মাসুদ রানা: বাংলাদেশে কোনো গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠেনি। তাই, গণতান্ত্রিক একক বা যৌথ আন্দোলন গড়া সম্ভব হচ্ছে না। স্বৈরতন্ত্রের নিগড়ে পড়ে গণতন্ত্রের জন্যে ছফফট করা প্রাণসমূহকে বুঝতে হবে যে, পরিস্থিতির তাৎক্ষণিকতায় ক্ষমতার বাইরে থাকা ক্ষুধার্তদের নিয়ে বহুবার ঐক্য হয়েছে, বহু বড়ো-বড়ো কথা বলা হয়েছে, বহু প্রাণ দেওয়া হয়েছে, তবুও কাক্সিক্ষত কোনো পরিবর্তন আসেনি। কেনো আসেনি? এটি বুঝার জন্যে রকেট সায়ীন্স জানার দরকার নেই।
দরকার মাত্র নীচের ক’টি বিষয়ে স্পষ্ট ধারণা : [১] সমস্যার মূলে কী?
[২] মূলোৎপাটনের উপায় কী?
[৩] উৎপাটনের পর কী প্রতিষ্ঠা করতে চাই?
[৪] যা প্রতিষ্ঠা করতে চাই, তার ন্যায্যতা কী?
[৫] ন্যায্যতা নিশ্চায়ক ক্ষমতা জনগণের হাতে আছে কী? বঙ্গদেশে স্বৈরতন্ত্রের বিরুদ্ধে একবার ১৯৬৯ সালে এবং দ্বিতীয়বার ১৯৯০ সালে গণ-অভ্যুত্থান হয়েছে। গণতন্ত্র আসেনি, স্বৈরতন্ত্র তিরোহিত হয়নি। এক স্বৈরতন্ত্রের প্রস্থান ও অন্য স্বৈরতন্ত্রের বিকাশ হয়েছে। এবং প্রতিবারেই পূর্বের চেয়ে পরেরটি জঘন্যতর হয়েছে। তাই বলি, নির্বোধ ও আবেগ সর্বস্ব এবং কেবলই তাৎক্ষণিকভাবে রিএ্যাক্টিভ আন্দোলন ও ঐক্য করা অর্থহীন। সামাজিক কাঠামো ও পদ্ধতির পরিবর্তন একটি সামাজিক প্রকৌশলের বিষয়। আর, সামাজিক প্রকৌশল রপ্ত করতে হলে, সামাজিক বিজ্ঞান জানতে হবে। বঙ্গবাসী পরিবর্তনকামীদের প্রথম কাজটি হবে সঠিক বিজ্ঞানটি জেনে ও বুঝে সঠিক প্রকৌশলের পরিকল্পনা স্থির করা, এবং তারপর মাঠে নামা। লণ্ডন, ইংল্যান্ড।