সাজিয়া আক্তার: [২] ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর সংগঠিত গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আদায়ের জন্য মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কাজ করছে বলে জানিয়েছেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক। জাগো নিউজ
[৩] বৃহস্পতিবার (২৫ মার্চ) জাতীয় জাদুঘরে ২৫ মার্চ ‘গণহত্যা দিবস’ এ মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় আয়োজিত আলোচনা সভায় অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
[৪] মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী বলেন, ‘২৫ মার্চ ‘আন্তর্জাতিক গণহত্যা দিবস’ হিসেবে স্বীকৃতির দাবি রাখে। গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আদায়ের জন্য আরও ব্যাপকভাবে প্রচেষ্টা চালাতে হবে। এজন্য আন্তর্জাতিক সমর্থন আদায়ের লক্ষ্যে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কাজ করছে।’
[৫] আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেন, ‘স্বাধীনতার ৫০ বছরের মধ্যে ৩০ বছরই স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি ক্ষমতায় থাকায় গণহত্যার ইতিহাস তারা ভুলিয়ে দিতে সচেষ্ট ছিল। নতুন প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস জানাতে বিজয়ের গল্পের সঙ্গে পাকিস্তানের অত্যাচার ও গণহত্যার ইতিহাসও বলতে হবে।’
[৬] আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন, ‘১৯৭১ সালে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ও তাদের দোসরদের দ্বারা সংঘটিত গণহত্যা বিশ্বের ইতিহাসে অন্যতম জঘন্য গণহত্যা। এ গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি ও গণহত্যাকারীদের বিচার নিশ্চিত করতে হবে। একইসঙ্গে পাকিস্তানকে বাংলাদেশের কাছে ক্ষমা চাওয়া ও ক্ষতিপূরণ দিতে বাধ্য করতে হবে।’
[৭] মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব তপন কান্তি ঘোষের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি শাজাহান খান। মূলপ্রবন্ধ উপস্থাপন করেন প্রখ্যাত ইতিহাসবিদ ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু চেয়ার অধ্যাপক ড. মুনতাসীর মামুন, বিশেষ বক্তা ছিলেন মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি মফিদুল হক।
[৮] শাজাহান খান বলেন, পাকিস্তানি পরাজিত শক্তি এখনও বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র অব্যাহত রেখেছে। বাংলাদেশের কাছে পাকিস্তানিদের ক্ষমা চাওয়া ও ক্ষতিপূরণ দিতে বাধ্য করার প্রক্রিয়া অব্যাহত রাখতে হবে।
[৯] মুনতাসীর মামুন বলেন, দুঃখজনক হলেও সত্য বাংলাদেশে গণহত্যা দিবস পালনের জন্য আন্দোলন করতে হয়েছে। প্রতিক্রিয়াশীল শক্তি দীর্ঘদিন রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় থাকায় গণহত্যা বিষয়ে বাংলাদেশে তেমন আলোচনা হয়নি। ১৯৭১ সালে ৩০ লাখ মানুষ শহীদ হয়েছে বলা হলেও এই সংখ্যা আরও বেশি। এ ছাড়া ধর্ষণের শিকার হন পাঁচ লাখ নারী।’
[১০] মুনতাসীর মামুন বলেন, দেশের ইউনিয়ন-উপজেলা এবং জেলা পর্যায়ে মুক্তিযোদ্ধাদের গণকবর, শহীদদের স্মৃতি ও নির্যাতনের স্মারকগুলো চিহ্নিত করে তা রক্ষার চেষ্টা করছি। বাংলাদেশে সংঘটিত গণহত্যার কথা আমাদেরকেই আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে নিয়ে যেতে হবে। মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সেমিনার আয়োজন করে এ বিষয়ে বিশ্বকে অবহিত করছে।
আপনার মতামত লিখুন :