মিনহাজুল আবেদীন: [২] প্রবীণদের নিগ্রহের কাহিনী শুধু দরিদ্র পরিবারে নয়, সমাজের উচ্চবিত্ত পরিবারেও অহরহ শোনা যাচ্ছে। জীবিকার তাগিদে বহু প্রবীণ বাধ্য হয়ে কাজ করেন। সমাজসেবা অধিদপ্তরের তথ্য মতে, দেশে বয়স্ক ভাতা পায় প্রায় ৫০ লাখের বেশি মানুষ। প্রতিমাসে একজন ব্যক্তিকে ৫০০ টাকা ভাতা দেয়া হয়।
[৪] সরকারি হিসেব মতে, দেশে বর্তমানে প্রায় এক কোটি ৩০ লাখ প্রবীণ জনগোষ্ঠী আছে। যাদের বয়স সত্তরের বেশি। সমাজ বিশ্লেষকদের মতে, বিশ্বজুড়ে অতি প্রবীণ মানুষের সংখ্যা বাড়ছে। অর্থাৎ যাদের বয়স ৮০ বছরের বেশি। দেশেও এ সংখ্যা বাড়ছে।
[৬] মঙ্গলবার বিবিসি বাংলায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকল্যাণ বিভাগের অধ্যাপক এএসএম আতিকুর রহমান বলেন, বার্ধক্য এমন একটা বিষয় যেটা কেউ বুঝতে চায় না, জানতে চায় না, শুনতে চায় না। প্রবীণদের কষ্টের কোনও সীমা নেই, বিশেষ করে নারী প্রবীণদের ক্ষেত্রে এটি আরো বেশি।
[৭] তিনি বলেন, দেশে সব শ্রেণির মানুষের মধ্যেই প্রবীণদের অবজ্ঞা এবং নিগ্রহ করার বিষয়টি বিরাজমান। শহুরে উচ্চবিত্ত সমাজে প্রবীণদের অবহেলা এবং বিচ্ছিন্ন করে দেবার প্রবণতা দেখা যায়। তারা মানসিকভাবে বিপর্যস্ত থাকে বেশি। তবে মধ্যবিত্ত এবং নিম্নবিত্তের মধ্যে অবহেলার ধরণ ভিন্নরকম। মধ্যবিত্ত পরিবারে একজন প্রবীণকে দেখাশুনা এবং সেবা করার জন্য যে ধরনের জনবল এবং আর্থিক সামর্থ্য দরকার সেটি অনেকের থাকে না। ফলে ইচ্ছে কিংবা অনিচ্ছা সত্ত্বেও পরিবারের কাছে অবহেলার শিকার হচ্ছেন প্রবীণরা।
[৮] আইনে বলা হয়েছে, কোনও সন্তান তার পিতা-মাতাকে তাদের ইচ্ছার বিরুদ্ধে কোনও বৃদ্ধ নিবাস বা অন্য কোথাও আলাদাভাবে বসবাস করতে বাধ্য করতে পারবে না। পিতা-মাতার জন্য ভরন-পোষণ এবং চিকিৎসা ব্যয় মেটানোর বাধ্যবাধকতা রয়েছে এই আইনে। যদি সন্তানরা এসব দায়িত্ব পালন না করে তাহলে সেটি অপরাধ হিসেবে বিবেচনা করা হবে। সেক্ষেত্রে এক লাখ টাকা জরিমানা অথবা তিনমাসের কারাদন্ডের বিধান রাখা হয়েছে।
[৯] এদিকে আতিকুর রহমান বলেন, এই আইনটি কোনও শাস্তিমূলক আইন নয়, এটা আপোষমূলক আইন। সেজন্য এখানে আপোষ এবং সমঝোতা করার বিধান রাখা হয়েছে। ফলে এর ভোগান্তি বাড়ছে। সম্পাদনা: মহসীন