সৈয়দ আতিকুল হক: ১. রাষ্ট্রীয় উদ্যোগের বিরুদ্ধে মূল অভিযোগ হলো দুর্নীতি, অব্যবস্থাপনা ও অদক্ষতা। বিকল্প হিসেবে বেসরকারীকরণ, সংস্কার ও সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগের টোটকা দেওয়া হয়েছে।
২. রাষ্ট্রীয় উদ্যোগে গঠিত প্রতিষ্ঠান যে সফলতার মুখ দেখতে পারে, তার নজির হচ্ছে ইডকল বা ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট কোম্পানি লিমিটেড। এটি বাংলাদেশের শতভাগ রাষ্ট্রমালিকানাধীন আর্থিক প্রতিষ্ঠান। প্র তিষ্ঠানটি অবকাঠামো, নবায়নযোগ্য জ্বালানি ও জ্বালানি সাশ্রয়ী প্রকল্পে অর্থায়ন করে।
৩. ১৯৯৭ সালের ১৪ মে বাংলাদেশ সরকার এটি প্রতিষ্ঠা করে। এই কোম্পানির পরিশোধিত মূলধন ছিল মাত্র ১ লাখ টাকা। আর ইডকলের ২০১৯ সালের বার্ষিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, কোম্পানির পরিশোধিত মূলধন দাঁড়িয়েছে ৬৫০ কোটি টাকা। কোম্পানির ২২ বছরের অগ্রযাত্রা দেখে বোঝা যায়, রাষ্ট্রীয় উদ্যোগ বিফলে যায়নি।
৪. গহিন গ্রামাঞ্চলে ইডকল যেভাবে মানুষকে মৌলিক বিদ্যুৎ–সেবা পৌঁছে দিতে সহায়তা করেছে, বিশ্বে আর কোনো আর্থিক প্রতিষ্ঠান তা করতে পেরেছে কি না সন্দেহ। এ সফলতার ফসল হলো দেশের অন্যান্য প্রতিষ্ঠান যেখানে দাতাদের দিকে তাকিয়ে থাকে, সেখানে দাতারা ইডকলে বিনিয়োগ করতে উল্টো মুখিয়ে থাকে।
৫ দক্ষিণ কোরিয়া, ভিয়েতনাম, তাইওয়ান বা চীনের কথাই ধরুন না, রাষ্ট্রীয় উদ্যোগ তাদের উন্নয়নের পথে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারেনি। ধীরে ধীরে সেখানে বেসরকারি খাতের বিকাশ ঘটেছে।
৬. সুশাসন নিশ্চিত করাটাই বড় কথা। স্বজনপ্রীতি, দুর্নীতি, অদক্ষতা, দূরদৃষ্টির অভাব থাকলে কোনো উদ্যোগই সফলতার মুখ দেখবে না, এসব এখন বলা বাহুল্য। সবকিছুই নির্ভর করে প্রতিষ্ঠানের কর্ণধারদের ওপর। সুশাসন প্রতিষ্ঠায় কঠোর হতে হয়। লেখক: অধ্যাপক, বিএসএমএমইউ