সুপ্রীতি ধর: পরীমনির আয়-ব্যয়ের মাঝে সামঞ্জস্য আছে কী-নেই তা নিয়ে অনেকের মাথাব্যথা দেখছি। কথা হলো, আমার বা আমাদের মতন আমজনতার লাইফস্টাইলের সঙ্গে একজন ‘চিত্রনায়িকা’র জীবনাচরণ মেলালে তা মিলবে? তাদের যথার্থ আয়ের সঙ্গে যে ‘উপরি’ আয় থাকে, সেটা তো সর্বজনবিদিত। বিনোদন জগতে নাম ধরে ধরে বলে দেওয়া যাবে কার কী ব্যাকগ্রাউন্ড ছিলো, কার আয় কতো ছিলো বা এখন কতো, আর তারা কেমন জীবনযাপন করতো বা করে। সবই তো আমাদের দেখা এবং জানা, বিশেষ করে আমরা যারা ঢাকায় সাংবাদিকতা করেছি, আমরা তো দেখেছি তাদের অনেককেই কাছ থেকে। বিনোদন জগতে মেয়েদের ব্যবহার করা, ওপরে ওঠার জন্য বিভিন্ন টোপে ফেলা তো পুরনো গল্প। আর তা কেবল আমাদের দেশ বা দক্ষিণ এশিয়াতেই না, সারাবিশ্বেই এভাবে চলে আসছে। যারা সব মেনে নিয়ে চলতে পারে, সে টিকে যায়। কেউ ধুঁকে ধুঁকে বাঁচে। কিন্তু আমি যদি এখন বলি যে আমাদের সংবাদমাধ্যমেও এই ধারা প্রচলিত আছে?
যদি একেকজনের নাম ধরে বলতে থাকি, তখন? টেলিভিশন মাধ্যম জনপ্রিয় হওয়ার পর ‘নারীঘটিত’ ব্যাপারস্যাপারেরও বাম্পারফলন ঘটেছে। কেবলমাত্র প্রেজেন্টার হওয়ার জন্য যে দৌঁড়টা চলে ‘কচি কচি’ মেয়েগুলোর মধ্যে, তা তো নিজ চোখেই দেখেছি। যে কারণে আমাদের দেশে অভিজ্ঞ সাংবাদিকদের কমই নিউজ প্রেজেন্টার হতে পারে। আর সেখানে ‘গডফাদার’ বা ওপরে ওঠার সিঁড়িগুলোর কেউই কিন্তু ব্যবসায়ী না (চামেচুমে দু’একজনের ব্যবসা বা কোনো কোনো ক্লাবের মেম্বারশিপ আছে), বরং বার্তাকক্ষেরই প্রধানরাই। কিছু থাকে ‘ওপরওয়ালা’র সুপারিশে, তারা আবার কোণঠাসা হয়ে থাকে বার্তাকক্ষের ‘বিশেষ সুপারিশপ্রাপ্ত’দের সামনে। সেই বার্তাকক্ষ প্রধানদের গাড়িতে করে অনেক প্রেজেন্টারের বাড়িতে বা অ-বাড়িতে ফেরা হয়। সপ্তাহান্তে গাজীপুরের রিসোর্টগুলোও তো জমজমাট এসব বিষয়ে।
টেলিভিশনে কাজ করতে গিয়েই দেখেছি কতো প্রেজেন্টার কাম সাংবাদিকের বেতনের চেয়ে বেশি থাকতো তাদের বাসা ভাড়া। মাসের বাজারও আসতো কোনো এক অদৃশ্য গাড়িভর্তি করে। কতো কতো গল্প এমন! ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে থাকা ছাড়া হিসাব আমার কখনই মিলতো না। পরে মিলিয়েছিলাম একে একে দুই। সুতরাং এক চলচ্চিত্র বা বিনোদন মাধ্যম বা একা পরীমনিকে অভিযুক্ত করে লাভ নেই। ফেসবুক থেকে