নুরনবী সরকার: [২] লালমনিরহাটের হাতীবান্ধায় অনুমতি না নিয়ে দ্বিতীয় বিয়ের প্রতিবাদ করায় জাফরিন সুলতানা নামে এক গৃহবধূকে বেধড়ক মারপিট ও হত্যা চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে ছামিদুল ইসলাম ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় জাফরিন সুলতানা বাদি হয়ে বুধবার রাতে হাতীবান্ধা থানা একটি অভিযোগ করেছেন।
[৩] বুধবার (৭ এপ্রিল) সকালে উপজেলার দক্ষিণ সিন্দুর্না এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। আহত প্রথম স্ত্রী জাফরিন সুলতানা (২৩) উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছে। জাফরিন সুলতানা উপজেলার দক্ষিণ সিন্দুর্না এলাকার আহাম্মদ আলীর মেয়ে ও ছামিদুল ইসলাম একই এলাকার নুরুজ্জামান (জামাল) এর ছেলে।
[৪] অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, গত ৬ বছর পূর্বে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে প্রতিবেশী জাফরিন সুলতানাকে বিয়ে করে ছামিদুল ইসলাম। বিয়ের পর বিভিন্ন সময় যৌতুকের জন্য জাফরিনের উপর শুরু হয় মারধর ও নির্যাতন। এর বিচার চেয়ে জাফরিন সুলতানা বাদী হয়ে ছামিদুল ইসলাম ও তার পরিবাররের সদস্যদের বিরুদ্ধে গত বছরের ২৫ ডিসেম্বর নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে অভিযোগ করে। যা এখনো আদালতে বিচারাধীন রয়েছে।
[৫] এতে ছামিদুল ক্ষিপ্ত হয়ে প্রথম স্ত্রী জাফরিন সুলতানার অনুমতি ছাড়াই চলতি মাসের ৪ তারিখে পার্শ্ববর্তী নিলফামারীর জলঢাকা উপজেলার কাঠালী ইউনিয়নের উত্তর দেশীবাই গ্রামের আব্দুল জলিলের মেয়ে জান্নাতুল ফেরদৌসীকে (২৪) বিয়ে করে নিয়ে আসে। এ ঘটনায় গত বুধবার সকালে জাফরিন সুলতানা তার স্বামী ছামিদুল ইসলামের কাছে তার বিনা অনুমতিতে বিয়ে করার কারণ জানতে চায়। এতে ছামিদুল ও তার নতুন স্ত্রী জান্নাতুল ফেরদৌসীসহ পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা উত্তেজিত হয়ে জাফরিন সুলতানাকে বেধড়ক মারধর করে তাকে হত্যার চেষ্টা করে। এসময় জাফরিন সুলতানার চিৎকারে স্থানীয়রা ছুটে এসে তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করান। এ ঘটনা রাতে জাফরিন সুলতানা বাদী হয়ে তার স্বামী ছামিদুল ইসলাম ও তার নতুন স্ত্রী জান্নাতুল ফেরদৌসীসহ ৭ জনের নামে থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছে।
[৬] জাফরিন সুলতানা বলেন, আমার সুখের জন্য বিয়ের পর থেকে বাবা মা অনেক কষ্ট করে ছামিদুল ইসলামের (স্বামী) লেখাপড়ার সব খরচ দিয়ে এসেছে। বুড়িমারীতে আমার বাবা কষ্ট করে পাথর ভেঙ্গে হলেও তাকে প্রতি মাসে ৬ হাজার করে টাকা দিয়ে এসেছে। আর সে রংপুরে থেকে একের পর এক মেয়ের সঙ্গে অবৈধ সম্পর্ক করে গেছে। এরপরও যৌতুকের জন্য প্রতিনিয়ত আমাকে মারধর করলেও আমি তাকে ছেড়ে যাইনি। অথচ সে আমাকে না জানিয়ে বিয়ে করে এনে আমার কপাল পুড়লো। এর প্রতিবাদ করায় তারা সবাই মিলে আমার উপর নির্মম নির্যাতন করলো। ধারালো অস্ত্র দিয়ে আমাকে হত্যা করতে চেয়েছিল। তাদের অস্ত্রের চোটে আমার দু'হাত কেটে গুরুতর জখম হয়। আমি এর বিচার চাই।
[৭] এ বিষয়ে ছামিদুল ইসলামের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তার কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে তার বাবা নুরুজ্জামান জাফরিনকে মারধরের অভিযোগ অস্বীকার করে জানান, জাফরিনকে ডিভোর্স দিয়েই ছেলেকে দ্বিতীয় বিয়ে করিয়েছি। এতে তো সমস্যা থাকার কথা না।
[৮] হাতীবান্ধা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এরশাদুল আলম বলেন, এ ঘটনায় একটি অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। সম্পাদনা: হ্যাপি