শিরোনাম
◈ দক্ষিণ লেবাননে ইসরায়েল ফসফসরাস বোমা হামলা ◈ ঝালকাঠিতে ট্রাকচাপায় নিহতদের ৬ জন একই পরিবারের ◈ গাজীপুরের টঙ্গি বাজারে আলুর গুদামে আগুন ◈ রাজনৈতিক বিশ্লেষক মনোয়ারুল হক মারা গেছেন ◈ ভারতের পররাষ্ট্র সচিব শনিবার ঢাকা আসছেন ◈ দুই এক পশলা বৃষ্টি হলেও তাপদাহ আরো তীব্র হতে পারে  ◈ এথেন্স সম্মেলন: দায়িত্বশীল ও টেকসই সমুদ্র ব্যবস্থাপনায় সম্মিলিত প্রয়াসের আহ্বান পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ◈ কেএনএফ চাইলে আবারও আলোচনায় বসার সুযোগ দেওয়া হবে: র‌্যাবের ডিজি ◈ ওবায়দুল কাদেরের হৃদয় দুর্বল, তাই বেশি অবান্তর কথা বলেন: রিজভী ◈ মধ্যপ্রাচ্যের পরিস্থিতি বিবেচনায় প্রস্তুতি নেওয়ার নির্দেশ দিলেন প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশিত : ০৩ জুলাই, ২০২১, ১২:৫৬ রাত
আপডেট : ০৩ জুলাই, ২০২১, ১২:৫৬ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

জান্নাতুন নাঈম প্রীতি: গুরুত্বপূর্ণ কাজ করা গুরুত্বপূর্ণ মানুষদের যে প্রতিষ্ঠান এখনো সম্মান জানাতে শেখেনি তাকে নিয়ে আবেগে গদগদ হয়ে লাভ নেই

জান্নাতুন নাঈম প্রীতি: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় একশো বছরে পা রাখায় গর্বের কিছু নেই, যা আছে তা হলো এই বিশ্ববিদ্যালয় যাদের জন্য এতো সুনাম পেয়েছে তাদের কাউকেই সম্মান করেনি। এই গ্রহের সবচেয়ে বুদ্ধিমান মানুষ আইন্সটাইনের আগে যার নাম দিয়ে লেখা হয়েছে- ‘বোস আইন্সটাইন স্ট্যাটিস্টিক্স’, তার একটা ভাস্কর্য ভালো, একটা ভালো মানের ল্যাব এই ভার্সিটিতে নেই। ইনফ্যাক্ট ওই স্ট্যাটিস্টিক্সে আইন্সটাইনের একমাত্র কৃতিত্ব হলো সেটা জার্মানে অনুবাদ করা। অথচ ঢাবিতে নামমাত্র বোসের নামে যে সেন্টার আছে তার নিজস্ব ভবন, গবেষক কিচ্ছু নেই। কিন্তু পাশের দেশেই আছে সত্যেন বোসের নামে বিশ্বমানের ল্যাব, এমনকি বোসের কাজের উপর ভিত্তি করে প্রায় ডজনখানেক বিজ্ঞানী নোবেল প্রাইজ পেয়েছেন। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের আরেক ছাত্র বাংলাদেশের একমাত্র নোবেল লরিয়েট ডক্টর ইউনূসের নামে মেলবর্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের এশিয়ান রিসার্চ সেন্টারের কর্নার আছে, বহুদেশে অন্যদেশের রাষ্ট্রনেতাদের চেয়ে বেশি সম্মান পান তিনি, কিন্তু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কী আছে কিছু তার জন্য? উত্তর হচ্ছে- নেই! যেরকম নেই অ্যাস্ট্রো ফিজিক্সের কিংবদন্তি মেঘনাদ সাহা, বাংলার হুমায়ুন আজাদ, আখতারুজ্জামান ইলিয়াস, মুনির চৌধুরী কিংবা কেমিস্ট্রি ডিপার্টমেন্টে থেকেও শক্তিমান লেখক হিসেবে বাংলা সাহিত্যে জায়গা করে নেয়া হুমায়ূন আহমেদের জন্যও । আরও শখানেক মানুষের নাম বলা যাবে যাদের জন্য এই বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম ছড়িয়েছে, কিন্তু তাদের জন্য এই বিশ্ববিদ্যালয়ে কিছুই হয়নি। বাংলাদেশের বহু দুর্নীতিবাজেরও বিদ্যাপীঠ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। সেরকম এও সত্য যে এইদেশের সমস্ত সংগ্রামে বিপদে প্রথম অস্ত্রহাতে রুখে দাঁড়াবার ক্রেডিটও এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের। শেখ মুজিবুর রহমান, সৈয়দ নজরুল ইসলাম ও বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দিন আহমদও এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র।

অথচ এখনো এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এখন চা-চপ-সিঙ্গারা নিয়ে মন্তব্য করার ক্ষেত্রে ভয়ে থাকে। কেউ প্রশ্ন করে না বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় একটা খুন হইলেও কি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হবে- এই মর্মে প্রতিবাদ করবো না? এই দায় আসলে কার? বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করে যদি বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে কেউ গর্ব বা অহংকারে ভোগেন তাহলে সেই গর্ব আর অহংকারের দোহাই- বিশ্ববিদ্যালয় আপনাকে বিশ্বমানের মানুষ বানাতে পারেনি। বানিয়েছে একজন হীনমন্যতায় ভোগা মানুষ, যার জীবনে একটা প্রতিষ্ঠানই গুরুত্বপূর্ণ, সেই প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্য না। যে কোনো জ্ঞানী মানুষ যেকোনো প্রতিষ্ঠান থেকে গুরুত্বপূর্ণ। সেই মানুষের কাজ আবার তার চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ। যেমন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এখন ফিরে এলে তাকে বাংলাদেশ ও ভারতের জাতীয় সঙ্গীত শুনে ওঠে দাঁড়াতে হতো, ল্যুভ মিউজিয়ামে ভিঞ্চিকে সাধারণ দর্শকদের সঙ্গে লাইন দিতে হতো মোনালিসা দেখতে, একটা রুটির টাকা জোগাড় করতে না পারা ভ্যানগখ নিজের একটা পেইন্টিং কেনার ক্ষমতা রাখতেন না। গুরুত্বপূর্ণ কাজ করা গুরুত্বপূর্ণ মানুষদের যে প্রতিষ্ঠান এখনো সম্মান জানাতে শেখে নাই তাকে নিয়ে আবেগে গদগদ হয়ে লাভ নেই! এই কথা বাংলাদেশের অন্যান্য সকল পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষেত্রেও সত্য, সত্য আমার নিজের বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষেত্রেও। যারা যোগ্য মানুষকে সম্মান করতে শেখেনি, তাদের মূল্যায়নে ব্যর্থ, তারা কী সম্মান ডিজার্ভ করে? ফেসবুক থেকে

 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়