শিরোনাম
◈ পিআর পদ্ধতি কী, কেন প্রয়োজন ও কোন দেশে এই পদ্ধতি চালু আছে?" ◈ ইসরায়েলি হামলায় ৪৩৭ ফুটবলারসহ ৭৮৫ ফিলিস্তিনি ক্রীড়াবিদের মৃত্যু ◈ পশ্চিম তীরে দখলদার ইসরায়েলিদের সাথে তাদেরই সেনা জড়ালো সংঘর্ষে! (ভিডিও) ◈ আমদানি-রপ্তানিতে এনবিআরের নতুন নিয়ম: বাধ্যতামূলক অনলাইন সিএলপি দাখিল ◈ জুলাই স্মরণে শহীদ মিনারে ছাত্রদলের মোমবাতি প্রজ্বলন (ভিডিও) ◈ জুলাই বিদ্রোহ: কোটা সংস্কার থেকে গণঅভ্যুত্থান ◈ ভারতের বাংলাদেশ সফর নিয়ে যা বললেন আমিনুল ইসলাম বুলবুল ◈ ৪৪তম বিসিএসের চূড়ান্ত ফল প্রকাশ, ক্যাডার পদে মনোনয়ন পেলেন ১৬৯০ জন ◈ ১৮ জুলাই নতুন দিবস ঘোষণা ◈ ডিসি-এসপি কমিটি ও ইভিএম বাদ, ভোটকেন্দ্র স্থাপনে নতুন নীতিমালা জারি করলো ইসি

প্রকাশিত : ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ০১:৪৮ রাত
আপডেট : ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ০১:৪৮ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

পারমিতা হিম: ৫০ বছর বয়সী একটা দেশ, অথচ সার্ভিস এখনো খুব দুঃখজনক পর্যায়ে!

পারমিতা হিম : খুব সুন্দর, দেখতে দামি জামা পরে, চুলে শ্যাম্পু করে, ফেসওয়াশ দিয়ে মুখ ধুয়ে, ভালো করে সেজেগুজে, আমার সবচেয়ে দামি ব্যাগ, ঘড়ি আর জুতা যার কোনোটাই আমার কেনা নয়-অবশ্যই নিয়ে বের হচ্ছি, বুয়া আমার দিকে হাঁ করে চেয়ে আছে। শেষে আর থাকতেই পারল না, বলেই ফেললো আপা, আপনি কই যান? কারও বিয়ে নাকি? বলে আবার চুপ মেরে গেলো। কারণ বান্ধবীর বিয়েতে আমি যে একটা সোয়েটার পরে চলে গেছিলাম সেইটা তার নিজের চোখে দেখা। যেহেতু ওই ব্যাপারটা তার একদম ভালো লাগেনি, তাই তিনি ওইটা ভুলতেও পারেন না। আমি তার ভুল ভাঙায়ে দিলাম। বললাম, সরকারি অফিসে যাবো তো, এজন্য ভালো জামা কাপড় পরে যাচ্ছি। না হলে তো পাত্তাই দেবে না। সঙ্গে একটা ফ্রি টিপস দিয়ে দিলাম কখনো ব্যাংক, পোস্ট অফিস, পাসপোর্ট অফিস কিংবা যে কোনো সার্ভিস সেক্টরের অফিসে যাওয়ার আগে আপনার সবচেয়ে দামি জামা কাপড় পরে যাবেন।

তিনি বললেন, আমি ব্যাংকে যাব কী জন্য? আমি তো পড়ালেখাই জানি না। আমি পড়ালেখা জানি, তাতে কোনো লাভ হয় না। আমি চাই যেকোনো কাজ যেটা বাংলাদেশে বৈধ, সেটা বৈধভাবে করতে। সাংবাদিক পরিচয় ব্যবহার করে, কিংবা মামা চাচার পরিচয় দিয়ে কোনো কাজ করা এইটা আমাকে একটা মানসিক নিপীড়নের মধ্যে ফেলে। কিন্তু কোনো কাজ আমাদের দেশে সোজাভাবে করা যায় না। ভার্সিটির সার্টিফিকেটের জন্য ৯ বছর ঘুরলাম। কতো হাইকোর্ট দেখলাম। তারপর রেফারেন্সে একদিনের মাথায় সার্টিফিকেট পাইছি। কোনো হল-ডিপার্টমেন্ট-রেজিস্ট্রার বিল্ডিং গমন ছাড়াই। পাসপোর্ট অফিসেও তাই। যে ই-পাসপোর্ট করাই যাবে না, টাইম স্লট খালি নেই ওয়েবসাইটে, সেটাও হয়ে গেল কিছু ছাড়াই রেফারেন্সে। আমার বান্ধবীর কথা শুনেন। সে সচিবের ছেলের বউ। সে ইন্টারন্যাশনাল ড্রাইভিং লাইসেন্স করছে বাড়ির ড্রাইভারকে টাকা দিয়ে। ড্রাইভিংয়ের ড না জানলেও সে লাইসেন্স পেয়ে গেছে, কারণটা আর নাইবা বললাম। বান্ধবী পর্যন্ত যাওয়া লাগবে না আমার নিজের বোনের পাসপোর্ট ৩ বার সংশোধন করতে হয়েছে। তার নাম সুচিস্মিতা তিথি। বারবার পাসপোর্টে নাম আসে সুস্মিতা তিথি।
নাম সংশোধন করা চাট্টিখানি ব্যাপার? তার ওপর রেফারেন্স ছাড়া।

তৃতীয়বার সংশোধনের লাইনে দাঁড়ানো আমরা দুই বোন। কাউন্টারে আমি ইচ্ছা করে তার পেছনে দাঁড়ালাম। বললাম, তুমি কথা বল। ও কাউন্টারের লোককে বললো, আমার নাম আবারও ভুল আসছে। নাম হবে সুচিস্মিতা, লেখা হয়েছে সুস্মিতা। আপনারা এতোবার একই ভুল করেন কেন? লোকটা ওকে এমন ধমক দিলো! বললো, এগুলো আবার কী নাম? মানুষের নাম সুস্মিতাই না হয়, সুচিস্মিতা আবার মানুষের নাম হয় নাকি? এগুলো আবার কী নাম? আমার ছোটবোন তো একদম ভ্যাবাচেকা খেয়ে গেলো। এবার আমি সামনে গিয়ে বললাম, আপনার নাম আকরাম কেন, মানুষের নাম মফিজই না হয়, আপনার নাম মফিজ কেন না, আকরাম আবার কেমন নাম? ‘তার নেমপ্লেটে নাম লেখা ছিলো আকরাম’। লাইনের লোক সব হাহা করে হাসতে শুরু করলো।

আমার ধমকে সে লোক লবণ পড়া কেঁচোর মতো গুটায়ে গেলো। সে হয়তো ভাবছিলো আমি ওকে ধমক দিচ্ছি মানে আমি কোনো কেউকেটা। তাই আর ঘাটায়নি। ক্ষমতা কাঠামো থেকে দূরের লোকদের কী পরিমাণ হেনস্তা তারা করে সেটা ক্ষমতাবানদের জন্য অকল্পনীয়। শুধু সরকারি কেন, যেকোনো সার্ভিস সেক্টরে কাজ করা লোকজন এখনো স্পষ্ট ভাষায় কথা বলা, কী কী কাগজ লাগবে সেটা একবারে জানানো আর কাজ শেষে থ্যাংক ইউ বলাগুলো একেবারেই শেখে নেই। একটা ৫০ বছর বয়সী দেশ, এতো ধনী, এতো রেস্টুরেন্ট, এতো বিল্ডিং, এতো গাড়ি অথচ সার্ভিস এখনো এরকম খুবই দুঃখজনক। ফেসবুক থেকে

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়