শওগাত আলী সাগর: রাজ সাইনি আরেকবার এমপি হতে পুরোদমে প্রচারণা শুরু করেছিলেন। এরই মধ্যে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে তিনি তার অফিসে কর্মরত কোনো কোনো নারী কর্মীর সঙ্গে ‘আপত্তিকর’, ‘যৌন ঈঙ্গিতপূর্ণ’ আচরণ করেছেন। ঘটনাটা ২০১৫ সালের, লিবারেল পার্টির কোনো একটি অনুষ্ঠানের। ‘যৌন ঈঙ্গিত’ মানে ‘যৌন হয়রানি’- অভিযোগ ওঠার সঙ্গে সঙ্গেই সবার চোখ স্থির হয়ে থাকে লিবারেল পার্টির দিকে। রাজ সাইনি অবশ্য জোড়ালোভাবে অভিযোগ অস্বীকার করেন। বেনামি সূত্রের উদ্ধৃতি দিয়ে মিডিয়া খবর প্রকাশ করে ঘটনাটি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়কে জানানো হয়েছিলো। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।
দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠার পরও প্রথমটায় জাস্টিন ট্রুডো বিষয়টি পাশ কাটিয়ে যাচ্ছিলেন। কিন্তু মিডিয়া যখন জাস্টিন ট্রুডো সত্যিই ‘ফেমিনিস্ট’ কিনা- তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে, যৌন হয়রানির বিরুদ্ধে সরকারের ‘জিরো টলারেন্স’ নিজ দলের এমপির ক্ষেত্রে কার্যকর হচ্ছে না কেন- তার উত্তর জানতে চায়- তখনই হাওয়ার গতি পাল্টে যায়। শুক্রবার টরন্টো স্টার জাস্টিন ট্রুডো সত্যিই ফেমিনিস্ট কিনা প্রশ্ন তুলেছিলো। শনিবার রাজ সাইনি তার নির্বাচনী প্রচারণা বন্ধের ঘোষণা দেন। বিবৃতিতে রাজ সাইনি তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগকে ‘পুরোপুরি মিথ্যা’ দাবি করে বলেন, নিজের, পরিবারের, দলের এবং ভোটারদের স্বার্থ বিবেচনা করে তিনি নির্বাচনী প্রচারণা বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তাঁর বিবৃতির পর পরই লিবারেল পার্টি বিবৃতি দিয়ে জানিয়ে দেয় রাজ সাইনি এখন আর তাদের প্রার্থী নন।
মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময়সীমা উত্তীর্ণ হয়ে যাওয়ায় এই আসনে লিবারেল পার্টির নতুন করে প্রার্থী দেওয়ার সুযোগ নেই। একটি আসন শূন্য রেখেই লিবারেল পার্টিকে নির্বাচন করতে হবে। রাজ সাইনিকে আইনি প্রক্রিয়ায় তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগে তিনি যে নির্দোষ, সেটি প্রমাণ করতে হবে। লক্ষ্যণীয় তার অফিসে কর্মরত যে নারী এমপির বিরুদ্ধে আপত্তিকর আচরণের অভিযোগ তুলেছেন, তাকে পুরোপুরি নিরাপত্তা দেওয়া হয়েছে এবং তার গোপনীয়তা রক্ষায় সম্পূর্ণ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। লেখক : সিনিয়ার সাংবাদিক
আপনার মতামত লিখুন :