শিরোনাম
◈ আবারও মে‌সির জোড়া গোলে ইন্টার মায়ামির জয় ◈ এখন থেকে আর জাতীয় রাজস্ব বোর্ড নাম থাকবে না: জ্বালানি উপদেষ্টা ◈ ‘তুমি কেন ফুয়েল কেটে দিলে?’ ভারতীয় বিমান বিধ্বস্তের আগে পাইলটদের শেষ ককপিট ভয়েস রেকর্ডিং ◈ দক্ষিণ কোরিয়া প্রবাসীদের জন্য সুখবর: মৃত্যু হলে লাশ দেশে পাঠাবে সরকার, ক্ষতিপূরণ মিলবে বীমার আওতায় (ভিডিও) ◈ বিশ্বের সর্বাধিক মুসলিম জনসংখ্যার দেশ হতে যাচ্ছে ভারত: পিউ রিসার্চ ◈ বেপরোয়া বিএনপির অভ্যন্তরীণ সংঘাতে ছয় মাসে নিহত ৪৩ ◈ স্প‌্যা‌নিশ ক্যাবরেরাই থাক‌ছেন বাংলা‌দেশ ফুটবল দ‌লের কোচ ◈ সন্ধ‌্যায় নেপালের বিরু‌দ্ধে লড়াই‌য়ে নাম‌ছে বাংলা‌দে‌শের মে‌য়েরা ◈ ঢাকায় হবে এশিয়া কাপের সভা, ভারত অংশ নে‌বে না ◈ এবার যে কারণে বিএনপি থেকে পদত্যাগ করলেন ড. ফয়জুল হক

প্রকাশিত : ০৬ জানুয়ারী, ২০২১, ০২:১৩ রাত
আপডেট : ০৬ জানুয়ারী, ২০২১, ০২:১৩ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

দীপক চৌধুরী : পুলিশের ভালো কাজগুলো চাপা পড়ে গিয়ে নানা প্রশ্ন উদয় হয়, ‘পুলিশ তুমি কার?’

দীপক চৌধুরী: দেশের রাজনীতিতে ক্ষমতার অন্দরে নানা ঘটনা বিরাজ করে। এটা সত্যই। কিন্তু সাম্প্রতিক কিছু ঘটনায় পুলিশ নিয়ে মানুষের মধ্যে একধরনের সন্দেহ, অবিশ্বাস ও আতঙ্ক বিরাজ করছে। বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার আমলে জনগণকে সবার আগে সম্মান করতে হবে। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু একাধিকবার ভাষণে বলেছিলেন, ‘তোমরা কার টাকায় সাব?’ এই বলে শুধু পুলিশ কে দায়ী করে নয়। কাউকে সুনির্দিষ্টভাবে বঙ্গবন্ধু দায়ী করনেনি। কৃষক, শ্রমিক, কামার, কুমার, তাঁতী, দিনমজুর সবাইকে সম্মান করে কথা বলতে হবে, অমর্যাদা করে নয়, ভালবাসতে হবে।

বাংলাদেশ পুলিশের ত্যাগ, আত্মদান , জীবনবাজী রেখে সংগ্রাম করার ইতিহাস আছে। তাঁদের স্বাধীনভাবে কাজ করতে দেয়া হয়নি বঙ্গবন্ধু হত্যার পর ২১টি বছর। এরপর জাতির পিতার সুযোগ্য কন্যা শেখ হাসিনা রাষ্ট্র ক্ষমতায় আসীন হলে সেই পুলিশ জনগণের পুলিশ হিসেবে আত্মমর্যাদা লাভ করে। ২০০৮-এ পুনরায় জনগণের রায়ে নির্বাচিত এ সরকার অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে বারো বছর অতিক্রম করেছে। যাঁর নেতৃত্ব দিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা। ডিএমপির পুলিশ কমিশনার হিসেবে ড. বেনজীর আহমেদ প্রতিটি বক্তৃতায় অর্থাৎ সবসময়ই জনগণের সেবা করার মানসিকতা নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দিতেন। তিনি র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটেলিয়নের (র‌্যাব) মহাপরিচালক ছিলেন। সাহসীকতার সঙ্গে কর্মদক্ষতা দেখিয়েছেন। বর্তমানে একজন সুদক্ষ আইজিপি, স্পষ্টবাদী ও সুযোগ্য হিসেবে সুপরিচিত। তাঁর কর্মদক্ষতা ও মেধা পরীক্ষিত। নিজ বাহিনীর প্রতিটি সেক্টর তাঁর নখদর্পনে। এককথায় অসাধারণ মেধাবী পুলিশপ্রধান ড. বেনজীর। কিন্তু কতিপয় পুলিশ কর্মকর্তার নেতিবাচক আচরণে আজ নানাভাবে পুলিশ প্রশ্নের মুখে। কিছুদিন ধরেই একটি বিষয় নিয়ে তুলকালাম ঘটছে। নারায়ণগঞ্জের মৃত মেয়ের ফিরে আসা নিয়ে। জেলার সাংবাদিকেরা রিপোর্ট করেছেন বা জানিয়েছেন, ‘মারধর-ভয় দেখিয়ে আসামিদের স্বীকারোক্তি আদায়ের প্রাথমিক সত্যতা মিলেছে।’

রিপোর্ট এ রকম, ‘নারায়ণগঞ্জে মৃত কিশোরীর জীবিত ফিরে আসার ঘটনায় বিচারিক অনুসন্ধান প্রতিবেদন হাইকোর্টে দেওয়া হয়েছে। প্রতিবেদন বলছে, পুলিশ হেফাজতে (রিমান্ডে) থাকার সময়ে তদন্ত কর্মকর্তা নারায়ণগঞ্জ সদর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. শামীম আল মামুনের বিরুদ্ধে আসামিদের মারধর, ভয়ভীতি ও প্রলোভন দেখিয়ে স্বীকারোক্তি প্রদানে বাধ্য করার অপরাধের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া গেছে। প্রতিবেদনের মতামতে আরও উল্লেখ রয়েছে, আইন অনুসারে আসামিদের পুলিশি রিমান্ড মঞ্জুর ও স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি রেকর্ডের ক্ষেত্রে ম্যাজিস্ট্রেটদের কোনো অনিয়ম বিচারিক অনুসন্ধানে প্রতীয়মান হয়নি। মঙ্গলবার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চে নারায়ণগঞ্জের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের অনুসন্ধান প্রতিবেদন দেওয়া হয়। শুনানি নিয়ে আদালত ১৩ জানুয়ারি পরবর্তী শুনানির দিন রেখেছেন। আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী শিশির মনির। রাষ্ট্রপক্ষে অংশ নেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সারওয়ার হোসেন। গত বছরের ২৪ সেপ্টেম্বর নারায়ণগঞ্জে কথিত ধর্ষণ ও হত্যার শিকার স্কুলছাত্রীর জীবিত ফেরত আসার ঘটনায় বিচারিক অনুসন্ধানের নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। গত বছরের ২৫ আগস্ট নারায়ণগঞ্জে ধর্ষণ ও হত্যার শিকার স্কুলছাত্রীর জীবিত ফেরত আসার ঘটনায় নথি তলবের নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিভিশন আবেদন করা হয়। গত বছরের ৪ জুলাই ১৫ বছর বয়সী কিশোরী নারায়ণগঞ্জ শহরের দেওভোগ এলাকার বাসা থেকে বের হয়ে নিখোঁজ হয়। পরিবারের লোকজন তাকে না পেয়ে থানায় মামলা করেন। ওই মামলায় পুলিশ আবদুল্লাহ, রকিব ও খলিলুর রহমানকে গ্রেপ্তার করে। তারা কিশোরীকে অপহরণ, ধর্ষণ ও হত্যা করে লাশ শীতলক্ষ্যা নদীতে ভাসিয়ে দেওয়ার কথা গত ৯ আগস্ট আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে ‘স্বীকার করেন’। ঘটনার ৫১ দিন পর গত ২৩ আগস্ট ওই কিশোরী ফিরে আসে। কিশোরী আদালতকে বলে, ইকবাল নামের এক যুবককে বিয়ে করে বন্দর এলাকার এক ভাড়া বাড়িতে সংসার করছে সে।

বিষয়টি যে কত স্পর্শকাতর তা বুঝতে বাকি থাকে না। ভাবমূর্তি নিয়ে পুলিশ বাহিনী নানা প্রশ্নের মধ্যে পড়েছে। এমন সব ঘটনার জন্ম দিচ্ছেন একশেণির পুলিশের সদস্য, যাতে মারাত্মকভাবে এই বাহিনীর ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হচ্ছে। পুলিশ বাহিনীর কেউ খুনের দায়ে আটক হচ্ছেন, মাদক ব্যবসায়, কেউ কেউ আবার ভয়ঙ্কর অপরাধ ডাকাতিতে জড়িয়ে পড়েছেন।
সুনামগঞ্জের একটি ঘটনা শুনে আমি অবাক। প্রশ্ন জাগে, প্রবাসীর সম্পত্তি নিয়ে এ কেমন আচরণ? লন্ডনপ্রবাসী মীর হোসেন। উনার বাড়ি সুনামগঞ্জের দিরাই থানার কালধর গ্রামে। তিনি লন্ডনেই আছেন। সম্প্রতি উনার বাড়ির গোলার ধান ও বাড়ির জিনিসপত্র লুট হয়েছে। এ ব্যাপারে সুনামগঞ্জে কোর্টে মামলা হয়েছে। ( সিআর মামলা নং ৭০/২০২০)। বাদী লন্ডনপ্রবাসীর কেয়ারটেকার জুয়েল মিয়া। ডিবি পুলিশ মামলা তদন্ত করছে। লন্ডনপ্রবাসীর কেয়ারটেকার জুয়েল মিয়া আসামীদের ভয়ে বাড়িছাড়া। কারণ, শোনা যায় দিরাই থানার পুলিশের একজন সাব-ইন্সপেক্টর আসামীদের পক্ষে।
লন্ডপ্রবাসী মীর হোসেনের কৃষিজমির কেয়ারটেকার আজাদ ও কুটি মিয়াসহ কিছু কৃষিশ্রমিক রয়েছে। কিন্তু এক দারোগাপুলিশ তাদের ব্যুরো কৃষিজমি আবাদ করতে দিচ্ছে না। ফলে ভবিষ্যতে লন্ডনপ্রবাসী মীর হোসেনের জমি অনাবাদ থাকবে। পুলিশ নাকি বলতে চাইছে, জমি নিয়ে আত্মীয়দের সঙ্গে মীর হোসেনের ঝামেলা। প্রশ্ন হচ্ছে, মামলা-মোকদ্দমা হলে দেওয়ানী আদালত দেখবে। বিচারক দেখবেন। জমির বিষয়ে পুলিশ ইনভলব হবে কেন? পুলিশের ইন্টারেস্ট কী? জমি রক্ষা করার দায়িত্ব থানা-পুলিশকে কারা দিয়েছে? আব্দুস শহীদ, জুয়েল মিয়া, আজাদ মিয়া, সুফি মিয়াসহ ৬জন কৃষিজমিতে কর্মরত অবস্থায় গত ২৩ ডিসেম্ভর সম্পূর্ণ ক্ষমতার দাপটে দিরাই থানার দারোগা গোলাম ফাত্তাহ গ্রেপ্তার করেন। এরপর বিশেষ মহলের স্বার্থে গ্রেপ্তারকৃতদের সুনামগঞ্জ কোর্টে পাঠান এবং পরে তাদের জেলে পাঠানো হয়। কী ভয়ঙ্কর ঘটনা। একদিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলছেন, বাড়ির আশপাশের একরত্তি জমিও যেন হেলায় ফেলায় পড়ে থাকে না। ভূমির প্রতিটি অংশ যেন কাজে লাগানো হয়। অন্যদিকে লন্ডন প্রবাসী মীর হোসেনের জমি অনাবাদ রাখা হবে। আইন কী তা বলে! প্রশ্ন উঠেছে, লন্ডন প্রবাসীর সম্পত্তি নিয়ে এমন খেলা কেন? স্থানীয় কেউ কেউ ফোনে আমাকে জানিয়েছেন, দিরাই থানার ওসি সাহেবের নজরদারির কারণে শেষ রক্ষে হচ্ছে। না হলে কালধরগ্রামে ভয়ঙ্কর ঘটনা ঘটানো হতো দারোগা ফাত্তাহকে ব্যবহার করে। এমনও শোনা যায়, এলাকাবাসী নাকি দারোগা ফাত্তার আচরণে আতঙ্কে। কারণ, কালধর গ্রামেই দুটি খুন হয়েছে। হত্যা মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা তিনি। সুতরাং এই উছিলায় (?) যেকোনো ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করার ক্ষমতা রাখেন তিনি। অবশ্য, তিনি নাকি সাংবাদিকদের কাছে বলেছেন, ‘এমন অন্যায় তিনি করবেন না। এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।’ এলাকাবাসী চায়, লন্ডন প্রবাসী মীর হোসেনের বাড়িতে কেয়ারটেকার জুয়েল মিয়া নিরাপদে থাকুক। মীর হোসেনের জমি আজাদ মিয়া ও কুটি মিয়ারা নির্বিঘ্নে অতীতের বছরগুলোর মতো চাষাবাদ করুক। প্রসঙ্গটি দীর্ঘ হলেও বলা দরকার একটি কথা। সেখানে আমিও ছিলাম। কিছুদিন আগে অর্থাৎ গত ডিসেম্বরের মাঝামাঝিতে একটি অনুষ্ঠানে ডিএমপি কমিশনার (অতিরিক্ত আইজি) মোহা. শফিকুল ইসলাম খেদোক্তির সঙ্গে বলেছিলেন, গা থেকে পুলিশের পোশাক সরে গেলে অবস্থা বোঝা যাবে। মাদক বিষয়ে কথা বলেছিলেন তিনি। তাঁর ভাষায়, তিনি বলেছিলেন, “জীবন কতোটা কঠিন শরীর থেকে ইউনিফর্ম নেমে গেলে বোঝা যাবে।” কথাগুলো অপ্রিয় সত্য। আমাদের অনেকেই সাহস করে সত্য বলতে চান না, তিনি উচ্চারণ করেছেন। শুধু সমঝোতা করে চলতে চান অনেকেই। অন্যায়ের সঙ্গে আপস করে চলেন না- এই উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা। পুলিশ কর্মকর্তা মোহা. শফিকুল ইসলাম আমার প্রিয় মানুষ। অত্যন্ত কঠিন মুহূর্তে তিনি সুনামগঞ্জের পুলিশ সুপার ছিলেন। ঘন ঘন কথা হতো।

আমি ছিলাম তাঁর পরীক্ষিত প্রিয় একজন সিনিয়র সাংবাদিক। কারণ, তিনি এডিসি ডিবি থাকাকালে তাঁর সঙ্গে সম্পর্ক আমার। সম্প্রতি পুলিশের আরেকজন অতিরিক্ত আইজিপি নিজ অভিজ্ঞতা থেকে কথা প্রসঙ্গে গল্পচ্ছলে বলেছিলেন, কিছু কিছু উপজেলা পর্যায়ে কিছু ব্যক্তি উপজেলা আওয়ামী লীগের পদ ব্যবহার করে থানা-পুলিশের একশ্রেণির অসৎ ব্যক্তিকে ব্যবহার করে থাকেন। তাদের পরনে উর্দি আছে। অবশ্য তাদেরই স্বার্থে ব্যবহৃত পুলিশ কর্মকর্তার বিপদে ওরা সটকে পড়ে। এ ধরনের রিপোর্টও আমরা পাচ্ছি, সেই আলোকে ব্যবস্থাও নেবো।

এখন আরেকটি প্রসঙ্গে আসি। সম্প্রতি এক পুলিশ কর্মকর্তা এক দম্পতিকে আটক করে আলোচনায় এসেছেন। তিনি পুলিশ সুপার (সিআইডি) মিলু মিয়া বিশ্বাস। একজন চিকিৎসক যে একজন নরসুন্দরকে বিয়ে করতে পারেন, তা মিলু মিয়া বিশ্বাসের বিশ্বাসই হয়নি। এ কারণে তিনি ওই দম্পতিকে আটক করেছেন। চিকিৎসক নারী জানিয়েছেন, তাঁকে কেউ অপহরণ করেননি। তিনি স্বেচ্ছায় ওই নরসুন্দরকে বিয়ে করে ঘর-সংসার করছেন। কিন্তু মিলু মিয়া বিশ্বাসের অভিমত, তিনি একজন নরসুন্দরকে বিয়ে করতে পারেন না। অবশ্য, মিলু মিয়ার আচরণে পুলিশ বাহিনী ভীষণ বিব্রত। কিছুদিন আগে দুই পুলিশ অফিসার হত্যার দায়ে আটক হয়েছেন। অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা মেজর (অব.) সিনহা মুহাম্মদ রাশেদকে হত্যার অভিযোগে টেকনাফের ওসি প্রদীপ কুমারসহ ১২জন পুলিশ সদস্য এখন জেলে। অভিযোগ রয়েছে, প্রদীপ ধরে ধরে নিয়ে বিচারবহির্ভূতভাবে অনেককেই হত্যা করেছেন। তাদের অনেকেই নাকি মাদক ব্যবসায়ী ছিলেন। মাদকের কারবারিদের বিচারের জন্য দেশে আইন আছে। অভিযোগ রয়েছে ওসি প্রদীপ নিজেই মাদক ব্যবসার সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন। আমরা আরো জানি, সিলেটের বন্দরবাজার ফাঁড়ির সহকারী পরিদর্শক আকবর হোসেন ভূঁইয়া চাঁদার দাবিতে রায়হান নামের একজনকে পিটিয়ে মেরে ফেলেছেন। আকবর হোসেনও এখন জেলে। অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহাকে হত্যা করা হয়েছে জুলাই মাসে। আর রায়হানকে ১০ অক্টোবর হত্যা করা হয়। পত্রিকায় আরো সংবাদ হচ্ছে, পুলিশের দুই সদস্য নিজেদের গোয়েন্দা শাখার সদস্য পরিচয় দিয়ে সংঘবদ্ধ ডাকাত দলের সঙ্গে মিশে বিভিন্ন অপরাধ করেছেন। ডাকাতি ও অপহরণের সময় তাঁরা সরকারি আগ্নেয়াস্ত্র, গাড়ি ও হ্যান্ডকাফ ব্যবহার করতেন। পুলিশ শুধু খুন, ডাকাতি, অপহরণেই জড়িত নয়। অভিযোগ রয়েছে, নোয়াখালীতে আটক ব্যক্তিকে জনতার হাতে তুলে দিয়ে হত্যা করেছিল পুলিশ। গণপিটুনির জন্য উন্মত্ত জনতার হাতে অপরাধীকেও তুলে দিচ্ছে। এটা কেমন কথা? এ যে অবিশ্বাস্য।

বিভিন্ন সময় পুলিশ বাহিনী নিয়ে ইতিবাচক-নেতিবাচক নানা তথ্যই আমরা পাই। কিন্তু কিছু কিছু বিষয় এতো বেশি আলোচিত হয় যে, এটাকে একশ্রেণির মানুষ উস্কে দিয়ে থাকে। সুযোগ লাভ করে তারা। ফলে পুলিশের ভালো কাজগুলো গৌণ হয়ে যায়। চাপা পড়ে যায়। ফলে পুলিশ সদস্যদের নানা ধরনের অপরাধে সম্পৃক্ত হওয়ার সংবাদ খুবই উদ্বেগজনক। মানুষের মধ্যে নানা বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়ে হয়ে থাকে। চার কারণে অব্যাহতি পেয়েছেন হাজি সেলিম পুত্র ইরফান সেলিম। বিষয়টি যেহেতু আদালতের এজন্যে বেশি কথা বলা যাবে না। তবে মানুষের মুখ টিপে বন্ধ করা যায় না। র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‌্যাব) করা অস্ত্র ও মাদক মামলা থেকে ঢাকা-৭ আসনের সংসদ সদস্য হাজি মোহাম্মদ সেলিমের পুত্র ইরফান মোহাম্মদ সেলিম অব্যাহতি পেয়েছেন। এজাহারে ত্রুটি, ঘটনাস্থল ঠিক না-হওয়া, সাক্ষ্য প্রমাণ না-থাকা এবং সংশ্লিষ্ট ম্যাজিস্ট্রেটের বক্তব্য না-পাওয়া। দুটি মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদনে এমন তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। র‌্যাব ধরে দিয়েছে আর পুলিশ তদন্ত করে রিপোর্ট দাখিল করেছে আদালতে। সোমবার আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দুটি দাখিল করা হয়েছে। এ বিষয়ে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া সেন্টারের উপকমিশনার ওয়ালিদ হোসেন সাংবাদিকদের জানান, র‌্যাবের করা মামলায় চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেওয়ায় অনেকের মনে নানা প্রশ্ন উঠতে পারে। জনমনে বিরূপ প্রতিক্রিয়াও হতে পারে। কিন্তু ডিএমপি মনে করে, এক্ষেত্রে কোনো প্রশ্ন ওঠা বা বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সুযোগ নেই। তিনি বলেন, মামলা হলো প্রাথমিক প্রতিবেদন। তদন্তকালে এর সত্যতা না পাওয়া অস্বাভাবিক কিছু নয়।

লেখক : উপসম্পাদক, আমাদের অর্থনীতি, সিনিয়র সাংবাদিক ও কথাসাহিত্যিক

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়