শিরোনাম
◈ নির্বাচনী দায়িত্বে অপরাধের সাজা বাড়ছে: অধ্যাদেশের খসড়া অনুমোদন ◈ দেওয়ানি ও ফৌজদারি আদালত সম্পূর্ণভাবে পৃথক করলো সরকার ◈ অহেতুক চাপ সৃষ্টি করতে জামায়াতের কর্মসূচি: মির্জা ফখরুল ◈ জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি ও পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচনের দাবিতে রাজপথে সাত দল ◈ স্ত্রী আসলেই নারী কি না প্রমাণ দেবেন ম্যাখোঁ ◈ আগামী বছরের বইমেলার সময় পরিবর্তন ◈ সৌদি-পাকিস্তান প্রতিরক্ষা চুক্তি, যা জানালো ভারত ◈ সরকারি কর্মচারীদের জন্য বড় সুখবর: অবসরে বাড়ছে সুযোগ-সুবিধা, কমছে অপেক্ষাকাল ◈ আগামীকাল ৮ ঘণ্টা গ্যাস থাকবে না যেসব এলাকায় ◈ সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে সন্ত্রাসীদের হামলায় যমুনা টিভির সাংবাদিকসহ আহত ৫

প্রকাশিত : ৩১ মার্চ, ২০২১, ০৪:৪৬ সকাল
আপডেট : ৩১ মার্চ, ২০২১, ০৪:৪৬ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

আহসান হাবিব: অসাম্প্রদায়িক ধর্মনিরপেক্ষ আধুনিক গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র কে কায়েম করবে?

আহসান হাবিব: মোদী কেবল উপলক্ষ্য, আসল লক্ষ্য সরকারকে ক্ষমতা থেকে উৎখাত করা। কারণ যারা সাম্প্রদায়িক মোদীর বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করছে, তারা এক একটা পাঁড় সাম্প্রদায়িক। সাম্প্রদায়িক নয় এমন যাদের তাদের সহযোদ্ধা হিসেবে দেখি, তারা শুধু সাম্প্রদায়িক নয়, উগ্র এবং পাঁড় প্রতিক্রিয়াশীলও। তাদের নামের আগে বাম শব্দটি হনুমানের লেজের মতো এমনি ঝুলে আছে। প্রসংঙ্গত, আমি সব বামের কথা আপাততো বলছি না। আসলে এরা কারা? এরা কি সত্যি হাসিনার যে সরকার, তাদের যে আদর্শ-যাই হোক- তাদের চেয়ে উন্নত কোন রাষ্ট্র ব্যবস্থা কায়েম করতে চায়? কি সেটা? এখন আমরা যে পুঁজিবাদী শোষণ এবং বৈষম্যের যাতাকলে পিষ্ট হয়ে চলেছি, এরা কি তা থেকে মুক্তি দেবে? ধরুন, হেফাজত ক্ষমতায় এলো তার সাংঙ্গ পাংঙ্গদের নিয়ে, তারা কি কোনো গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র কায়েম করবে? কিংবা ধরুন জামায়াত বিএনপি ক্ষমতায় এলো, তারা কি কোনো উন্নত গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র কায়েম করবে? তাদের সংঙ্গে যে বামদলগুলি আছে, তাদের সহযোগী হিসেবে, তারা কি ক্ষমতার সামান্য ছিটেফোঁটা ভাগ পাবে? হয়তো পাবে, দুএকটা পদ পেতেও পারে।

কিন্তু আমি নিশ্চিত, তারা তা করবে না, বরং তারা মধ্যযুগ কায়েম করবে। যে মোল্লাতন্ত্রকে পরাজিত করে এদেশ স্বাধীন হয়েছে, বিনিময়ে দিতে হয়েছে লক্ষ লক্ষ প্রাণ, তারা যদি আবার ক্ষমতা দখল করতে চায়, তাহলে কি করে বিশ্বাস হয় তারা কোন ধর্ম রাষ্ট্র নয়, উন্নত গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র কায়েম করবে? মুক্তিযুদ্ধের সময় উগ্র বামদলগুলি মুক্তিযুদ্ধের বিরোধীতা করেছে, স্বাধীন হওয়ার পরেও তারা পাকিদের সংঙ্গে যোগাযোগ রেখে ষড়যন্ত্র চালিয়ে গেছে।

আজকের বামেরা যারা সাম্প্রদায়িক শক্তির লেজুড় হয়ে কাজ করছে, তারা কি সেই বাম লিগেসী নয়? কোন সন্দেহ নাই আজকের মোল্লাতন্ত্র এবং এই বামেরা সেদিনের মুক্তিযুদ্ধবিরোধী শক্তি ভিন্ন অন্য কিছু নয়। যদিও এরা মুখে অস্বীকার করে, এটা তাদের রাজনৈতিক ছলনা। যদি এদেশের জনগণ দেখতে পেতো এরা হাসিনাকে ফেলে দিয়ে আরও উন্নত গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র কায়েম করবে, তাহলে এই আন্দোলনে হয়তো ঝাঁপিয়ে পড়তো, কিন্তু এরা আর কেউ নয়, এরা সেই পরাজিত শক্তি, এরা সেই সাম্প্রদায়িক শক্তি যারা প্রতিশোধের নেশায় উন্মত্ত। আওয়ামীলীগের বিপরীতে বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত এমন কোনো রাজনৈতিক শক্তির উত্থান দেখলাম না, যারা সত্যিকার জনগণের আস্থা অর্জন করতে পেরেছে। জাসদের উত্থান এই আশাবাদ জাগিয়েছিলো, কিন্তু ইতিহাসের নির্মম সত্য এই যে তারা ছিল উগ্রপন্থি, প্রকৃত সমাজবিপ্লবী নয়। তারা পেটিবুর্জোয়া রোমান্টিকতায় আচ্ছন্ন ছিলো। শেখ মুজিবই ছিলো তাদের প্রধান প্রতিপক্ষ, তাকে হত্যা করার মধ্য দিয়ে তাদের সব বিপ্লবীপনা শেষ হয়ে গেছে। শেখ মুজিবকে হত্যার পর মুক্তিযুদ্ধ পরাজিত হলে আবার উগ্র বাম এবং সাম্প্রদায়িক শক্তির উত্থান ঘটে এবং দুই দশকেরও বেশি সময় তাদের কব্জায় থেকে দেশ তার সমস্ত প্রগতিশীল অর্জন হারিয়ে ফেলে এক ধর্মান্ধ রাষ্ট্রে পরিণত হয়।

আওয়ামী লীগ আবার বহু সংগ্রাম, বহু রক্তের বিনিময়ে ক্ষমতায় আসে। তখন থেকেই আবার শুরু হয় ঐ পরাজিত শক্তিগুলোর গাত্রদাহ। সেই দাহ এখন অসহ্য জ্বালায় পরিণত হয়েছে। এখন দরকার তাদের ফেলে দেওয়া। এই ফেলে দেওয়ার কাজে নেমে পড়েছে দেশের সব সাম্প্রদায়িক শক্তি এবং তাদের সংঙ্গে যুক্ত হয়েছে সেদিনের স্বাধীনতা বিরোধী উগ্র বামেরা। মোদীর বিরুদ্ধ বিক্ষোভ একটি মিথ্যে অজুহাত। আসল কারণ হচ্ছে ভারত মুক্তিযুদ্ধে প্রধান সহায়ক শক্তি, এদের মিলিত শক্তির ফলে দেশ দ্রুত স্বাধীনতার মুখ দেখে। আজ যদি মোদী না হয়ে কংগ্রেস  ক্ষমতায় থাকতো এবং এর প্রধান, ধরুন রাহুল গান্ধী কিংবা সোনিয়া গান্ধী আমন্ত্রিত হয়ে আসতেন, তারা অন্য অজুহাত খাড়া করতো, বলতো তারা ভারতের কাছে দেশ বিক্রি করে দিতে চায়, কংগ্রেসের দালাল হচ্ছে আওয়ামীলীগ। কিংবা যদি খোদানাখাস্তা সিপিআই ক্ষমতায় থাকতো এবং আজকের তরুণ বাম নেতা কানাইয়া আমন্ত্রিত হয়ে স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীতে আসতো, তারা বলতো হাসিনা নাস্তিকের কাছে দেশ বিক্রি করতে চায়, এদেশীয় বামেরা বলতো এরা সংস্কারবাদী, চাই চৈনিক বাম।

তবে যদি চীনের প্রেসিডেন্ট আসতো যে চীন স্বাধিনতা যুদ্ধে বিরোধীতা করেছিল, তাহলে মোল্লারা নাস্তিক বলে আন্দোলন গড়ে তুলতো, তখন এই বামেরা অন্য অজুহাত খুঁজতো, মোল্লাদের বিরুদ্ধে দাঁড়াতো না। কারণ তাদের মিলিত লক্ষ্য হাসিনাকে ফেলে দিয়ে খাটি মধ্যযুগ বানানো। আওয়ামীলীগ যে একটা পুরাদস্তুর সাম্প্রদায়িক দল হয়ে উঠেছে, কিংবা সাম্প্রদায়িক শক্তিকে আশকারা দিয়ে মাথায় তুলেছে, এটা ইতিহাস নির্দিষ্ট পরিণাম, কেননা এই দলের ভেতর ৯৯% সমর্থক সাম্প্রদায়িক চেতনার, মুক্তিযুদ্ধ তাদের কাছে এখন আর আদর্শিক চেতনার বিষয় নয়। ফলে আওয়ামীলীগও ধর্মকে রাজনীতিতে ব্যবহার করে টিকে থাকতে চাইছে। এইজন্যই তারাও তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারছে না।

তাহলে অসাম্প্রদায়িক ধর্মনিরপেক্ষ আধুনিক গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র কে কায়েম করবে? আপাততো সেরকম কোন শক্তির দেখা মিলছে না। আমাদের আবার অন্ধকারের দিকে যাত্রা। অথচ আমাদের প্রত্যাশা এমন একটি রাজনৈতিক শক্তি যে সমস্ত সাম্প্রদায়িকতাকে পরাজিত করে একটি আধুনিক ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র কায়েম করবে, পরাজিত হবে শুধু হেফাজত, জামায়ত শিবির, বিএনপি, উগ্র বাম নয়, আজকের সাম্প্রদায়িক আওয়ামীলীগও।  ফেসবুক থেকে শাহিন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়