আর রাজী: মা শব্দটা মধুর! কেন একটা শব্দ এতো মধুর ঠেকে আমাদের বেশি ভাগের কাছে? মা কে বা কি, আমরা জানি। সে কারণেই কি ‘মা’ শব্দটা এমন মধুর ঠেকে? ‘মা’ শব্দের বেশ কিছু অর্থ হয়। তিনটা অর্থকে এক সাথে বিবেচনায় নিয়ে ‘মা’ শব্দটাকে অনুভব করতে চাই। মা-এর একটা অর্থ বারণ, নিষেধ। ‘মা ভৈ, মা ভৈ রব ঘন ঘন’ কথাটার মধ্যে এই ‘না’ স্পষ্ট। ‘মা-ভৈ’ মানে ‘না ভয়’ বা ‘ভয় নেই’। আরো উদাহরণ অভিধানে রয়েছে, দেখে নেওয়া যেতে পারে। মা-এর আরেক অর্থ ‘মায়া’। ‘মা’ একই সাথে ‘নেই’ আবার যা আছে সে ‘মায়া’। আমরা যে মাকে চাই তা পাই না। আর যে মাকে আমরা হারাই তার মায়া আমাদের কাঁদায়। কল্পনাতেও মাকে গড়ি, সে তো মায়াই। মা-এর আরো এক অর্থ আছে। সেই অর্থধারণকারী মা-কেই আমরা পূজাঁ দেই। মা শব্দ যে অর্থকে গোপনে ধরে আছে সে হচ্ছে ‘পরিমিত কর্ম করে যে’। এই মা-কে সহজেই খুঁজে পাওয়া যাবে লক্ষ্মী শব্দটার মধ্যে। লক্ষ্মী হওয়া মানেই লক্ষ্মণ- রেখা মেনে চলা। গণ্ডি মানা। যে নিজেকে সীমিত করে ফেলে, যার সব চাওয়া-পাওয়া সীমায়িত হয়ে যায়, মেপে মেপে চলে যে, মেপে মেপে করে যে, সেই ‘মা’।
কলিম খান ও রবি চক্রবর্তী যখন বলেন, ‘কেউ কোনো সত্তাকে সংকুচিত করে কিংবা সত্তা নিজে সংকুচিত হয়ে, পরিমিত হয়ে ক্ষুদ্রতম রূপ নিয়ে কোথাও থাকলে, সেই আধারটিকে... মা বলা যায়...‘তখন কতো স্পষ্টভাবেই না বোঝা যায় বঞ্চনাকে মহিমান্বিত করার কতোই না আয়োজন করেছে মানুষ। যতোক্ষণ আপনি নিজেকে সংকুচিত করে রাখবেন, যতোক্ষণ আপনি নিজেকে পরিমিত রাখবেন, সীমায়িত রাখবেন ততোক্ষণ আপনি ‘মা’। এর ব্যতিক্রমে মা মানে নেই, মা মানে মায়া। ‘মা’ শব্দটা এ কারণেই কি এতো মধুর? ফেসবুক থেকে