সুজন কৈরী: [২] ঈদের দিন সন্ধ্যায় বাংলাদেশ পুলিশের ফেসবুক পেজে ময়মনসিংহের মুক্তাগাছার এক কিশোরী বার্তা পাঠান।
[৩] বার্তায় তিনি লেখেন, আমাকে অপহরণ করে মুক্তিপণ দাবি করা হচ্ছে। মুক্তিপণ না দিলে দৌলতদিয়া পতিতালয়ে বিক্রি করে দেওয়ার হুমকি দিচ্ছে। আমাকে বাঁচান।
[৪] বার্তা পেয়ে পুলিশের মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স উইং মুক্তাগাছা থানার ওসি মোহাম্মদ দুলাল আকন্দকে দ্রুত কিশোরীকে উদ্ধারের ব্যবস্থা নিতে নির্দেশনা দেয়। নির্দেশনা পাওয়ার পর দ্রুত অভিযান চালিয়ে ভুক্তভোগীকে উদ্ধার করা হয়। সেইসঙ্গে আটক করা কিশোরীর কথিত প্রেমিককে।
[৫] শনিবার পুলিশ সদর দপ্তরের এআইজি (মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স) মো. সোহেল জানান, বার্তা পাওয়ার পর মুক্তাগাছা থানার ওসি মোহাম্মদ দুলাল আকন্দ প্রযুক্তির সহায়তায় ও প্রাথমিক তদন্তে জানতে পারেন, মেয়েটি রাজবাড়ির পাংশা থানার একটি এলাকায় রয়েছেন। পরে থানা, জেলা, সাইবার ও মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের একাধিক ইউনিট অভিযান চালিয়ে শুক্রবার রাতে রাজবাড়ীর পাংশা থানার সরিষা ইউনিয়নের পিড়ালীপাড়া গ্রাম থেকে তাকে উদ্ধার করে। এ সময় ওই কিশোরীর কথিত প্রেমিক ও অপহরণকারী হিসেবে চিহ্নিত দুর্জয়কে আটক করে পুলিশ।
[৬] স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আজমল আল বাহার মেয়েটিকে উদ্ধারে সহযোগিতা করেছেন। উদ্ধার অভিযানসহ অপারেশনাল সার্বিক বিষয়াদি তত্ত্বাবধান করেছেন রাজবাড়ি জেলা পুলিশ সুপার এমএম শাকিলুজ্জামান এবং ময়মনসিংহ জেলা পুলিশ সুপার মোহা. আহমার উজ্জামান।
[৭] সোহেল রানা জানান, মেয়েটিকে উদ্ধারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে, কয়েক মাস আগে তার সাথে অনলাইনে দুর্জয়ের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এক পর্যায়ে বাড়িতে কাউকে না জানিয়ে দুর্জয়ের সাথে পালিয়ে যান মেয়েটি। দুর্জয় মেয়েটিকে প্রথমে তার নিজের বাড়িতে নিয়ে যান। তারপর সেখান থেকে তার নানাবাড়িতে রেখে আসেন।
[৮] মেয়েটির সাথে কথা বলে পুলিশ জানতে পেরেছে, তিনি দুর্জয়কে ভালবাসেন এবং তার সাথেই থাকতে চান। প্রাথমিকভাবে ধারনা করা হচ্ছে, দুর্জয়ের দিকের কেউ বা এলাকার কোন দুষ্টচক্র কোনোভাবে মেয়েটির পরিবারের মোবাইল নম্বর সংগ্রহ করে দুর্জয় ও মেয়েটির পরিবারের দুর্বলতার সুযোগে কিছু সুবিধা আদায় করতে চেয়েছিল। এ বিষয়ে তদন্ত করে অপরাধিদের খুঁজে বের করে দ্রুত আইনের আওতায় আনা হবে।