির উদ্দিন বলেন, আমি ছোট কাল থেকে টেকনিক্যাল বিষয়ে কাজ নিয়ে চিন্তা করতাম। আকাশের দিকে তাকিয়ে বিমান উড়তে দেখে মনে মনে স্বপ্ন দেখতাম। আমি একটা বিমান বানাতে চাই, হে খোদা আমার স্বপ্ন সত্যিই করে দাও। এভাবে আরো কতকি! পরে পরিবারের দেওয়া বিভিন্ন সময়ের হাত খরচের টাকা দিয়ে নানা ধরনের ইলেকট্রনিক জিনিসপত্র নিয়ে আকালে উড়া নানা ধরনের বিমান নিয়ে বানানোর স্বপ্ন দেখি। তৈরি করি নষ্ট হয়ে যায়। এভাবে চলতে চলতে শতাধিক বানানো বিমান ক্রাশ হয়ে যায়।
[৫] ২০১৭ সালে প্রথম বিমান তৈরি করে স্বপ্ন গভীর হলেও তা ধীরে ধীরে বাস্তবে রুপ নেয়। বিগত বছরে আমার তৈরি বিমান আকাশে উড়াতে দেখে এলাকার জনগণ ও বন্ধু বান্ধব সকলে আমাকে আরো বেশি উৎসাহিত করে। এর পর একে একে Dream Liner 787, Us Bangla, MQ Drone, MIG 29, Helicoptur, AIR Boat, Lwine Engine, Dril Mesetion, Wather Pump বানাতে সক্ষম হই। এবং তা পরীক্ষা মূলকভাবে বাড়ির আশে পাশে চালিয়ে সফলতা পাই। এ সব বানানোর পর দেখতে আসা নানা ধরনের ব্যক্তি ও বন্ধু বান্ধবেরা বিগত সময়ে ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা করে ৫০ থেকে ৬০টি নানা ধরনের বিমান বিক্রি ও করেছি আমি।
[৬] তিনি বলেন, আমার স্বপ্ন যাত্রীবাহী বিমান বাহিনী সে বিমানে আমি নিজেও যাত্রী হয়ে ঘুরতে চাই তার জন্য প্রয়োজন সরকার ও প্রশাসনের সহযোগিতা। এ সব কাজ করার জন্য আমি কারো কাজ থেকে তেমন কোনো সহযোগিতা নিইনি। কারণ এটা ছিল আমার গবেষণা। এ কাজ আরো বৃহৎ আকারে ছড়িয়ে দিতে সরকারের সহযোগিতা কামনা করে সে।
[৭] সে আরো বলেন, বর্তমানে আমার একটা ইউটিউব রয়েছে CH RC AIR BD.& এটা থেকে আমার কিছু আয় আসে সে টাকা ও আমি এ কাজে ব্যয় করে থাকি।
[৮] আশিরের ছোট কলেজ পড়ুয়া মোবাশির উদ্দিন জানান, আমার ভাই ছোট কাল থেকে এ কাজ করতে। সে বাড়িতে বসে বসে সারাক্ষণ নানা ধরনের যন্ত্রপাতি নিয়ে সময় ব্যয় করতো। আজকে তার এ সফলতা ও আবিস্কার তার স্বপ্ন সার্থক হতে চলেছে। আমরা চাই সরকারি ভাবে সহযোগিতা পেয়ে সে আরো বেশি সফল ও এগিয়ে যাবে এটা আমাদের প্রত্যাশা।
[৯] আশিরের বাবা স্থানীয় জমিদার হিসাবে পরিচিত মো. শাহাব উদ্দিন বলেন, আমার তিন ছেলের মধ্যে আশির সবার বড়। আমার টাকা পয়সার তেমন কোনো অভাব নেই বাপ দাদার দেওয়া ধন সম্পদ নিয়ে বেশ সুখে আছি। তার উপর আমার বড় সন্তানের কর্মকাণ্ড দেখে আমি খুশি। তবে এটা যাতে আরো বেশি দেশের সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ে এবং কাজ করতে পারে তার জন্য আপনারা সকলে সহযোগিতা করবেন।
[১০] স্থানীয় সমাজকর্মী শামিম উল্লাহ আদিল বলেন, আমরা অনেকদিন থেকে আশিরের নানা ধরনের উদ্ভাবনী কথা বার্তা শুনে খুশি। আমার এলাকার সন্তান বিমান বানাতে পারা মানে আমাদের জন্য গর্বের বিষয়। আমরা চাই সরকার তার কাজে পৃষ্টপোষকতা করে কাজটা রযাতে গতিশীল হয় সে ব্যাপারে পদক্ষেপ গ্রহণ করবে। সম্পাদনা: হ্যাপি