জুয়েল আইচ: শচীনদেব বর্মণ নিজ বাড়ি কুমিল্লা যাচ্ছেন। স্টীমার চাঁদপুরে ভিড়েছে। স্টীমার ঘাটের সমস্ত কোলাহল ছাপিয়ে একটি মেয়ের কচি কন্ঠের চিৎকার তাঁর কানে এলো। তিনি একটু সামনে এগিয়ে গেলেন।
মেয়েটি নৌকা দেখলেই নদীর তীরে ছুটতে থাকে। মাঝিকে প্রাণপণে চেঁচিয়ে ডাকে,
--- ও মাঝি ভাই, আমারে আমার ভাইর কাছে লইয়া যাও।
- তোমার বাড়ি কোন গেরামে ?
--- আমি পাগল হইয়া গেছিতো। গেরামের নাম ভুইলা গেছিগো।
- গেরামের নাম কইতে না পারলে যাবা ক্যামনে ?
মাঝিরা কেউ তাকে নেয়না। কিন্তু তার চিৎকার আর ছোটাছুটি কিছুতেই থামেনা।
কেউ যখন তাকে নৌকায় নিলনা তখন মরিয়া হয়ে সে কাঁদতে কাঁদতে চিৎকার করে বলতে লাগল,
--- তাইলে আমার ভাইরে জানাইয়া দিও, আমার শ্বশুর বাড়ির মানুষগুলা ভালোনা। আমারে মাইরা ফ্যালাইবে। আমার ভাই তাড়াতাড়ি আইসা যেন আমারে লইয়া যায়।
শচীনদেব বর্মণ অস্থির হয়ে পড়লেন।
সৃষ্টি হল হৃদয় চেরা অমর গান। চোখের জল ছেড়ে স্ত্রী মীরা দেব বর্মন লিখলেন,
"কে যাস রে ভাটি গাঙ বাইয়া
আমার ভাইধনরে কইও নাইওর নিতো বইলা। .. .. .."
মাত্র এক অকটেভে বাঁধা কী অসাধারণ গান!
সঙ্গীতের বরপুত্র শচীনদেব বর্মণের ১১৫ তম জন্মবার্ষিকীতে আমার বিনীত শ্রদ্ধার্ঘ্য।
ফেসবুক থেকে