ফিরোজ আহমেদ: একটা খবরে পড়লাম, সাতক্ষীরায় গত ২৬ দিনে কোভিডে ২৬ জন মৃত্যুবরণ করেছেন, তার বহুগুন ১০১ জনমারা গেছেন কোভিডের লক্ষণ নিয়ে। অর্থাৎ আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃত মৃত্যুর চাইতে অনানুষ্ঠানিক মৃত্যুর সংখ্যা বেশি। কম পরীক্ষার এই সুবিধা, নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে মানুষ মারা শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন, করোনায় না।
বাংলাদেশের জন্য যেকোনো মহামারী প্রতিরোধ পরিকল্পনার সব চাইতে বড় প্রতিকূলতা হলো বাস্তব তথ্যটাই আমরা কখনো জানতে পারি না। আমলাতান্ত্রিক খেয়ালখুশি, দুর্নীতি, অপচয় এবং বেপরোয়া ভাব চলবে ঘটনার প্রথমাংশে, ঘোষণা করা হবে কোভিড বিজয় প্রায় সম্পন্ন। আর শেষাংশে আতঙ্কের পরিবেশ লকডাউন-শাটডাউন ইত্যাদি।
প্রশ্নটা খুব সঙ্গত, আনুষ্ঠানিক মৃত্যু কিংবা হাসপাতালে ভর্তির সংখ্যা যদি এখনও ভারতের চরম পরিস্থিতির সময়ের লক্ষ্ণৌ বা দিল্লীর সাথে তুলনীয় না হয়, আতঙ্কিত কেন আপনারা? করোনার বিস্তার যদি বা ঠেকাতে এই শাটডাউন, পরীক্ষা কেন এতো কম হচ্ছে? খাবার কেন দিচ্ছেন না গরিব মানুষদের প্রত্যেককে? টিকার কী করলেন? খুলনা বা রাজশাহীর মতো বিভাগীয় সদরেই পর্যাপ্ত আইসিইউ সুবিধা নেই, সাতক্ষীরার মতো জেলা শহরগুলোর কী দশা, সৃষ্টিকর্তাই জানেন, কিন্তু আমলারা জানেন না।
কোনো তথ্য, কোনো গবেষণা, কোনো সমীক্ষা এবং সঙ্গতকারণেই কোনো পরিকল্পনা ছাড়াই একদল ভীতু, মূর্খ, অপচয়কারী, দুর্নীতিপরায়ন লোকের হাতে মহামারী কালটি আমরা অতিক্রম করছি, যাদের কোনো বিষয়ে বিশেষজ্ঞজ্ঞান নেই এবং যারা বিশেষজ্ঞদের আদতে অবজ্ঞাই করেন। জ্ঞান না, এদের সাহস আসে বন্দুকের জোরে; ফলে সুবিধাজনক পরিস্থিতি সুবিধাজনক হলেই এরা ধরাকে সরা জ্ঞান করেন এবং সামান্য অসুবিধাজনক পরিস্থিতিতে দিকভ্রান্ত আতঙ্কিত তৎপরতা দেশবাসীর ওপর চাপিয়ে দেন। লেখক : রাজনীতিবিদ
আপনার মতামত লিখুন :