শিরোনাম

প্রকাশিত : ২৮ মে, ২০২১, ০৩:২৫ দুপুর
আপডেট : ২৮ মে, ২০২১, ০৩:২৬ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

আলমগীর মোহাম্মদ: আসহাব উদ্দীন আহমদ স্মরণে

আলমগীর মোহাম্মদ: প্রফেসর আসহাব উদ্দীন আহমদের জন্ম চট্টগ্রাম জেলার সর্বদক্ষিণের উপজেলা বাঁশখালী থানার সাধনপুর গ্রামে। আজীবন শিক্ষাসেবী এই মহৎ ব্যক্তির আজ ২৭ তম মৃত্যুবার্ষিক। ১৯৯৪ সালের ২৮ শে মে তিনি হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে পরলোকগত হন।

অধ্যাপক আসহাব উদ্দীন আহমদ ইংরেজি সাহিত্যের ছাত্র ছিলেন। ১৯৩৯ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগ থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করে শিক্ষকতা নিয়োজিত হন। চট্টগ্রাম কলেজ ও কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজসহ বিভিন্ন কলেজে প্রায় চৌদ্দ বছর অধ্যাপনা করে সক্রিয় রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন তিনি। তিনি বামপন্থী রাজনীতি করতেন এবং কৃষক মুক্তির আন্দোলনে কার্যকরী ভূমিকা পালন করেন।

১৯৫২ সালে কুমিল্লায় ভাষা আন্দোলন সংঘটিত করার ক্ষেত্রে আসহাবউদ্দীন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। সে সময়ের সাংস্কৃতিক আন্দোলনেও তিনি গুরত্বপূর্ণ অবদান রাখেন । ১৯৫৪ সালে তিনি যুক্তফ্রন্টের পক্ষে প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন এবং কয়েক মাসের মধ্যেই তিনি সরকারের রোষানলে পড়েন এবং তাঁকে আটক করা হয়। কট্টর বামপন্থি রাজনীতির কারণে তাঁকে আরও পনেরো বছর আত্মগোপন করে থাকতে হয়। স্পষ্টবাদিতা, তীক্ষ্ম রসবোধ ও চাঁছাছোলা সমালোচনার জন্য তিনি সাহিত্য সমাজে সমধিক পরিচিত। বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র থেকে প্রকাশিত 'সেরা রম্য রচনা' আসহাব উদ্দীন আহমদ বইয়ের ভূমিকায় আবদুস শাকুর তাঁর ভুয়সী প্রশংসা করেন। তিনি বলেন,'আসহাব উদ্দীন আহমদ একাধিক অর্থেই একজন বিশিষ্ট লেখক।...... লেখক আসহাব উদ্দীন চলিতার্থে সমাজঘনিষ্ঠ, ফলিতার্থে সমাজগর্ভজাত।'

ছোটবড় মিলে তাঁর গ্রন্থসংখ্যা একুশ। তাঁর সের এক আনা মাত্র (১৯৬৮), জান ও মান (১৯৬৯), লেখক ও পাঠক (১৯৬৯), Bande Votaram (১৯৬৯), হাতের পাঁচ আঙুল (১৯৭০), দাড়ি সমাচার (১৯৭১), বিপ্লব বনাম অতি বিপ্লব (১৯৭২), বাঁশ সমাচার (১৯৭৩), পথ চলিতে (১৯৭৫), আমার সাহিত্য জীবন (১৯৮০), ডেনজার সিগন্যাল (১৯৮০), ঘুষ (১৯৮৬), উজান স্রোতে জীবনের ভেলা (১৯৯০) প্রভৃতি গ্রন্থে সমকালীন রাজনীতি, সমাজবাস্তবতা এবং তাঁর ব্যক্তিগত চিন্তাধারার প্রকাশ ঘটেছে।
রাজনীতি, শিক্ষকতা ও লেখালেখির পাশাপাশি তিনি সমাজ পরিবর্তনে একাগ্রচিত্ত ছিলেন। তিনি চট্টগ্রাম নাইট (সিটি) কলেজ, বাঁশখালী কলেজ, সাধনপুর পল্লী উন্নয়ন হাইস্কুল, পশ্চিম বাঁশখালী হাইস্কুল প্রভৃতি প্রতিষ্ঠানের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন। বাংলাদেশ সরকার ২০০৫ সালে তাঁকে মরণোত্তর একুশে পদকে ভূষিত করেন।
আমার সৌভাগ্য স্যারকে উৎসর্গ করেছি "Selected Letters of Kazi Nazrul Islam "। ২৭ মৃত্যুবার্ষিকে শ্রদ্ধা ভ'রে স্মরণ করছি খ্যাতিমান এই ব্যক্তিকে।

আলমগীর মোহাম্মদ
বাঁশখালী
২৮.৫.২০২১

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়