লিহান লিমা: [২] মঙ্গলবার মিয়ানমারের মানদেলের একটি বাড়িতে নিরাপত্তা বাহিনী অভিযানের সময় ছোঁড়া গুলিতে ৭ বছরের এক কন্যাশিশু প্রাণ হারায়। জান্তা সরকারের হত্যাকাণ্ডে এই শিশুটি সর্বকনিষ্ঠ। নিরাপত্তা বাহিনী শিশুটির বাড়িতে অভিযানের সময় শিশুটির বাবাকে জিজ্ঞাসা করে বাড়িতে পরিবারের সবাই আছে কি না। তিনি হ্যাঁ সূচক উত্তর দিলে তারা মিথ্যে বলার অভিযোগে তাকে উদ্দেশ্য করে গুলি করে, এ সময় বাবার কোলে থাকা শিশুটির শরীর গুলিবিদ্ধ হয়। সিএনএন
[৩] শিশুটির মৃত্যুর পর শোকাগ্রস্ত মিয়ানমারের বিক্ষোভকারীরা বুধবার ‘নীরব ধর্মঘট’ এর ডাক দিয়েছেন। মিয়ানমারের পুরো শহর নিস্তব্ধ করে দেয়ার ডাক দিয়ে সব ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও দোকানপাট বন্ধ করে ঘরে রয়েছেন তারা। স্থানীয় গণমাধ্যমের তোলা ছবিতে দেখা গিয়েছে, বুধবার সকালে মিয়ানমারের শূন্য রাজপথ, যা এতোদিন জনতার বিক্ষোভে উত্তাল ছিলো।
[৪] গত ১ ফেব্রুয়ারি মিয়ানমার জান্তা দেশটির স্টেট কাউন্সিলর অং সান সু চির ওপর গত নভেম্বরের নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ এনে তাকে বন্দি করে ক্ষমতা দখল করে। জান্তা সরকারের বিরুদ্ধে চলমান বিক্ষোভে এখন পর্যন্ত ২৭৫জন প্রাণ হারিয়েছেন। নিহতদের মধ্যে ২০জনই শিশু বলে জানিয়েছে মানবাধিকার সংগঠন সেভ দ্য চিলড্রেন। ২ হাজার ৮১২জনকে আটক করেছে নিরাপত্তা বাহিনী। সেভ দ্য চিলড্রেন বলছে, আটককৃতদের মধ্যে ১৪৬জনই শিশু, ৪৮৮ জন শিক্ষার্থী। এদের মধ্যে অনেককেই রাতের বেলা বাড়িতে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
[৫] মঙ্গলবার শিশুটির মৃত্যুর পর সংস্থাটি এক বিবৃতিতে জানায়, ‘শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভকারীদের ওপর নিরাপত্তর বাহিনীর আক্রমণের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়েছে শিশুরাও। আমরা আতঙ্কিত। যে শিশুরা হত্যার শিকার হয়েছে তারা সবাই নিজের বাড়িতে ছিলো, যেখানে কি না তাদের নিরাপদে থাকার কথা। এটি স্পষ্ট নিরাপত্তা বাহিনী মিয়ানমারের নাগরিকদের জীবনের কোনো তোয়াক্কা করে না।’
[৬] এদিকে মঙ্গলবার দেয়া এক টিভি ভাষণে সেনাবাহিনীর মুখপাত্র জ মিন বলেন, নাগরিকদের মৃত্যুতে তিনি দুঃখিত কিন্তু বিক্ষোভকারীরাই অস্থিতিশীলতা ও সম্পদ নষ্টের জন্য দায়ী। সংবাদ সম্মেলনে তিনি প্রশ্ন ছুঁড়ে দিয়ে বলেন, ‘কোন দেশ এমন সহিংসতা সহ্য করবে?’
আপনার মতামত লিখুন :