শিরোনাম
◈ পিআর পদ্ধতি কী, কেন প্রয়োজন ও কোন দেশে এই পদ্ধতি চালু আছে?" ◈ ইসরায়েলি হামলায় ৪৩৭ ফুটবলারসহ ৭৮৫ ফিলিস্তিনি ক্রীড়াবিদের মৃত্যু ◈ পশ্চিম তীরে দখলদার ইসরায়েলিদের সাথে তাদেরই সেনা জড়ালো সংঘর্ষে! (ভিডিও) ◈ আমদানি-রপ্তানিতে এনবিআরের নতুন নিয়ম: বাধ্যতামূলক অনলাইন সিএলপি দাখিল ◈ জুলাই স্মরণে শহীদ মিনারে ছাত্রদলের মোমবাতি প্রজ্বলন (ভিডিও) ◈ জুলাই বিদ্রোহ: কোটা সংস্কার থেকে গণঅভ্যুত্থান ◈ ভারতের বাংলাদেশ সফর নিয়ে যা বললেন আমিনুল ইসলাম বুলবুল ◈ ৪৪তম বিসিএসের চূড়ান্ত ফল প্রকাশ, ক্যাডার পদে মনোনয়ন পেলেন ১৬৯০ জন ◈ ১৮ জুলাই নতুন দিবস ঘোষণা ◈ ডিসি-এসপি কমিটি ও ইভিএম বাদ, ভোটকেন্দ্র স্থাপনে নতুন নীতিমালা জারি করলো ইসি

প্রকাশিত : ২০ মে, ২০২১, ০৯:২৪ সকাল
আপডেট : ২০ মে, ২০২১, ০৯:২৪ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

[১] দেবিদ্বারে ভূঁয়া ডিবি পুলিশ সন্দেহে মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রন অধিদপ্তর’র ৬ সদস্য গনধোলাইর শিকার

শাহিদুল ইসলাম :[২] দেবিদ্বারে মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের ৬ সদস্যের একটি দল কর্তৃক অভিযান চালাতে যেয়ে তুলকালাম কান্ড ঘটানোর অভিযোগ পাওয়া গেছে। ওই অভিযানে রাসেল(২৭) নামে এক যুবকের ঘরে তল্লাসী চালিয়ে মাদক উদ্ধার এবং ৬ হাজার টাকা আদায়ের ঘটনায় স্থানীয়রা ভূঁয়া ডিবি পুলিশ সন্দেহে তাদের গনধোলাই দিয়ে স্থানীয় পুলিশের একজন উর্ধতন কর্মকর্তার বাড়িতে নিয়ে যান।

[৩] দেবিদ্বার থানা পুলিশ হেফাজত থেকে জেলা মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা আটক ৬ সদস্যকে নিয়ে যাওয়ার কথা থাকলেও সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় এ রিপোর্ট লিখা পর্যন্ত মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কেউ তাদের নিতে আসেনি বলে জানা যায়।

[৪] ঘটনাটি ঘটে বুধবার সকাল ১১টায় উপজেলার জাফরগঞ্জ গোমতী নদীর ভেরীবাঁধ সংলগ্ন গোদারাঘাট মীর বাড়ির মৃত; বজলু মিয়ার বাড়িতে।স্থানীয়রা জানান, মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর কুমিল্লা কার্যালয়ের পরিদর্শক আবু বকর ছিদ্দিক, গাড়ি চালক মো. রফিকুল ইসলাম, সিপাই মো. করিফুল ইসলাম, সহকারী উপ-পরিদর্শক (এ,এস,আই) উত্তম বরন দেবনাথ, সহকারী উপ-পরিদর্শক (এ,এস,আই) আবুল কাসেম, সিপাই মিঠুন চন্দ্র রবি দাস সহ ৬ সদস্যের একটি দল ‘মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রন অধিদপ্তরের ষ্টিকার লাগানো একটি জিপ নিয়ে জাফরগঞ্জ বাজারে আসেন।

[৫]  পরে তারা জাফরগঞ্জ গোমতী নদীর ভেরীবাঁধ সংলগ্ন গোদারাঘাট মীরবাড়ির মৃত; বজলু মিয়ার বাড়িতে যেয়ে মৃত; বজলু মিয়ার পুত্র মো. রাসেল ইসলাম (২৭)কে খোঁজ করেন। তাকে না পেয়ে তার বৃদ্ধা মা’ রাফিয়া বেগম(৬৫) ও তার বোন ময়না আক্তার(২৯)কে চাপ দিতে থাকেন রাসেলকে উদ্ধার না করে দিলে তাদেরকেই ধরে নিয়ে যাবে। মাদক আছে সন্দেহে তারা ঘরে তল্লাসী চালান, এক পর্যায়ে ঘরে কয়েক বোতল মদ ও কিছু ইয়াবা খুঁজে পান।

[৬] ওই অভিযানের সংবাদে কয়েকশত লোক বাড়ির আশপাশে ভীড় করতে থাকে।স্থানীয়রা আরো জানান, উপস্থিত লোকজন তাদের ভূয়া ডিবির লোক মনে করে বেধরক মার ধর করতে থাকেন, এসময় ৩জন পালিয়ে যান। স্থানীয় কিছু লোক এসে জনরোষ থেকে ৩জনকে উদ্ধার করে জাফরগঞ্জ গ্রামের পুলিশের একজন উর্ধতন কর্মকর্তার বাড়িতে নিয়ে যান।

[৭] ওই কর্মকর্তা বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীর রেলওয়ে পুলিশের নিরাপত্তা প্রধান ডি,আই,জি মো. শাহ আলম।রাসেলের বোন ময়না বলেন, ওরা কখনো ডিবির লোক, কখনো সিআইডির লোক আবার কখনো মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের লোক বলে দাবী করেন। আমর ভাই মাদকের সাথে জড়িত না হলেও নিজেরাই ঘরে কিছু মাদক রেখে তারাই উদ্ধার করে আমাদের চাপ দিতে থাকেন। আর মাসোহারর ২০ হাজার টাকা দাবী করেন।

[৮] আমরা তা দিতে অপারগতা দেখালে অনেক বাকবিতন্ডার পর ৭ হাজার টাকায় নেমে আসে।টাকা না দিলে আমাদের জোর করে তুলে নেয়ার হুমকী দেন। আমরা ঘরে থাকা ৬ হাজার টাকা দিলে তারা ওই টাকা ও মাদক নিয়ে দ্রুত চলে যাওয়ার সময় স্থানীয়দের সন্দেহ হয়।রাসেল জানায়, সকালে আমি জাফরগঞ্জ বাজারে আসার প্রস্তুতি নেই, এসময় কিছু অপরিচিত লোকজন আমার বাড়ির দিকে আসতে দেখে আমার সন্দেহ হয়, ওদের সাথে এলাকার কিছু চিহ্নীত মাদক ব্যবসায়ি ছিল। তাই আমি বাড়ির একটি ঘরে লোকিয়ে থাকি।

[৯] ওরা আমার মায়ের ঘরে প্রবেশ করে। ওরা আমার মা’কে বলেন, আপনার ছেলে মাদক ব্যবসায়ি, তার মসোহারার ২০ হাজার টাকা নিতে এসেছি। এ সময় আমার মা ও বোন অস্বীকৃতি জানালে তারা ঘর তল্লাসী করে, এসময় নিজেদের রাখা কয়েকটি মদের বোতল ও ইয়াবা খুঁজে পায় বলে জানায়। এনিয়ে বার্গেনিং করতে থাকে। আমার মা বোনকে নিয়ে যাওয়ার হুমকী দেয়, পরে রফাদফায় ৭হাজার টাকায় নেমে আসে।

[১০] তখন আমি ফোনে আমার বোনকে টাকা দিয়ে বিদায় করতে বলি। ঘরে ৬ হাজার টাকা ছিল, তা তাদের দেয়ার পর চলে যায়। পরে স্থানীয়রা তাদের ভুয়া সন্দেহে আটক করে মারধর করে।তবে দেবিদ্বার-ব্রাক্ষনপাড়া সার্কেল এ,এস,পি মো. আমিরুল্লাহ বলেন, কুমিল্লা মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের ৬ সদস্যের একটি টিম দেবিদ্বার উপজেলার জাফরগঞ্জ এলাকায় মাদক উদ্ধার অভিযানে আসেন। রাসেলের বাড়ি থেকে কিছু মাদকও উদ্ধার করেন।

[১১] স্থানীয়দের সাথে ভুল বুঝাবুঝিতে একটু হিচিং হয়। রাসেলের পরিবারের লোকজন বলছেন, ওদের ওখানে মাদক ছিলনা এবং তাদের কাছ থেকে ৬ হাজার টাকা নিয়ে আসেন। তাদের দেয়া টাকার বর্ননা অনুযায়ী মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের একজনের মানি ব্যাগে থাকা ২ টি এক হাজার টাকার নোট ও ৮টি পাঁচশত টাকার নোট পাওয়া গেলেও তার সাথে আরো টাকা ছিল।

[১২] তাই সত্যটা নিরুপন করা কঠিন। তাই মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রন অধিদপ্তরের উর্ধতন কর্মকর্তাদের বিষয়টি অবগত করা হয়েছে। ওনারা আসলে তাদের থানা থেকে হস্তান্তর করা হবে। পরবর্তিতে তাদের মতো তদন্ত করে তারাই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন বলে তিনি জানান।

 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়