✖

নাঈমুল ইসলাম খান: [২] এই নকল মাস্ক তৈরিতে অপরাধীর প্রতি আমার সহানুভূতি বাড়ছে। সম্মান জাগ্রত হচ্ছে।

[৩] নকল মাস্ক বানানোর অভিযোগ ছাড়া জনাব রাজ্জাকের জীবন ব্যবসায়িক কলঙ্কমুক্ত বলেই জানা গেছে। তিনি সফল এবং তার প্রতিষ্ঠানগুলো বাংলাদেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং বড় সরবরাহকারী। তার প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপরে বাংলাদেশের স্বাস্থ্যখাতের সুচারু পরিচালনা অনেকখানি নির্ভরশীল।

[৪] দুই হাজার কুড়ির শুরুতে যখন করোনায় আক্রান্ত হয়ে চীন পর্যুদস্ত, দিশেহারা, বাংলাদেশ তখনও ততোটা আক্রান্ত নয়। আমরা হয়তো ভুলে গেছি, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেই সময় ১০ লাখ হ্যান্ড গ্লাভস চীনে পাঠিয়েছিলেন বাংলাদেশের উপহার হিসেবে। এগুলো ছিলো জনাব রাজ্জাকের কোম্পানিতে তৈরি।

[৫] নকল মাস্ক সরবরাহের অভিযোগ যখন রাজ্জাক সাহেবের বিরুদ্ধে উঠছে, যখন তাকে দুদকে ডাকা হচ্ছে তখনও স্বাস্থ্য অধিদপ্তর রাজ্জাক সাহেবের কাছ থেকে জরুরি সরবরাহ নিচ্ছেন। চতুর্মুখী নিন্দা, সমালোচনার ঝড় এবং আইনের প্রবল প্রতাপে, হেনস্তায় দিশেহারা অসহায় রাজ্জাক সাহেব তখনও প্রাণপণ প্রচেষ্টায় করোনা মোকাবেলার জরুরি সামগ্রী উৎপাদন ও সরবরাহে সচেষ্ট থেকেছেন। তার জন্যে কিছুটা মায়া লাগবে না? করোনা মোকাবেলায় বাংলাদেশের সাফল্যে জনাব রাজ্জাকের কিছুটা হলেও অবদান আছে।

[৬] এখন আমরা প্রশংসায় পঞ্চমুখ হয়ে যখন ভ্যাকসিন গ্রহণ করছি, আমাদের অনেকেরই জানা নেই এর জন্য অতি জরুরি সিরিঞ্জটি রাজ্জাক সাহেবেরে কোম্পানি থেকে তৈরি। রাজ্জাক সাহেবের কোম্পানি স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কাছে ৩ কোটি সিরিঞ্জ সরবরাহ করেছেন। এই সিরিঞ্জ বাংলাদেশে আর কেউ তৈরি করে না, বিশ্ববাজারেও খুব বেশি সহজ না এর সরবরাহ পাওয়া।

[৭] আমাদের অনেকে এটাও জানি না রাজ্জাক সাহেব যে এন-৯৫ মানের মাস্ক নকল করার দায়ে জেল খাটলেন, সেই রাজ্জাক সাহেবই নিজ উদ্যোগে ইতোমধ্যে সার্থকভাবে এন-৯৫ সমমানের অর্থাৎ বিশ্বমানের মাস্ক দেশেই তৈরি করছেন। এদেশে একমাত্র তিনিই করেছেন। এই তিনি, এই কিছুদিন আগে নকল এন- ৯৫ মাস্ক তৈরি করেছিলেন! দেখুন দুর্নীতির ভেতর থেকে কীভাবে বিশ্বমানের ভালো মাস্ক জন্ম নিলো। এমন ১৮০ ডিগ্রি ঘুরে দাড়াতে কতজন পারে?

[৮] একজন সফল উদ্যোক্তা এবং দেশপ্রেমিক মানুষ হিসেবে তার একটি দুর্নীতির প্রয়াসকে এই জন্যই আমি, বিচারের পক্ষপাতি হলেও, তার জীবনে ব্যতিক্রম হিসেবে বিবেচনা করতে উৎসাহ বোধ করছি।

[৯] আল্লাহ রাজ্জাক সাহেবকে চলমান দুর্নীতির অভিযোগ থেকে মুক্তি দিন, ভবিষ্যতে অন্য যেকোনো দুর্নীতি থেকে মুক্ত রাখুন এবং বাংলাদেশে আরও ভালো ও জরুরি উপকরণ তৈরিতে উদ্বুদ্ধ করুন।