সাবেত আহমেদ:[২] গোপালগঞ্জে সরকার ঘোষিত কঠোর বিধিনিষেধেও কারণে-অকারণে বাইরে বের হচ্ছে মানুষ। কিছু দোকান-পাট বন্ধ থাকলেও আর কোনো প্রভাব পড়েনি। গলির মধ্যে অনেক দোকানদার সাঁটার অর্ধেক খোলা রেখে বেচাবিক্রি করছেন।
[৩] সেক্ষেত্রে অধিকাংশই সরকারের বিধি-ব্যবস্থা মানছেন না, স্বাস্থ্যবিধি সম্পর্কেও তারা উদাসীন। দূরপাল্লার যান চলাচল বন্ধ থাকলেও ব্যক্তিগত যানবাহনে, ব্যাটারীচালিত ইজিবাইক ও মাহেন্দ্রগুলোতে মানুষের চলাচল অব্যাহত রয়েছে। সেখানে মানা হচ্ছে না স্বাস্থ্যবিধি। এদিকে জেলায় করোনা সংক্রমণ আনুপাতিক হারে বেড়েই চলেছে, কোনো কিছুতেই সংক্রমণ কমানো যাচ্ছে না।
[৪] সিভিল সার্জন অফিসের তথ্যমতে, জেলায় গতমাসের (জুন) প্রথম ১০ দিনে করোনা সংক্রমিত রোগীর সংখ্যা ছিল যেখানে ১৬৯ জন, এমাসের প্রথম ৮ দিনে রোগীর সংখ্যা ৭২৪ জন। সংক্রমণের হারও যেখানে ছিল ১৮ ভাগ, তা এখন পৌছেছে ৫৩ ভাগে। দ্বিতীয় ১০ দিনে ছিল ৩১৪ জন শনাক্তের হার ছিল ৩৬ ভাগ, শেষ ১০ দিনে ছিল ৭১২ জন শনাক্ত হার ছিল ৪০ ভাগ। গতমাসের ১৩ তারিখ থেকে করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে ২৩ জন।
[৫] এ পর্যন্ত জেলায় মারাগেছে ৬৩ জন। এছাড়া করোনার নমুনা পরিক্ষা করা হয়েছে মোট ২৭৮৩৮ জনের এরমধ্যে শনাক্ত হয়েছে মোট ৫৭৭৩ জন। সুস্থ হয়েছে মোট ৪৫৪০ জন।এরআগে গত মাসের (৪ জুন) প্রথম সপ্তাহে সদর উপজেলার তেলিভিটা গ্রামের এক মটর মেকানিক করোনার উপসর্গ নিয়ে মারা যায়। তারপর ওই বাড়ির আরোও তিন জনের করোনা শনাক্ত হয়। পরে একই গ্রামের আরোও ৫০ জনের শরীরে করোনা ভাইরাস শনাক্ত হয়।
[৬] এসময় ওই এলাকা থেকে আইইডিসিআর-এ ৭ জনের নমুনা পরিক্ষায় ৭ জনের শরীরেই ইন্ডিয়ান ধরণ ডেলটার অস্থিত্ব পাওয়া যায়। সেসময় সংক্রমণ কমাতে ওই এলাকাসহ আশপাশের ২ টি ইউনিয়নে লকডাউন ঘোষণা করে সদর উপজেলা প্রশাসন। এরপরও সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় জেলায় করোনা হটস্পট হিসেবে সদর পৌরসভা, পাশ্ববর্তী লতিফপুর ইউনিয়ন, কাশিয়ানী উপজেলার সদর ইউনিয়ন ও মুকসুদপুর পৌরসভাকে লকডাউন ঘোষণা করে জেলা প্রশাসন কিন্তু এরপরও সংক্রমণ কমানো যায়নি।
[৭] পরে ঢাকা বিভাগের সাত জেলায় ৯ দিনের লকডাউন ঘোষণা করে সরকার। ফের ১ জুলাই থেকে সারাদেশে সাতদিনের কঠোর বিধিনিষেধ ঘোষণা করে সরকার। এসময় জেলা প্রশাসনকে সহযোগিতার জন্য পুলিশের পাশাপাশি মাঠে নামে সেনাবাহিনী, বিজিবি, র্যাব, নৌবাহিনী, আনসার, ব্যাটালিয়ন ও গ্রাম পুলিশ। স্বাস্থ্যবিধি না মানায় অনেককেই করেছেন জেল-জরিমানা এতেও কমেনি করোনার সংক্রমণ।
[৮] গোপালগঞ্জ সিভিল সার্জন ডা. সুজাত আহমেদ করোনার সংক্রমণ রোধে কঠোর বিধিনিষেধে সবাইকে ঘরে থাকার জন্য অনুরোধ জানিয়েছেন। পাশাপাশি যারা জরুরি প্রয়োজনে বাইরে বের হচ্ছে অবশ্যই স্বাস্থ্যবিধি মেনে বাইরে বের হবে এবং মুখে মাস্ক পরতে পরামর্শ দিয়েছেন।