খালিদ আহমেদ: [২] নিরাপত্তা হুমকিতে একেবারে শেষ মুহূর্তে পুরো পাকিস্তান সফর বাতিল করেছে নিউজিল্যান্ড। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ও সাবেক অধিনায়ক ইমরান খান নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী জেসিন্ডা আর্ডার্নকে ফোন করলেও সিদ্ধান্তে পরিবর্তন আসেনি। তবে নিউজিল্যান্ড ক্রিকেট বোর্ডের (এনজেডসি) একতরফা সিদ্ধান্ত যারপরনাই হতাশ করেছে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডকে (পিসিবি)।
[৩] তিনটি ওয়ানডে ও পাঁচটি টি-টোয়েন্টি খেলতে দীর্ঘ ১৮ বছর পর পাকিস্তান সফরে এসেছিল কিউইরা। কিন্তু নিরাপত্তাজনিত কারণে কোনো ম্যাচ না খেলেই দেশে ফিরে যাচ্ছে তারা।
[৪] শুক্রবার সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে মুখোমুখি হওয়ার কথা ছিল স্বাগতিক পাকিস্তান ও সফরকারী নিউজিল্যান্ডের। রাওয়ালপিন্ডি স্টেডিয়ামে খেলা শুরু হওয়ার কথা ছিল বাংলাদেশ সময় বিকাল ৩টা ৩০ মিনিটে। কিন্তু সকাল থেকে কোনো দলই তাদের হোটেল ছাড়েনি। পিন্ডি স্টেডিয়ামে দর্শকদের প্রবেশের অনুমতিও দেওয়া হয়নি।
[৫] অনেক অনিশ্চয়তার পর এনজেডসি এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে গোটা সফর বাতিলের সিদ্ধান্ত জানায়। ততক্ষণে পেরিয়ে গিয়েছিল টসের সময়। পরে পিসিবিও সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে প্রকাশ করে হতাশা।
[৬] 'আজ সকালে নিউজিল্যান্ড ক্রিকেট বোর্ড আমাদের জানায় যে, নিরাপত্তা নিয়ে তাদেরকে সতর্কবার্তা দেওয়া হয়েছে এবং তারা একতরফাভাবে সিরিজ স্থগিতের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। পিসিবি ও পাকিস্তান সরকার সফরকারী প্রতিটি দলের জন্য নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তার ব্যবস্থা করে থাকে। আমরা নিউজিল্যান্ড ক্রিকেট বোর্ডের জন্যও একই ব্যবস্থা নিশ্চিত করেছিলাম। আমাদের প্রধানমন্ত্রী ব্যক্তিগতভাবে নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে কথা বলেন এবং তাকে জানান, আমাদের বিশ্বের অন্যতম সেরা গোয়েন্দা ব্যবস্থা রয়েছে এবং সফরকারী দলের জন্য কোনো ধরনের নিরাপত্তা শঙ্কা নেই।'
[৭] 'নিউজিল্যান্ড দলের নিরাপত্তা কর্মকর্তারা এখানে থাকাকালীন পাকিস্তান সরকারের নিরাপত্তা ব্যবস্থায় সন্তুষ্ট ছিলেন। পিসিবি নির্ধারিত সূচিতে ম্যাচগুলো আয়োজন করতে আগ্রহী ছিল। তবে শেষ মুহূর্তে (সফর) বাতিল হওয়ায় পাকিস্তান এবং বিশ্বের ক্রিকেটপ্রেমীরা হতাশ হবে।'
[৮] নিজেদের সিদ্ধান্তে অনড় থেকে নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী আর্ডার্ন স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের কাছে বলেছেন, সিরিজ বাতিলে পিসিবি ও ভক্ত-সমর্থকরা হতাশ হলেও ক্রিকেটারদের নিরাপত্তাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেন তারা।
[৯] 'যখন আমি পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছি, নিউজিল্যান্ড ক্রিকেট দলকে আতিথ্য দেওয়ার জন্য তাকে আমাদের সবার পক্ষ থেকে ধন্যবাদ জানিয়েছি। খেলা না হওয়াটা সবার জন্য কতটা হতাশাজনক হবে তা আমি জানি। কিন্তু আমরা যে সিদ্ধান্ত নিয়েছি, তা আমি সম্পূর্ণরূপে সমর্থন করি। খেলোয়াড়দের নিরাপত্তা সবকিছুর ঊর্ধ্বে।'
[১০] ২০০৯ সালে লাহোরে শ্রীলঙ্কা দলের উপর সন্ত্রাসী হামলার পর দীর্ঘ সময় পাকিস্তানের মাটিতে বন্ধ ছিল আন্তর্জাতিক ক্রিকেট। সেসময়ে তারা ঘরের মাঠের সিরিজ খেলেছে নিরপেক্ষ ভেন্যুতে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ধীরে ধীরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে শুরু করেছিল। গত বছর বাংলাদেশ দলও টেস্ট ও টি-টোয়েন্টি খেলতে পাকিস্তান সফর করে। কিন্তু নিউজিল্যান্ডের এমন আচমকা সিদ্ধান্ত নিঃসন্দেহে পিসিবির জন্য একটি বড় ধাক্কা। বিশেষ করে, বোর্ডের নতুন প্রধান রমিজ রাজার জন্য।
আপনার মতামত লিখুন :