শিরোনাম
◈ ভুটানের রাজার সঙ্গে থিম্পু পৌঁছেছেন তথ্য প্রতিমন্ত্রী ◈ চট্টগ্রামে জুতার কারখানায় আগুন, নিয়ন্ত্রণে ১২ ইউনিট ◈ জিয়াও কখনো স্বাধীনতার ঘোষক দাবি করেনি, বিএনপি নেতারা যেভাবে করছে: ড. হাছান মাহমুদ ◈ আওয়ামী লীগ সবচেয়ে বড় ভারতীয় পণ্য: গয়েশ্বর ◈ সন্ত্রাসীদের ওপর ভর করে দেশ চালাচ্ছে সরকার: রিজভী ◈ ইফতার পার্টিতে আওয়ামী লীগের চরিত্রহনন করছে বিএনপি: কাদের ◈ বাংলাদেশে কারাবন্দী পোশাক শ্রমিকদের মুক্তির আহ্বান যুক্তরাষ্ট্রের ফ্যাশন লবি’র ◈ দক্ষিণ আফ্রিকায় সেতু থেকে তীর্থ যাত্রীবাহী বাস খাদে, নিহত ৪৫ ◈ ২২ এপ্রিল ঢাকায় আসছেন কাতারের আমির, ১০ চুক্তির সম্ভাবনা ◈ ইর্ন্টান চিকিৎসকদের দাবি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী’র সঙ্গে কথা বলেছি: স্বাস্থ্যমন্ত্রী

প্রকাশিত : ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ০১:৪৮ রাত
আপডেট : ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ০১:৪৯ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

আহসান হাবিব: নারী কেন হুমকি পুরুষের কাছে!

আহসান হাবিব: পুরুষের প্রধান হুমকির নাম নারী। এই যে এতো নারী নির্যাতন শরীর কিংবা অশরীরে, সে পুরুষের অসাধারণ নিরাপত্তাহীনতারই প্রকাশ। যখন একজন পুরুষ নারীকে ভালবাসে কিংবা বিয়ে করে, তখন সে তার আধিপত্য বজায় রাখার চেষ্টা করে নানা উপায়ে। প্রেমে সে করে ভালোবাসার অজুহাতে, বিয়েতে সে করে স্বামী নামক একটি পুরুষতান্ত্রিক বিভ্রম খাটিয়ে। নারী এসব উপভোগ করে, পুরুষের এসব ছটপটানি দেখে তারা সুখ পায়। নারী এসব প্রকাশ ঘটায় তাদের আচরণের রহস্যময়তায়, বাইরে গম্ভীর, দুখী দুখী ভাব, ভেতরে আনন্দের উল্লাস। এই দেখে পুরুষ ভ্যাবচাকা খেয়ে কিছুটা শান্তিও পায়। নারীর এই কথিত রহস্যময় আচরণ পুরুষ আধিপত্যেরই ফল, এটা পুরুষ বুঝতে পারে না, সে নিজেই নিজের কবর খুঁড়ে, সারাজীবন রাগে জ্বলতে থাকে।
প্রায় প্রতিটি পুরুষকে বলতে শুনি- নারীকে বুঝে ওঠা চারটি খানি কথা নয় ভাই, এমনকি মনোবিজ্ঞানের রাজা ফ্রয়েডকেও এই কোথা বলতে শুনি। আসলে কি নারী বোধগম্যতার বাইরের কিছু, পুরুষ খুব বোধগম্য? আমার কাছে বিষয়টি এমন মনে হয় না। মানুষ নারী-পুরুষ উভয়ে- একটি রহস্যময় প্রাণী। তবে পুরুষের রহস্য অল্পেই উদোম হয়ে পড়ে, বিশেষত নারীর সঙ্গে তার জৈবিক এবং স্বার্থের দিক থেকে, কেননা পুরুষ এসব করে আসছে হীন দার্শনিকতায়। সবকিছু সে নিতে চায় নিজের দখলে, নারী এবং সম্পত্তি। পুরুষ যখন এমন শারীরিক দম্ভ হয়ে উঠেছে, তখন প্রকৃতির অপরূপ সৃষ্টি এই নারী তার অস্তিত্ব রক্ষায় কি পন্থা নেবে? চাতুর্য নয়, সে নিয়েছে এক অসাধারণ বুদ্ধিবৃত্তিক পথ, প্রকৃতির দিক থেকে এবং নিজেকে রক্ষার অপূর্ব কৌশল হিসেবে এর চেয়ে শৈল্পিক আর কিছু হতে পারতো না ।

নারী কেন হুমকি পুরুষের কাছে? প্রায়ই দেখা যায় পুরুষ প্রেমে পড়ে নারীর। নারীও পড়ে। প্রেমে পড়েও পুরুষের শান্তি নাই, তার সর্বক্ষণের দুশ্চিন্তা একটাই ‘এই বুঝি নারীটি তাকে ছেড়ে গেলো’! এই ভয়ে এই অসাধারণ সম্পর্কেও সে থাকে তটস্থ। সে তার আসুরিক শক্তি প্রয়োগ করতে থাকে। নানারকম বিধিনিষেধ আরোপ করতে থাকে। এটা করা যাবে, এটা করা যাবে না। পুরুষের তখন একটাই কাজ নারীটি যেন তাকে ছাড়া আর কিছু না বুঝে। অথচ সে কিন্তু ইতোমধ্যেই অনেক কিছুর সঙ্গে লেপ্টে গেছে, এমনকি অন্য নারীর সঙ্গেও। এই যে পুরুষের দ্বিমুখী আচরণ, এটা তার গভীর নিরাপত্তাহীনতার অন্যতম ফল। অথচ নারী দেখা গেলো সে তার প্রতি দারুণ লয়াল। কিন্তু যখন সে দেখে তার পুরুষটি অন্যগামী, সে সচেতন হয়ে ওঠে। সে নিজের দিকে ফিরে তাকায়। তার চমৎকার আচরণ বদলে যায়, সে সামাজিকভাবে নিজেকে হাজির করে একজন ধরাছোঁয়ার বাইরের এক সপ্রাণ বস্তু হিসেবে। আশ্চর্য তখনও সে ভোলে না তার প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্যটি। সে তখন তার নিরাপত্তার জন্য কুশলী হয়ে ওঠে। পুরুষকে বোকা বানানোর জন্য সে বেছে নেয় রহস্যময়তার সেই ফাঁদ, পুরুষ এই ফাঁদে ধরা দেয়, কেননা তার রয়েছে মোটা বুদ্ধি, যেন তেন করে সে শুধু দখল চায়। পুরুষের এই অশৈল্পিক, অগভীর চরিত্রটি সে বুঝে ফেলে। নারী প্রেমে পড়ে, কিন্তু পড়ে না, নারী স্ত্রী হয় কিন্তু বশীভূত হয়না। নারীর এই 'না' পুরুষকে ক্ষিপ্ত করে তোলে, তার ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে, রক্তাক্ত করে। একে কী বলবেন আপনি? নারী যেন তার প্রধান প্রতিপক্ষ, প্রধান হুমকি।

অথচ এমন হওয়ার কোথা ছিল না। প্রকৃতি নারী এবং পুরুষকে নির্মাণ করেছে অসাধারণ এক কুশলতায়, একে অপরের পরিপূরক হিসেবে। পুরুষের যা নেই, নারীর তা আছে, নারীর যা নেই, পুরুষের তা আছে। অসাধারণ এক সিম্বায়সিস। কিন্তু অসুর পুরুষ সে কোথা মনে রাখেনি, সে এমন এক সংস্কৃতি গড়ে তুলেছে, যা এক কেন্দ্রিক, নারী বিদ্বেষ তার প্রধান উপাদান । ফলে নারী বেছে নিয়েছে এক অসাধারণ পথ, কবিতার মতো শব্দের সে পথ অধরা। সেই অন্ধ গুগলি পথে পুরুষ খাবি খাচ্ছে, আর মাঝে মাঝে নিজেকে মিথ্যা প্রবোধ দিচ্ছে- নারী বড় রহস্যময়। হায় পুরুষ। তোমার জন্য আমার করুণা হয়। লেখক : ঔপন্যাসিক

 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়