স্পোর্টস ডেস্ক: [২] বেশ সম্ভাবনাময় ক্রিকেটার ছিলেন তিনি। ১৯৯৯ সালে ঢাকায় এশিয়ান টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ৫ উইকেট নিয়ে নজর কাড়েন। পাকিস্তানি অফ স্পিনারের ঝুলিতে আছে শচীন টেন্ডুলকার, বিরেন্দ্রর শেবাগের মতো ব্যাটারের উইকেটও। অথচ সেই আরশাদ খানই এখন খ্যাতির দুনিয়া থেকে অনেক দূরে। জীবিকার তাগিদে অস্ট্রেলিয়ায় ট্যাক্সি চালাচ্ছেন তিনি।
[৩] বেশ লম্বা চওড়া ছিলেন আরশাদ খান। তাই দেখে মনে হতো না তিনি একজন অফ স্পিনার। তারওপর পেশোয়ার থেকে উঠে এসেছেন। যে শহর পেসারদের স্বর্গরাজ্য হিসেবে পরিচিত। এরপরও আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ঠিকই দ্রুত গতিতে উত্থান ঘটেছিল তার।
[৪] ২০০০ সালে ভারত-পাকিস্তান সিরিজে একাই কাঁপিয়ে দিয়েছিলেন তিনি। শচিন তো বটেই, বিধ্বংসী শেবাগকেও হার মানতে হয়েছিল আরশাদের স্পিনের সামনে। শচিন-শেবাগদের ঘূর্ণি বলে বিধ্বস্ত করা সেই তারকা স্পিনারই এখন সিডনির রাস্তায় ট্যাক্সি চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করছেন।
[৫] কিছুদিন আগেই আরশাদের ঘটনা প্রকাশ্যে আসে সিডনিতে এক ক্রিকেট ভক্তের ট্যাক্সি চড়ার সময়। তিনিই হঠাৎ আবিষ্কার করেন, যার ট্যাক্সিতে তিনি চড়ে বসেছেন, তিনিই সেই বিখ্যাত আরশাদ খান।
[৬] পরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পুঙ্খানুপুঙ্খ সেই ঘটনার বিবরণ দিয়ে তিনি লেখেন, যে ড্রাইভারের গাড়িতে আমরা চড়েছিলাম, কথায় কথায় জানতে পারি, সে পাকিস্তানি। সিডনিতে থাকেন বর্তমানে। ইন্ডিয়ান ক্রিকেট লিগে খেলার সময় হায়দরাবাদে বেশ কয়েকবার লাহোর বাদশা দলের হয়ে খেলতে আসার কথা বলে। কৌতূহলবশত তার পুরো নাম জিজ্ঞাসা করার পরেই তার মুখ পুরোপুরি দেখতে পাই। তখনই বুঝতে পারি, কেন তার মুখ এত চেনা চেনা লাগছিল। তারপর আমি করমর্দন করে ট্যাক্সি থেকে নেমে পড়ি।
[৭] ২০০৫ সালে পাকিস্তানের ভারত সফরের সময় খ্যাতির তুঙ্গে পৌঁছান আরশাদ খান। দ্বিপাক্ষিক সেই সিরিজে একের পর এক তারকাকে আউট করেন তিনি। পেশোয়ারের এই তারকা ভারতের বিপক্ষে পাঁচ ম্যাচ খেলেই ৭ উইকেট তুলে নিয়েছিলেন। তার শিকারের তালিকায় রয়েছেন- মহেন্দ্র সিং ধোনি, যুবরাজ সিং, মোহাম্মদ কাইফ, হরভজন সিংয়ের মত বড় বড় নাম-ও।
[৮] ১৯৯৩ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ওয়ানডে ও ১৯৯৭ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টেস্ট অভিষেক হয় আরশাদের। শেষ পর্যন্ত ৯ টেস্ট ও ৫৮ ওয়ানডেতে থামে তার আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার। দুই ফরম্যাটে যথাক্রমে ৩২ ও ৫৬ উইকেট তার।
[৯] টেস্ট ও ওয়ানডে মিলে ৫ উইকেট পেয়েছিলেন একবারই, ঢাকায় এশিয়ান টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে। যদিও ইজাজ আহমেদ ও ইনজামাম-উল-হকের ডাবল সেঞ্চুরিতে ঢাকা পড়ে যায় তার পারফম্যান্স। ম্যাচটা ইনিংস ও ১৭৫ রানে জিতেছিল পাকিস্তান।
[১০] আরশাদ এক পর্যায়ে অধুনালুপ্ত আইসিএল (ইন্ডিয়ান ক্রিকেট লিগ) খেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। সেটাই তার ক্রিকেট ক্যারিয়ারের দ্রুত পতন ঘটিয়ে দেয়। ২০১১ সালে সবশেষ লিস্ট ‘এ’ ম্যাচ লেখেন তিনি। - জি নিউজ