বখতিয়ার রানা: বিল গেটস শুধু পৃথিবীর শীর্ষ একজন ধনী ও বিজ্ঞানী শুধু নন ব্যক্তি মানুষ হিসেবেও অনেক উচু মাপের। কতো উচু সেটা হয়তো আমাদের এই ক্ষুদ্র মনে ধারণাও করতে পারি না। আমরা দূর থেকে তাকে দেখি পড়ি জানি মনে হয় সাদা মনের একজন ভালো মানুষ। তাকে কেউ অপছন্দ করতে পারে ভাবতেই পারি না। বিল গেটসের সম্পদ নিয়ে তার জীবন নিয়ে আমাদের এতো কৌতূহল এতো মিথ বলার অপেক্ষা রাখে না। তার সম্পদের পরিমাণ নিয়ে গার্ডিয়ান একবার বলেছিল বিল গেটস যদি কাল থেকে ঠ্যাংয়ের ওপরে পা তুলেও খান এবং সেটা যদি প্রতিদিন ১০ কোটি টাকা খরচের মতো হয় তার চলে যাবে আরো ২৩০ বছর প্রায়। অর্থাৎ ব্যক্তি বিল গেটস যদি একটি দেশ হতেন তিনি হতেন বিশ্বের ৩৭তম ধনী দেশ-এমন কতো কিছু যে আছে। ২০০০ সালে স্ত্রী মেলিন্ডাকে সাথে নিয়ে তিনি প্রতিষ্ঠা করেন বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশন, যা বিশ্বের বৃহত্তম বেসরকারি দাতব্য সংস্থা। বিভিন্ন দাতব্য কাজে ও বৈজ্ঞানিক গবেষণাসহ এই সংস্থা বিশ্বের বিভিন্ন সংকটে মানুষকে বিভিন্ন সমস্যা থেকে উত্তরণের জন্য যেভাবে এই পৃথিবীর পাশে থেকেছে তার আসলেই কোনো তুলনা নেই। এজন্য কিন্তু তারা আমার আপনার ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতার ধারও ধারেন না।
নিরবে নিভৃতে কোনো প্রচারণা ছাড়াই এগুলো করে চলেছেন কোনো সেলফি বা ফটোশুটও নেই! আমাদের প্রতিদিনের দৈনন্দিন জীবনে খুব সাধারণ কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ কাজে এই ফাউন্ডেশনকে খুজে পাবো-শিশুদের টিকা, মশার উপদ্রব থেকে রক্ষা, জন্মনিয়ন্ত্রণসহ এই করোনার টিকায়ও আছেন! ক্ষুধামুক্ত দারিদ্র্যমুক্ত শিক্ষিত ও স্বাস্থ্যবান বিশ্ব গড়ে তোলা যে সংস্থার প্রধান উদ্দেশ্য। শুধু তাই না, বিল গেটস ওয়ারেন বাফেটসহ শীর্ষ সাত ধনী ব্যক্তি সিদ্ধান্ত নিয়েছে তাদের মোট সম্পত্তির প্রায় ৯৮-৯৯ শতাংশ দান করে যাবেন। বিশ্বের শীর্ষ ধনীদেরও এই আহবান জানিয়ে বলেছিলেন তাদের অধিকাংশ সম্পদ মানুষের কল্যানে দান করে যেতে। সে আহ্বানে সাড়া দিয়ে প্রায় ১৫ জন বিলিয়নিয়ার তাদের অর্ধেক সম্পত্তি দিয়েও যাচ্ছেন। পরে আরো অনেকেই! সেই বিল ও মেলিন্ডা যখন তাদের প্রায় সব সম্পত্তি মানুষের কাজে দিয়ে যাচ্ছেন তাদের তিন সন্তান কিছু পাবেন না? জানা গেছে তাদের এই ১০-১২ হাজার কোটি টাকা থেকে সন্তানেরা পাবে নাকি বড়জোর এক কোটি ডলার-৮০ কোটি টাকা এবং সন্তানেরা এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে বলেছে বাবা-মায়ের এমন মহৎ সিদ্ধান্তের কারণে সন্তান হিসেবে তারা গর্বিত। আর বিল গেটস কি বলেন? ‘অনেক সম্পদ রেখে দেওয়া সন্তানদের জন্য মোটেও ভালো কোনো বিষয় নয়। এরফলে তারা নিজেরা যা করতে পারে, তা থেকে দূরে সরে যায়।
নিজেদের জন্য কোনো পথ তৈরি করতে পারে না।’ মানুষ হিসেবেই শুধু নয়, বিল-মেলিন্ডা সুসন্তানের বাবা-মা হিসেবেও সমানভাবে সফল। যে বিল গেটস, রাতে একটি বার্গারের জন্য আর দশজনের মতো দোকানের সামনে লাইন দেন, যার কষ্ট করে উপার্জনের অর্থের সুফল আমি আপনি প্রতিদিন কোনো না কোনোভাবে পাচ্ছি প্রতিদিন, তাদেরকে নিয়ে বাজে কথা বলতে কি আপনাদের বাধে না? পশ্চিমা বিশ্বে পারিবারিক স্থায়িত্ব নিয়ে এতো কথা সেখানে এই দম্পত্তি ছিল একদম ব্যতিক্রম। ব্যাপারটি খুব দুঃখের হলেও তাদের সমস্যা যেটা ভালো বুঝেছে সানন্দে সরে গেছে। ২৭ বছরের সম্পর্ক এমনি তো কেউ ভাংগে না। কিন্তু এই জাতির আসলে চুলকানির কোনো শেষ নেই। নিজের ঘর যেমন তেমন অন্যের ঘর নিয়ে দুনিয়ার মাথাব্যথা আমাদের। আসলেই অসুস্থ মানুষিকভাবে বৈকল্য এক জাতি আমরা! বিল গেটস ও মেলিন্ডা আনÑশুভকামনা রইলো। আগামীর দিনগুলো সুখের হোক এই প্রত্যাশা করি। ফেসবুক থেকে