শওগাত আলী সাগর: বাংলাদেশের পাসপোর্ট থেকে ‘ইসরাইল ব্যতিত’ অংশটুকু সরিয়ে ফেলা একটি গতিশীল এবং প্রাজ্ঞ সিদ্ধান্ত। বিশ্বায়নের এই যুগে রাষ্ট্রীয় দলিলে আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো দেশের প্রতি বৈরিতার ঘোষণা দেওয়া কোনোভাবেই সুবিবেচনাপ্রসূত কাজ নয়। বিশ্ব রাজনীতিতে বাংলাদেশ এবং দেশের সিংহভাগ মানুষের অবস্থান প্যালেস্টাইনের পক্ষে। তার মানে হচ্ছে- ইসরাইলের বিপক্ষে। পাসপোর্ট থেকে ‘ইসরাইল ব্যতিত’ অংশটুকু বাদ দিলেই সেই অবস্থানের পরিবর্তন ঘটে না।
কেউ কেউ বলার চেষ্টা করেন- পাসপোর্ট থেকে ইসরাইল ব্যতিত’ অংশটুকু বাদ দেয়ার সিদ্ধান্ত এই সময়ে না হলে ভালো হতো। কিন্তু পাসপোর্টের মতো গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় দলিলে কোনো পরিবর্তন কি এক মুহূর্তের সিদ্ধান্তেই হয়ে যায়! আমার তো মনে হয়, সরকারের নীতিনির্ধারক মহলে পাসপোর্টের এই পরিবর্তনের এই আলোচনাটা হয়েছে আরও আগে, সেটি কার্যকর হচ্ছে এখন, কিংবা আমরা জেনেছি দেরিতে। মধ্যপ্রাচ্যের মুসলিম দেশগুলো যখন ইসরাইলের সঙ্গে সম্পর্কোন্নয়নের সিদ্ধান্ত নেয়, বাংলাদেশে সেই সময়েই এ নিয়ে আলোচনা হয়েছে বলে আমার ধারণা। মধ্যপ্রাচ্যের মুসলিম দেশগুলো দ্বারা বাংলাদেশ প্রভাবিত হয়ে থাকতে পারে বলেও আমার মনে হয়।
বাংলাদেশের পাসপোর্টের এই পরিবর্তনকে আমি প্রাজ্ঞ সিদ্ধান্ত হিসেবে সমর্থন করি। এখন দরকার ইসরাইলের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া। জ্ঞান-বিজ্ঞানে উন্নত একটি দেশের সঙ্গে সম্পর্কহীন থাকাটা ভালো কিছু বলে আমার কাছে মনে হয় না। ইসরাইলের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করেও প্যালেস্টাইনিদের প্রতি, তাদের ন্যায্য দাবির প্রতি সমর্থন দেওয়া সম্ভব। যারা প্রবলভাবে ভারতের বিরোধিতা করেন কিংবা পাকিস্তানের বিরোধিতা করেন, তারাও এই দুটি দেশে ভ্রমণে যান। বৈধপথে কেউ ইসরাইল ভ্রমণে যেতে চাইলে তাতেও দোষের কিছু নেই। লেখক : প্রবাসী সাংবাদিক