আবদুল ওহাব: বগুড়া শাজাহানপুর উপজেলার পানিহালী গ্রামে সিয়াম নামে সাত বছরের এক এতিম শিশুকে গলা কেটে জবাই করেছে তার নানী আনজুয়ারা বেগম (৪৫)। এঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। নিহত সিয়াম পাশ্ববর্তী নন্দীগ্রাম উপজেলার তীতলা গ্রামের মৃত নজরুল ইসলামের ছেলে।
মঙ্গলবার ১৩ এপ্রিল দুপুরে নির্মম এ ঘটনা ঘটলে দ্রুত খোজাখুজি করে দেশী ধারালো ছুরি সহ হত্যাকারী আনজুয়ারাকে হাতেনাতে গ্রেফতার করেছে শাজাহানপুর থানা পুলিশ। পরে সে হত্যার দায় স্বীকার করে স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দী দিয়েছে।
পুলিশ জানায়, দুপুরে এতিম শিশুটিকে প্রলোভন দিয়ে তার নানী আনজুয়ারা বাড়ি থেকে প্রায় তিন কিলোমিটার দুরে বিস্তীর্ণ ধানক্ষেতে নিয়ে যায়। সেখানে পানির ড্রেনের ভিতরে ফেলে ছুরি দিয়ে শিশুটিকে নিম্র্মভাবে জবাই করে। এরপর বিকেলে ধানক্ষেতে সেচের পানি দেখতে গিয়ে এক কৃষক ওই ড্রেনের ভিতরে জবাইকৃত শিশু দেখতে পেয়ে দৌড়ে বাড়িতে এসে লোকজনকে জানায়। সংবাদ পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে শাজাহানপুর থানার পুলিশ, পিবিআই ও সিআইডি আসে এবং হত্যাকারী আনজুয়ারাকে নিজবাড়ী থেকে গ্রেফতার করে।
এলাকাবাসী জানায়, নিহত সিয়ামের বাবা কয়েকবছর আগে এক দুর্ঘটনায় নিহত হলে তার মা অন্যত্র বিয়ে করে সেখানে চলে যায়। পিতৃমাতৃহীন হয়ে শিশুটি মানবেতর জীবনযাপন করতে থাকে। অসহায়ত্বকে বরণ করে অতি কষ্টে দিন কাটে সিয়ামের।
এমনই পরিস্থিতিতে তার নানীর বোন স্বামী পরিত্যাক্তা আনজুয়ারা বোরকা পড়ে মঙ্গলবার দিন দুপুরে সিয়ামকে প্রলোভন দিয়ে নিয়ে যায়। বিকেলে আনজুয়ারা একা বাড়ি ফিরে আসলে প্রতিবেশীরা এতিম শিশু সিয়ামের বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে। কোথায় রেখে এসেছে জানতে চায়্ কিন্তু সে সিয়ামকে সাথে করে নিয়ে যায়নি বলে অস্বীকার করে।
এতে করে প্রতিবেশীরা এক পর্যায়ে ক্ষিপ্ত হলে আনজুয়ারা এলোমেলো কথা বলতে থাকে। এদিকে শিশু হত্যার সংবাদ পেয়ে পুলিশ, পিবিআই ও সিআইডি চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ে এবং হত্যাকারীর অনুসন্ধান করতে থকে। এরই এক পর্যায়ে তথ্য পেয়ে আনজুয়ারার বাড়িতে পুলিশ পৌছালে আনজুয়ারাকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে এক পর্যায়ে সে হত্যার দায় স্বীকার করে। পরে আসামী আনজুয়ারাকে ঘটনাস্থলে নিয়ে গিয়ে তার কাছ থেকে ঘটনার বিবরণ জেনে নেয় এবং ধানক্ষেতের ভিতর লুকিয়ে রাখা রক্তমাখা ছুরিটি উদ্ধার করে।
এবিষয়ে শাজাহানপুর থানার ওসি আবদুল্লাহ আল মামুন জানান, লাশ উদ্ধার করে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ মর্গে পোষ্টমর্টেম রিপোর্টের প্র্রেরন করা হয়েছে। এছাড়া এ ঘটনায় হত্যা মামলা দায়ের ও আসামী আনজুয়ারাকে জেল হাজতে প্রেরন করা হয়েছে।
আপনার মতামত লিখুন :