কামরুল হাসান মামুন: দেশটির টাকা হঠাৎ করে কাগজ হয়ে যায়। কিভাবে হলো? এই হওয়ার পেছনে লেবাননের সরকার, ব্যবসায়ী ও রাজনীতিবিদদের দুর্নীতি দায়ী। তাদের বিদ্যুৎ প্রকল্প চালানোর জন্য তেল আমদানি করতে হয়। সেই তেল আমদানি করে সেই দেশেরই ব্যবসায়ী। সেই কোম্পানি যেই জাহাজে করে তেল আসে সেটিকে মাঝ সমুদ্রে আটকে আসল তেল সরিয়ে ভেজাল তেল দ্বারা প্রতিস্থাপিত করা হয়। এই ভেঁজাল তেল তাদের বিদ্যুৎ প্রকল্পে ব্যবহার করার জন্য বিদ্যুৎ কেন্দ্র বিকল হয়ে যায়। ফলে দিনে এখন ১৮ ঘন্টা লোডশেডিং সেখানে। দুর্নীতির এইটা মাত্র একটা উদাহরণ।
কিছুদিন আগে নিশ্চই শুনেছেন রাজধানী বৈরুতের পোর্টে কেমিক্যাল বিস্ফোরণের কথা? এই বিস্ফোরণে ২১৮ জন মানুষ মারা যায় এবং অসংখ্য মানুষ আহত ও বহু ঘরবাড়ি একদম ধংসাবসে পরিণত হয়। এর পেছনেও দুর্নীতি আর মিসম্যানেজেমেন্ট। বছরের পর বছর ধরে এমোনিয়াম নাইট্রেড আমদানি করে অপরিকল্পিত ও অনিরাপদ জায়গায় স্টোর করার কারণে এই প্রাণঘাতী বিস্ফোরণ। এছাড়া বেশ কয়েকমাস আগে (এই বছরের শুরুর দিকে) লেবাননের বৈরুতে ছাত্র জনতার আন্দোলন হয়েছিল। অর্থাৎ লেবাননের সমস্যাগুলো
পুঞ্জিবিত হতে হতে আজকের দেউলিয়া অবস্থা। মানুষের হাতে এখন যথেষ্ট টাকা নাই যে সন্তানদের পড়াশুনা করাবে। বাসায় পড়ার জন্য
আলো নাই। অথচ আরব দেশগুলোর মধ্যে লেবানন হতে পারতো সবচেয়ে সভ্য একটি দেশে। দেশটি হতে পারতো পারফেক্ট সেক্যুলার দেশ। দেশটি মেডিটেরিয়ান সমুদ্র ঘেঁষে তার অবস্থান। সেই জন্য মানুষগুলোও দেখতে সুন্দর হয়। লেবানিজ পঁরংরহব এর বিশ্বজুড়ে সুনাম আছে।
বাংলাদেশেও যেই পরিমান দুর্নীতি, অর্থপাচার ইত্যাদি চলছে কখন জানি হঠাৎ করে দেউলিয়া হয়ে পরে। এইসব পরিবর্তন এমন জিনিস যা আগে থেকে টের পাওয়া যাবে না। আমাদের দেশেও নিজ দেশের মানুষরাইতো দুর্নীতি করছে। মানুষকে ভেঁজাল খাওয়াচ্ছে। তেল আমদানি করে ভেজাল ঢুকাচ্ছে। আমি লেবাননের মানুষদের সাথে আমাদের রাজনীতিবিদ, ব্যবসায়ী ও আমলাদের বিপুল মিল পাই। তাই ভয় হয়। আমাদেরকেও তাই সজাগ থাকতে হবে।
এইমাত্র সংবাদ দেখলাম রেল আজকের সংবাদ শিরোনাম ১। "১১ ব্যাংকের মূলধন ঘাটতি ২৫ হাজার ৩৮৫ কোটি টাকা" ২। "হুন্দাই রোটেমের ইঞ্জিন কিনতে পরিকল্পিত কারসাজি রেলের!" ৩।"যুক্তরাষ্ট্রে ফারইস্ট ইন্স্যুরেন্সের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলামের বিশাল সাম্রাজ্য"! এইরকম আরো সহস্র দুর্নীতির সংবাদ আসে প্রতিদিনের সংবাদে। ফেসবুক থেকে
আপনার মতামত লিখুন :