শিরোনাম
◈ শ্রীলঙ্কার কা‌ছে আফগা‌নিস্তান হে‌রে যাওয়ায় সুপার ফো‌রে খেলার সু‌যোগ পে‌লো বাংলাদেশ ◈ বাংলাদেশি নাগরিকত্ব নিয়ে টিউলিপের মিথ্যাচার, নতুন সংকটে স্টারমার: ডেইলি এক্সপ্রেসের রিপোর্ট ◈ শুধু অতীতের নয়, বর্তমানের দুর্নীতি থামাতেও নজর দিতে হবে: বিদ্যুৎ উপদেষ্টা ◈ বাংলাদেশ ও চীন সহযোগিতামূলক অংশীদারিত্বকে এগিয়ে নিতে একসাথে এগিয়ে যাবে : প্রধান উপদেষ্টা  ◈ সাফ চ‌্যা‌ম্পিয়নশী‌পে নেপালকে ৪-০ গো‌লে হারা‌লো বাংলাদেশ ◈ শ্রীলঙ্কার প্রতি বাংলা‌দে‌শের সমর্থন, চোখ এড়ায়নি লঙ্কান ক্রিকেট বোর্ডের ◈ আফগানিস্তান-শ্রীলংকা ম্যাচের ফল যেমন হলে লাভ বাংলাদেশের ◈ নির্বাচনী দায়িত্বে অপরাধের সাজা বাড়ছে: অধ্যাদেশের খসড়া অনুমোদন ◈ দেওয়ানি ও ফৌজদারি আদালত সম্পূর্ণভাবে পৃথক করলো সরকার ◈ কোনো রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ করার পক্ষে নয় বিএনপি : সিঙ্গাপুর থেকে দেশে ফিরে মির্জা ফখরুল

প্রকাশিত : ১৮ জুলাই, ২০২১, ১০:০৩ দুপুর
আপডেট : ১৮ জুলাই, ২০২১, ১০:০৩ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

[১] চৌগাছায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে রোগী সেবা দিচ্ছেন পাঁচশতাধিক পল্লী চিকিৎসক

র‌হিদুল খান: [২] আমরা ভালো নেই। প্রতিদিন চল্লিশ পঞ্চাশজন জ্বর-ঠান্ডার রোগি দেখছি। সকালে ফজরের নামাজ পড়ে বের হচ্ছি। আর প্রায় দিনই রাতে বাসায় ফিরছি। তারপরও করোনার এ সময়ে মানুষের পাশে থেকে সেবা দিতে পারছি এই ভালোলাগা, কথাগুলো বলছিলেন উপজেলার রামকৃষ্ণপুর গ্রামের পল্লী চিকিৎসক তৈয়বুর রহমান।

[৩] পেশায় আমি ডাক্তার। মানুষের সেবা দেয়ায় আমার কাজ। করোনার এ সময়ে তাদের এখন জীবন মরনের প্রশ্ন। সেবা না দিয়ে আমি কি করে ঘরে বসে থাকতে পারি। প্রথম দিকে খুব ভয় লাগতো। এখন আর সেভাবে ভাবিনে। আমার ব্যাপারটা উপরওয়ালার পর ছেড়ে দিয়েছি,” বলছিলেন তিনি।একই ধরনের কথা বলছিলেন রঘুনাথপুর গ্রামের গ্রাম ডাক্তার কবির উদ্দিন, যেদিন ভাবি যে আজ আর রোগি দেখতে কোথাও যাবোনা সে দিন করোনা উপসর্গ নিয়ে রোগিরা বাসায় চলে আসে। আমার ছোট দু’টো ছেলে মেয়ে আছে তাদের কথা ভেবে আবার বাড়িতেও রোগি দেখতে পারিনে। আমরা ভাই আছি চরম বিপদে।

[৪] হাসপাতাল সুত্রে জানা গেছে, এ পর্যন্ত এ উপজেলায় ছয়শত উনচল্লিশ জন রোগী করোনা পজেটিভ হয়েছেন। শুধু জুন থেকে জুলাই মা‌সের ১৬ তারিখ পর্যন্ত করোনা আক্রান্ত হয়েছেন চারশত পঁচিশজন। এর মধ্যে পৌরসভায় একশ দশ জন আর বাকিরা উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের পাড়া মহল্লার রোগী। করোনা পজেটিভ হয়ে জুন থেকে এ মাসের ১৬ তারিখ পর্যন্ত বিশ জন এবং উপসর্গ নিয়ে অর্ধশতাধিক লোক মারা গেছেন বলে জানা গেছে।

[৫] চুটারহুদা গ্রামের গ্রাম ডাক্তার জাহাঙ্গীর আলম বলেন, আমাদের এখানে তালিকা ভুক্ত ও তালিকার বাহিরে প্রায় পাঁচশরও বেশি পল্লী চিকিৎসক আছেন। আমরা সচেতন হলেও রোগিদের জন্য আর পারছিনে। রোগি আসলেই আগে বলে আমার প্রেশার মাপেন। জ্বর দেখেন। গায়ে হাত না দিলে তারা আবার অখুশি হয়। বাধ্য হয়েই তাকে স্পর্শ করতে হয়। আমাদেরতো আর পিপিই নেই। তাই হ্যান্ডস্যানিটাইজার নিয়ে বের হয়। এভাবেই চলছে।

[৬] করোনার যেহেতু বিশেষ কোন চিকিৎসা নেই ,তাই আক্রান্ত হলেই রোগিরা বুঝে না বুঝে আগে আসে আমাদের কাছে। আর এ জন্য ঝুঁকিটাও আমাদেরই বেশি থাকে, বললেন এ গ্রাম‌্য ডাক্তার”
এদিকে করোনার এ সময়ে একই অবস্থার মধ্যে প্রান্তিক মানুষের সেবা দিয়ে যাচ্ছেন উপজেলার চারটি উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র । পাশাপোল বাজার উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রের স্বাস্থ্য কর্মী কামাল হোসেন জানান, আমার এখানে প্রায় প্রতিদিন গড়ে দেড়শরও বেশি রোগি আসে। এখনতো শতকারা আশিভাগেরও বেশি রোগি করোনা উপসর্গ নিয়ে আসছে। আমরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে রোগিদের সেবা দিচ্ছি।

[৭] এখানে নেই হাউপো থার্মোমিটার । নেই পার্লস অক্সিমিটার । পর্যাপ্ত ঔষধও নেই। মানুষের সেবা কি দিয়ে দেবো। গ্রামের পাড়া মহল্লার অসচেতন মানুষ। মাস্ক পরেনা । সামাজিক দুরত্ব মানেনা। অনেকে আবার কানেও শোনেনা। এরা কাছে এসে হাঁচি কাশি দেই। পত্রিকা টিভিতে দেখছি করোনার সময়ে সরকার হাজার হাজার কোটি টাকা বরাদ্ধ দিচ্ছে। এ অবস্থায় অন্তত আমাদের বাঁচতে হলেও সরকার যেন প্রয়োজনীয় উপকরণগুলো দেয়, বললেন কামাল হোসেন।

[৮] গ্রাম ডাক্তারদের এসব অবদানের কথা স্মরণ করে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা প্রধান ডা: লুৎফুন্নাহার লাকি বলেন, তারা নি:সন্দেহে অনেক ভালো কাজ করে যাচ্ছেন। তবে এসব গ্রাম চিকিৎসকদের সাথে একটি করে পার্লস অক্সিমিটার রাখার পরামর্শ দেন তি‌নি। অক্সিজেন লেভেল নেমে গেলে ক্রিটিক্যাল রোগি যেন ধরে না রেখে দ্রুতই হাসপাতালে পাঠায়।এখনত হাসপাতালে না এসেই ফোনে আমাদের সাথে যোগাযোগ করে সেবা নিতে পারবেন । তাই চরম খারাপ অবস্থায় পড়ার আগেই রোগীরা যেন হাসপাতালে আসার জন্য রোগিদের প্রতি অনুরোধ করেন, উপজেলার স্বাস্থ্য কর্মকর্তা।

 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়