শওগাত আলী সাগর: [১] লকডাউনে যে মানুষগুলো ‘তামাশা’ দেখতে বাইরে এসে ভিড় করে, আমি তাদের ওপর একদম ক্ষুব্ধ হই না। আমি বরং আমার নিজের দিকে তাকিয়ে ভাবতে থাকি, একটা দেশের শিক্ষিত জনগোষ্ঠীর একজন হয়ে আমি আমার দায়িত্বটুকু যথাযথভাবে পালন করেছিলাম কিনা। লকডাউনে ‘তামাশা’ খুঁজতে যাওয়া মানুষগুলোই তো আসলে আমাদের সংস্কৃতির, শিক্ষার, সচেতনতার মাপকাঠি। সেখানেই ‘আমরা কে কতোটা ভূমিকা রেখেছি’, সেই প্রশ্নের মুখোমুখি হওয়ার প্রশ্ন আসে। আমরা মানে শিক্ষিত মানুষেরা।
[২] লকডাউন কার্যকর রাখতে প্রশাসন কাজ করে যাচ্ছে, তাদের সহযোগিতা দেওয়া, সমর্থন দেওয়া প্রতিটি নাগরিকের দায়িত্ব। একইসঙ্গে মানুষকে সচেতন করার উদ্যোগও নিতে হবে। কেন তাদের ঘরে থাকতে বলা হচ্ছে, সহজ ভাষায় এই কথাটা বারবার প্রচারের ব্যবস্থা করতে হবে। জনস্বার্থে টেলিভিশন চ্যানেলগুলো এই কাজটি করতে পারে। একেবারে সহজ ভাষায়, মানুষের নিজের ভাষায় কেনÑ তাদের ঘরে থাকতে বলা হচ্ছে, তার প্রচার চালাতে পারে চ্যানেলগুলো। একদিকে প্রশাসনের লকডাউন কার্যকর করার প্রশাসনিক উদ্যোগ, পাশাপাশি মিডিয়ায় সচেতনতামূলক প্রচার। এভাবে চললে নিশ্চয়ই একটা ইতিবাচক ফল পাওয়া যাবে।
[৩] প্রধানমন্ত্রী জাতীয় সংসদে বলেছেন, গত ঈদে মানুষ গ্রামে না গেলে এখন এতোটা খারাপ অবস্থা হতো না। প্রধানমন্ত্রীর কথার সূত্র ধরেই বলি, এবারের ঈদে গরুর হাট না বসালে, ঈদে গ্রামে না ছুটলে সামনের পরিস্থিতি ভালো হওয়ার সুযোগ তৈরি হবে। নইলে পরিস্থিতি খারাপ হতে বাধ্য। এই বিবেচনাটি মাথায় রাখতে সবাইকে অনুরোধ করি। দেশে যুদ্ধ লাগলে, বড় ধরনের প্রাকৃতিক বিপর্যয় ঘটলে কোরবানির হাট বসতো? আপনারা ঈদ করতে যেতে পারতেন? তাহলে এবার কোরবানির হাট না বসলে, জমজমাট ঈদ উৎসব না হলে কী এমন ক্ষতি!
[৪] আইনশৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনীর প্রতি একটা অনুরোধ রাখিÑ আপনারা অনেক গুরুদায়িত্ব পালন করছেন, কঠিন একটা কাজ করছেন। আপনাদের ধন্যবাদ জানাই। দয়া করে চায়ের কেটলি, আর কেরাম বোর্ডের দিকে নজর দিয়েন না। লেখক : কানাডা প্রবাসী সাংবাদিক।
আপনার মতামত লিখুন :