সারোয়ার জাহান: [২] সারা দেশে মোট এক হাজার ৫টি হাসপাতালে একযোগে কভিড-১৯ ভ্যাকসিন প্রদান শুরু হচ্ছে আগামীকাল রোববার (৭ ফেব্রুয়ারি)। প্রথম দিন ১ হাজার ১৫টি কেন্দ্রে টিকা দেওয়া হবে। রাজধানীর ৫০টি হাসপাতালের জন্য ২০৪টিসহ এবং সারা দেশে ২ হাজার ৪০২টি টিম এই টিকাদানে কাজ করবে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
[৩] শনিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম।
[৪] স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম বলেছেন, যারা নিবন্ধন করতে পারবেন না, তারা কেন্দ্রে এসে ফরম পূরণ করতে পারবেন। এক্ষেত্রে কেন্দ্রে আসলে তাদের নিবন্ধন করা যেতে পারে। সেক্ষেত্রে হয়তবা এক থেকে দুই দিন পরে তাদের ভ্যাকসিন দেওয়া হতে পারে। এছাড়াও যারা অনলাইনে নিবন্ধন করতে পারবেন না, তাদের জন্য প্রতিটা হাসপাতালেই ভ্যাকসিন নিবন্ধন বুথ বসানো হচ্ছে।
[৫] এদিন যারা টিকা নেবেন, তাদের কাছে শনিবার বিকালের মধ্যে এসএমএস পৌঁছে যাবে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেমের পরিচালক মিজানুর রহমান একটি গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানিয়েছেন।
[৬] নিবন্ধনে সহায়তা করতে প্রায় ছয় হাজার ৬৮৬টি ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টারের দায়িত্বপ্রাপ্তদের নির্দেশ দিয়েছে সরকার।
[৭] এ পর্যন্ত তিন লাখের বেশি মানুষ টিকার জন্য নিবন্ধন করেছেন। তাদের তালিকা দেশের সব টিকাকেন্দ্রে পৌঁছে গেছে। কেন্দ্র থেকে কোন দিন কারা টিকা নেবেন, সেটা নির্ধারণ করা হবে। প্রথম দফায় ৩৫ লাখ মানুষকে টিকা দেওয়া হবে। সরকারের হাতে এখনও ৭০ লাখ টিকা আছে। টিকা প্রয়োগের প্রথম দিন ১ হাজার ১৫টি কেন্দ্রে টিকা দেওয়া হবে। টিকাদানে নিয়োজিত থাকবে স্বাস্থ্যকর্মীদের ২ হাজার ৪০২টি দল।
[৭] প্রথম দিন টিকা নেবেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক ও প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনসহ ঊর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তারা। প্রথম ডোজ নেওয়ার পর ৪ সপ্তাহ পর দ্বিতীয় ডোজ নিতে হবে।
[৮] শনিবার দুপুরে প্রেসক্লাব যশোরে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে যশোর-৩ আসনের সংসদ সদস্য কাজী নাবিল আহমেদ জানান, এ কর্মসূচির প্রথমদিনেই ভ্যাকসিন গ্রহণ করবেন তিনি।
[৯] সুনামগঞ্জের সাধারণ মানুষের ভয় দূর করতে প্রথম ব্যক্তি হিসেবে করোনার টিকা নেবেন ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেলা সদর হাসপাতালের আরএমও ডা. মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম। সুনামগঞ্জের সিভিল সার্জন ডা. শামস উদ্দিন এ তথ্য জানিয়েছেন।
[১০] সুনামগঞ্জ জেলার ছাতক ও দোয়ারাবাজার আসনের সংসদ সদস্য ও সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য মুহিবুর রহমান মানিক প্রথম ভ্যাকসিন গ্রহণ করে আনুষ্ঠানিক ভাবে এ কর্মসূচির সূচনা করবেন জানিয়েছেন সুনামগঞ্জ জেলা সিভিল সার্জন ডা. শামস উদ্দিন। পরে বিভিন্ন পর্যায়ের সম্মুখ যোদ্ধাদের রেজিস্ট্রেশনের মাধ্যমে ভ্যাকসিন দেওয়া হবে।
[১১] মৌলভীবাজারে প্রথম করোনাভাইরাসের টিকা নেবেন মৌলভীবাজার-৩ আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নেছার আহমদ। শনিবার (৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন নেছার আহমদ নিজেই।
[১২] হবিগঞ্জে প্রথম করোনা টিকা নেবেন ডিসি মোহাম্মদ কামরুল হাসান। বুধবার দুপুর ১টায় ডিসির সম্মেলন কক্ষে সংবাদ সম্মেলন করে বিষয়টি জানান তিনি নিজেই। ডিসি বলেন, আগামী ৭ ফেব্রুয়ারি সারা দেশের মতো হবিগঞ্জেও টিকাদান কর্মসূচির উদ্বোধন করা হবে। জেলার ২৪টি বুথ স্থাপনের মাধ্যমে করোনার টিকা প্রদান করা হবে। জেলায় সবার আগে আমি করোনার টিকা গ্রহণ করব।
[১৩] খুলনা মহানগরে ১৩ ও প্রত্যেক উপজেলায় তিনটি করে মোট ৪০ কেন্দ্রে করোনার ভ্যাকসিন দেওয়া হবে। রোববার (৭ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১০টায় খুলনা মেডিক্যাল কলেজ কেন্দ্রে এই কার্যক্রমের উদ্বোধন করা হবে। কেসিসি মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক প্রথমে ভ্যাকসিন গ্রহণ করবেন।
এর আগে ২৭ জানুয়ারি ভার্চুয়ালি যুক্ত থেকে টিকা দেওয়ার কার্যক্রম উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রীর ভার্চুয়ালি উপস্থিতিতে বাংলাদেশে প্রথম টিকা নিয়েছেন কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের স্টাফ নার্স রুনু ভেরোনিকা কস্তা। এর পর থেকে মন্ত্রী, চিকিৎসক, সাংবাদিক, পুলিশসহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ করোনার টিকা নিয়েছেন।