ফরিদুল মোস্তফা:[২] দেশে আসা প্রবাসীরা নির্দিষ্ট সময়ে ফিরতে না পারায় চরম হতাশ হয়ে পড়েছে। করোনা সংক্রমন বৃদ্ধির কারণে সরকার ঘোষিত লকডাউনে সব ধরনের অভ্যন্তরীন এবং আন্তর্জাতিক বিমান বন্ধ হয়ে হওয়ার কারণে দেশে আটকা পড়েছে কক্সবাজার জেলার কয়েক হাজার প্রবাসী। এর মধ্যে সরকার বিশেষ ফ্লাইট চালু করলে কিছুটা আশার আলো দেখলেও হঠাৎ করে সেই বিশেষ ফ্লাইটও বন্ধ হওয়ার করাণে চরম বিপাকে পড়েছে প্রবাসীরা। এতে অনেকে বিক্ষুদ্ধ হয়ে পড়েছে।
[৩] গত কয়েকদিন ধরে কক্সবাজার বিমান অফিস গুলোতে বিদেশ যাত্রীদের টিকিটের জন্য অপেক্ষার প্রহর গুনতে দেখা গেছে।রামু কলঘর এলাকার আবদুল করিম জানান, আমি সৌদিতে জেদ্দায় একটি বোরকার দোকানে কাজ করি।
[৪] ২০২০ সালে দেশে করোনা সংকট শুরু হওয়ার পরে আমাদের সব কাজে ধ্বস নেমে আসে সেখানে বেশ কিছুদিন বসা অবস্থায় থেকে যা জমানো টাকা ছিল সব শেষ করে ফেলেছি বর্তমানে দেশে এসেছি ৭ মাস এখন আবার সৌদি কফিল আমাকে ডাকছে তিনি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাও করে দিয়েছেন যাওয়ার জন্য ১৫ এপ্রিল আমার সৌদিআরব যাওয়ার কথা ছিল কিন্তু হঠাৎ করে দেশে ১৪ এপ্রিল থেকে লকডাইন হওয়ার কারণে যেতে পারিনি পরে শুনলাম সরকার বিশেষ ব্যবস্থায় বিমান চালাবে শুনে খুব খুশি হয়ে আবার বিমান অফিসে গিয়ে ১৮ এপ্রিলের টিকিট নিশ্চিত করি।
[৫] ১৭ এপ্রিল আবার শুনেছি বিমান বন্ধ তাই মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পড়েছে।তিনি জানান, আমি এবার যেতে না পারলে আত্মহত্যা করতে হবে কারণ অনেকের কাছে ধারদেনা করে টাকা জোগাড় করেছি সেসব টাকা কিভাবে শোধ করবো। এদিকে পিএমখালী এলাকার দানু মিয়া বলেন, আমি দেশে এসেছি প্রায় ৩ মাস এখন যাওয়ার জন্য ১২ এপ্রিল টিকিট করিয়েছিল তবে পরে জানতে পারলাম সে সময় ফ্ল্যাইট মিচ হয়েছে। এর পরে উনারা ১৪ তারিখ করে দিয়েছে সে সময় যেতে পারিনি এখন ১৮ তারিখ করেছি এরপরও শুনছি বিমান বন্ধ হয়ে গেছে।
[৬] তিনি জানান, আমি খবর নিয়ে জানতে পেরেছি এখন সৌদি থেকে বিমান বন্ধ করেছে। কারণ বাংলাদেশে আগে বন্ধ করেছিল। এখন সৌদি হয়তো মনে করছে করোনা সংক্রমণ বেড়েছে তাই বাংলাদেশ থেকে বিমান যেতে বারণ করেছে এটা আমাদের জন্য বড় সমস্যার কারণ হতে পারে।
[৭] চকরিয়া ভরামহুরা এলাকার ইব্রাহিম বলেন, ১৭ এপ্রিল ঢাকা থেকে বিমানে সৌদি যাওয়ার জন্য আমি করোনা টেস্ট দিয়ে অনেক কষ্ট করে বর্তমানে ঢাকা পৌঁছেছি কিন্তু এখানে এসে শুনছি বিমান যাচ্ছে না। শুনে খুবই হতবাক আর বিপদে পড়েছি সাথে মালামাল আছে তাছাড়া এখানে কোথায় থাকবো আর কি খাবো? তিনি জানান এখানে কয়েক হাজার বিদেশ যাত্রী বিমানের জন্য অপেক্ষা করছে। তিনি জানান আমরা সৌদিতে কথা বলে জেনেছি আগে বাংলাদেশ থেকে বিমান বন্ধ করায় এখন সৌদি সরকার বন্ধ করে দিয়েছে এখন সৌদি সরকার অনুমতি না দিলে বিমান ঢুকতে পারবে না।
[৮] আন্তর্জাতিক বিমান বন্ধ করা ঠিক হয়নি এটা দেশের জন্য খুবই খারাপ কাজ হয়েছে।এদিকে কক্সবাজার বিমান অফিসের কর্মকর্তা আসাদুল ইসলাম বলেন, ১৪ এপ্রিলের পর থেকে লকডাউনের কারণে বিমান বন্ধ ছিল, এর পরে সরকার বিশেষ বিমান চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছিল কিন্তু এখন আবার বিমান বন্ধ হয়ে গেছে সে জন্য কাউকে টিকিট দিতে পারছিনা।
[৯] তিনি বলেন, দৈনিক অসংখ্য মানুষ টিকিটের জন্য আসছে তবে টিকিট দিতে পারছিনা। এর মধ্যে অনেকে যাত্রীর ভিসার মেয়াদ শেষ পর্যায়ে আবার অনেকে নানানভাবে সৌদির কবিলকে ম্যানেজ করে নির্দিষ্ট সময়ে কাজে যোগদানের জন্য কথা রয়েছে সবারই খুবই অসুবিধা হচ্ছে।সম্পাদনা:অনন্যা আফরিন
আপনার মতামত লিখুন :