ফড়িং ক্যামেলিয়া : একটা বিষয় ক্লিয়ার করি । ধর্ষণ কী সেটা নিয়ে অনেকর মধ্যে এখনো ভ্রান্ত ধারণা আছে। মনে হচ্ছে বিষয়টা পরিষ্কার করা দরকার। কার ইচ্ছার বিরুদ্ধে তার সঙ্গে জোরপূর্বক শারীরিক সম্পর্ক করাটাই ধর্ষণ। সেটা ছেলেমেয়ে উভয়ের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। একজন বারবনিতা যে যৌনতা বিক্রি করে পেট চালায়, সে কোনো কারণে তার যৌনতা বিক্রি করতে রাজি হলো না, হয়তো তার শরীর ভালো না কিংবা মন ভালো না কিংবা অন্য কোনো কারণে সে সিদ্ধান্ত নিলো সে যৌনতা বিক্রি করবে না এবং তাকে যদি কেউ জোর করে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে যৌন সম্পর্কে জেতে বাধ্য করে তবে সেটাই ধর্ষণ।
আরও স্পষ্ট করি , স্ত্রী কোনো কারণে যৌনতায় আগ্রহী না এবং স্বামী যদি সেখানে জোর করে সেটাও ধর্ষণ। এখন প্রশ্ন হলো স্ত্রী কেন আগ্রহী না? তার অসংখ্য কারণ থাকতে পারে , হয়তো সে স্বামীর কোনো আচরণে ভীষণভাবে আহত, অথবা সে অসুস্থ অথবা কোনো কারণে সে ওই দিন ভালো বোধ করছে না। একথা স্বামীর ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। যদি সে ভালো বোধ না করে এবং স্ত্রী তার হাত পা বেঁধে মারধর করে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করে তবে সেটা ধর্ষণ। যদিও পুরুষের ক্ষেত্রে এটা হয় না, এটাকে ধর্ষণ না বলে শারীরিক নির্যাতন বলাই শ্রেয় এবং কারণটা বোধবুদ্ধি সম্পন্ন সবাই বোঝে এবং জানে।
এবার আসি একটু ভিন্ন প্রসঙ্গে, রাত ২টার সময় একটা মেয়ে যদি বদ্ধ মাতাল হয়ে রাস্তায় পরে থাকে তবে আপনি কী করবেন? তাকে হয় হস্পিটালে অথবা বাসায় নিয়ে যাবেন। যেটা আপনি একটা ছেলের জন্য করেন কিংবা করবেন। মেয়েটা কিংবা ছেলেটা রাস্তায় মাতলামি করে কোনো আইন ভাঙে, সেটা অবশ্যই অন্যায়, সে জন্য তার শাস্তি হবে আইনে, আপনার যৌন লালসায় নয়। এটাই সভ্যতা , ভদ্রতা। যেমন সভ্য পুরুষ তার স্ত্রীর প্রতি জোর খাঁটায় না, এমনকি সভ্য লোকটি তার বন্ধু কিংবা বান্ধবী, আত্মীয় কিংবা অচেনা কারও দুর্বলতার সুযোগ নেয় না বরং সাহায্য করে।
আরও সহজ করে বলি, রাত করে বাসায় ফেরা, বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দেবার কিংবা বন্ধুর বাসায় থেকে যাবার অধিকার সবার আছে। আপনার পাশে আপনার ছেলে বন্ধুটা যেমন নিরাপদে শুয়ে থাকে তেমন মেয়ে বন্ধুটাও থাকবে এটাই হলো বন্ধ্যুত্ব। আর যদি সেটা না পারে তবে আপনার এখনো সভ্য আচরণ শেখা বাকি আছে। যদি এর পরেও মনে হয় মেয়েটার পোশাক, কিংবা রাতবিরাতে বের হবার জন্য সে ধর্ষিত হয়েছে, তবে আগামীকাল একটা বোরখা কিনবেন, কেউ যেন না বোঝে আপনি ছেলে, সেভাবে হাঁটবেন, বাসে চরবেন, মার্কেটে যাবেন, স্কুল, কলেজ, অফিসে যাবেন এক মাস। বিশ্বাস করুন, আপনি বুঝে যাবেন ধর্ষণের জন্য পোশাক না, ইতর মানসিকতা দায়ী। ফেসবুক থেকে
আপনার মতামত লিখুন :