আকতার বানু আলপনা: আমার ছোটমেয়ে খুব পাখি পছন্দ করে। প্রায়ই বায়না করে, যেন ওকে একটা পাখি কিনে দিই। আমি এর আগে তিনবার পাখি কিনেছিলাম। কিছুদিন পর পাখির কষ্ট সহ্য করতে না পেরে তিনবারই ছেড়ে দিয়েছি। খাঁচার ভেতরে দিনরাত পাখির ছটফটানি দেখতে অসহ্য লাগে। তাছাড়া আমার বাড়ির চারপাশে প্রচুর গাছপালা আছে। তাই রোজ অনেক পাখি আসে আমার বাড়িতে। তারা আমার পাখির খাঁচার আশেপাশে এসে গলা ফাটিয়ে চিৎকার করে। হয়তো খাঁচার ভেতরের পাখিটার জন্য সমবেদনা জানায় বা তার মুক্তির দাবিতে জ্বালাময়ী সব স্লোগান দেয়। ‘প্রতিবাদের আলো ঘরে ঘরে জ্বালো’, ‘মুক্তি চাই মুক্তি চাই দিতে হবে দিতে হবে’, ‘আমার ভাই জেলে কেন, আলপনা ম্যাডাম জবাব চাই’, ‘আলপনা ম্যাডামের গদিতে আগুন জ্বালাও একসঙ্গে’- এরকম টাইপ।
আমার ধারণা, তার সবাই একজোট হয়ে আমাকে কঠিন কঠিন সব গালাগাল দেয়। আর তাই দেখে আমার পাখি আরও বেশি করে চিল্লায়। তাদের সে সমস্বরে চিৎকার বা গালাগালি শুনে আমার আরও খারাপ লাগে। তাই মেয়ের শত অনুরোধেও আমি ওকে পাখি কিনে দিইনি। সেবার ইন্দোনেশিয়া বেড়াতে গিয়ে পাখি দেখে আমার মেয়েরা মহাখুশি। সাদা কাকাতুয়াটা একটু বড়। আর ছটফট করছিলোও বেশি। তাই ওটাকে তারা হাতে নিতে পারেনি। তবে টিয়ার সঙ্গে আমার ছোট মেয়ে খুব ভাব জমিয়ে ফেললো। ঘাড়ে নিয়ে মহাআদর। কিন্তু একপর্যায়ে টিয়া পাখিটা আমার ছোট মেয়ের কানে সজোরে কামড়ে দিলো।
মোর্যাল অফ দ্য স্টোরি : সবাই ভালোবাসা বোঝে না। তাই ভালোবাসার প্রতিদান বা মূল্য দিতেও জানে না। এজন্যই যে মানুষটা আপনাকে সবচেয়ে বেশি ভালোবাসে, আপনি তাকেই কষ্ট দেন সবচেয়ে বেশি। এমনকি কখনো কখনো আপনি তাকে ত্যাগও করেন। যেখানে মানুষই ভালোবাসার কদর করতে জানে না, সেখানে অবুঝ, অশিক্ষিত পাখির আর দোষ কী? ফেসবুক থেকে