শিরোনাম
◈ ১৯৭৩ সা‌লে বাংলাদেশের প্রথম নির্বাচনকে কেন বিতর্কিত বলা হয়?  ◈ তারেক রহমানের জন্য শাহবাগ মোড় সাময়িকভাবে ছেড়ে দিল ইনকিলাব মঞ্চ ◈ দৌলতপুর সীমান্ত দিয়ে ১৪ ভারতীয়কে পুশইনের চেষ্টা ব্যর্থ করে দিল বিজিবি ◈ আজ শনিবারও খোলা রয়েছে দেশের সব ব্যাংক ◈ শীতে কাঁপছে দেশ: যশোরে দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৯ ডিগ্রি, জানুয়ারিতে তীব্র শৈত্যপ্রবাহের আশঙ্কা ◈ কুয়াশা কেটে যাওয়ায় সাড়ে ৮ ঘণ্টা পর শরীয়তপুর-চাঁদপুর নৌরুটে ফেরি চলাচল শুরু ◈ বাঁকখালী নদীতে সেন্ট মার্টিনগামী পর্যটকবাহী জাহাজে আগুন ◈ আজ হাদির কবর জিয়ারত ও পঙ্গু হাসপাতাল পরিদর্শন করবেন তারেক রহমান ◈ ঢাকা-দিল্লি সম্পর্কে টানাপোড়েনের প্রধান কারণ ভারতের কর্তৃত্বপরায়ণ মনোভাব: দ্য ডনের সম্পাদকীয় ◈ সিরিয়ায় রাডার মোতায়েনের চেষ্টায় তুরস্ক, যে কারণে শঙ্কায় ইসরায়েল

প্রকাশিত : ১৮ এপ্রিল, ২০২১, ০৪:৩০ সকাল
আপডেট : ১৮ এপ্রিল, ২০২১, ০৪:৩০ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

এম আমির হোসেন: জ্ঞান-অর্জনের প্রথম ধাপ হলো ‘সন্দেহ’

এম আমির হোসেন: প্রচলিত ধারণা ও বিশ্বাসকে সন্দেহ করার মাধ্যমেই প্রকৃত জ্ঞান অর্জন সম্ভব। জ্ঞান-অর্জনের প্রথম ধাপ হলো সন্দেহ। সন্দেহের মাধ্যমে মানুষের মনে যে প্রশ্ন তৈরি হয় তা সমাধানের প্রচেষ্টা থেকেই জন্ম নেয় নতুন নতুন বিজ্ঞান ও দর্শন। জ্ঞান-বিজ্ঞানের বিকাশে সন্দেহ যে মোক্ষম কাজ করেছে তা সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত। মানুষের মনে সন্দেহ নামক অমূল্য সম্পদটি না থাকলে অন্যান্য বন্য প্রাণীর মতোই জীবনধারণ করতে হতো, সভ্যতার ছোঁয়া কখনো পেতাম না আমরা।

সন্দেহবাদ ও সংশয়বাদের ধারণা আমরা প্রথমে পাই প্রাচীন গ্রিক দার্শনিক প্রোটাগোরাসের লেখায়। সমাজের প্রচলিত ধারণাকে সন্দেহ করার খেসারত হিসাবে তাকে সমাজচ্যুত হতে হয়েছিলো, প্রাণভয়ে গ্রিস ছেড়ে পালাতে হয়েছিলো। পরবর্তী সময়ে সন্দেহকে জ্ঞান আহরণের পদ্ধতি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন ফরাসি দার্শনিক ডেকার্টে। তিনি বলতেন, চিন্তা থেকেই সন্দেহের উৎপত্তি, আর সন্দেহ থেকে উৎপত্তি হয় জ্ঞানের। একমাত্র সন্দেহ করার এই ক্ষমতা ছাড়া বাকি সবকিছুতেই সন্দেহ করতেন তিনি।

Cogito ergo sum (আমি চিন্তা করি, তাই আমি আছি), Dubito ergo sum (আমি সন্দেহ করি, তাই আমি আছি)- তাঁর বহুল প্রচলিত দুটি বচন। জন লক, ডেভিড হিউম সন্দেহবাদকে দিয়েছিলেন পরিপূর্ণতা। ইন্দ্রিয়লব্ধ জ্ঞানের মূল কারণ কী-তা অনুসন্ধান করতে গিয়ে তারাও সন্দিহান হয়ে পড়েন। এই সন্দেহের যথাযথ উত্তর দিয়েছে বিজ্ঞান। বিজ্ঞান বলেছে, ইন্দ্রিয় তথা মানুষের সহজাত ধর্ম মূলত বস্তু সমষ্টির-ই ধর্ম। মানুষও কতিপয় বস্তুর সমষ্টি; বস্তু ছাড়া মানুষের আলাদা কোনো অস্তিত্ব নেই। এতো কথার মূল কথা হলো, সন্দেহ-সংশয় থেকেই জ্ঞানের শুরু; যা ধারাবাহিক গ্রহণ-বর্জনের প্রক্রিয়ায় একটি পরিপক্ব পর্যায়ে এসে মানব কল্যাণে ব্যবহৃত হয়।

জ্ঞান উৎপাদনের পরীক্ষিত এই প্রক্রিয়া থেকে বাঙালি জাতি বহুযুগ ধরে বহুদূর পিছিয়ে আছে। হায়! অবোধ বাঙালি পুরুষ প্রচলিত ধারণাকে নয়, ঘরের বউকেই কেবল সন্দেহ করতে জানে। ভাব আর ভাবির কাঙাল হয়েই তারা থাকল চিরকাল। সেই রবীন্দ্রনাথ থেকে শুরু। ভাবে মরলো, ভাবি কাদম্বরীও মরলো। এই কাঙালপনা থেকে উৎরাতে পারলো না আর। সুখী-সুখী ভাবালুতার নকশীকাঁথা গায়ে দিয়ে বিশ্বাসের তুলতুলে নরম বালিশে অব্যবহৃত মস্তকটি রেখে বেঘোরে ঘুমানোই এখানে সমাজস্বীকৃত আদর্শ-জীবন। সন্দেহবাদী মৌলিক চিন্তা যে বাঙালি-স্নায়ুর কর্ম নয় তা নিয়ে বিন্দুমাত্রও সন্দেহ নেই আমার! লেখক : চিকিৎসক

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়