রাজু চৌধুরী[২] সবিতা রানী বড়ুয়া ৭১-এর মুক্তিযুদ্ধের চলাকালে মাত্র ২৬ বছর বয়সে তাঁর স্বামী শহীদ বুদ্ধিজীবী বাগীশ্বর বড়ুয়াকে হারান, যিনি ছিলেন মাস্টারদা সূর্য সেনের কিশোর গেরিলা দলের সদস্য এবং বাংলাদেশ বৌদ্ধ কৃষ্টি প্রচার সংঘের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক।
[৩] কাপ্তাই উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ১৯৭১ সালে রাজাকারদের সহযোগিতায় পাক সেনারা সে সময়ের বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক শহীদ বাগীশ্বর বড়ুয়াকে ক্যাম্পে ডেকে নিয়ে অমানুষিক নির্যাতনের ৫ দিন পরে হত্যা করে।পাক সেনার হাতে ৭১ সালের ১৩ ই জুন শহীদ হন বাগীশ্বর বড়ুয়া এবং তাঁর মরদেহটিও গুম করে ফেলে, যা কখনো উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।
[৪] উল্লেখ্য, ৭১ সালের সে সময়টাতে প্রয়াত সবিতা রানী বড়ুয়ার কোলে ছিল ৮ মাস বয়সের তাঁর কনিষ্ঠ সন্তান এবং বড় সন্তানের বয়স ছিল ৮ বছর। মুক্তিযুদ্ধে স্বামীহারা এই অল্প বয়সের তরুণী মাতাকে সন্তানদের দিকে তাকিয়ে জীবন সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়তে হয়।
[৫] ৭১ এর মুক্তিযুদ্ধ অল্প বয়সেই তাঁর জীবনের সমস্ত স্বপ্ন-সুখ কেঁড়ে নিয়েছিল। কিন্তু তাঁর দৃঢ়তার কারনে সমস্ত দুঃখ কষ্টকে বরণ করে তিনি তাঁর ৫ সন্তানদের প্ৰত্যেককে বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ ডিগ্রী অর্জন করাতে সফল হয়েছিলেন। বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করে নিজের সন্তারদেরকে যেমন সুশিক্ষায় শিক্ষিত করেছেন, অপর দিকে শত শত ছাত্র ছাত্রীদের মধ্যেও বিলিয়ে ছিলেন শিক্ষার আলো।
[৬] শুক্রবার ২৬শে ফেব্রুয়ারী, কাপ্তাই বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড উচ্চ বিদ্যালয়ের অবসর প্রাপ্ত শিক্ষিক শহীদ বুদ্ধিজীবী বাগীশ্বর বড়ুয়ার সহধর্মিনী সবিতা বড়ুয়া ৭৬ বছর বয়সে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে চট্টগ্রামের বাসভবনে পরলোক গমন করেন।
[৭] মৃত্যুকালে তিনি তিন কন্যা, দুই পুত্র, নয়জন নাতি নাতনি সহ অসংখ্য গুনগ্রাহী শুভান্যুধ্যায়ী রেখে যান। শিক্ষিক সবিতা রানী বড়ুয়ার মৃত্যুতে বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক, ধর্মীয় ও রাজ্নৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ শোক প্রকাশ করেছেন এবং শোক সন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করেন। সম্পাদনা:অনন্যা আফরিন
আপনার মতামত লিখুন :